বেসরকারি স্কুল ও কলেজের মানোন্নয়ন ইত্যাদির লক্ষে বিশাল নীতিমালা নিয়ে গঠিত হয় “বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ” বা “Non Government Teachers Registration and Certification Authority”. উভয় ক্ষেত্রেই সংক্ষেপে ‘এনটিআরসিএ’ বলা হয়। ২০০৫ সালে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধ করতে এনটিআরসিএ'র জন্ম হয়। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এর বয়ঃপ্রাপ্তি ঘটেনি। এটি নিজেই অটিজমে আক্রান্ত বা প্রতিবন্ধী প্রতিষ্ঠান নয়তো শিক্ষা- শিক্ষক- শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিবন্ধি করার প্রতিষ্ঠান বলে মনে হতেই পারে।
যথারীতি খুব ঘটা করে জন্ম নিয়েছিল। কৈশোরে এসে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রনে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের আদেশ জারি করল এনটিআরসিএ। এজন্য সারাদেশের স্কুল কলেজ থেকে প্রাপ্ত শুন্য পদের তালিকা অনুযায়ী নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিকট থেকে দরখাস্ত আহবান করা হয় এবং প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা আলাদাভাবে দরখাস্ত করার জন্য ১৮০ টাকা করে ফি টেলিটকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। পাশাপাশি, অনলাইনে দরখাস্ত করার রাষ্ট্রীয় ঝামেলা ও খরচতো আছেই।
একেকজন প্রার্থী ইচ্ছেমত দরখাস্ত করতে পারবেন ভিত্তিতে আবেদন আহবান করা হয়েছিল। ২০১৬'র জুলাই মাসে দরখাস্ত গ্রহন শেষ করে ১ মাসের মধ্যে শুন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ করার কথা থাকলেও তিন মাস পর নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হলেও তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ। দেখা যায়, একজনকে একের অধিক এমনকি দশটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হয়। যদিও অদ্যাবধি কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষকই নিয়োগ পাননি।
এরপর বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আর কোন আলোচনা শোনা যাচ্ছেনা। হয়ত কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভুলে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি, গত ১০ জুলাই মেধাতালিকা ১- ১৩ তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও নিবন্ধিতদের জাতীয় মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়। এবার, নিয়োগ নয় এবং এই মেধাতালিকার মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিয়োগও নিশ্চিত নয়। বরং, উক্ত মেধাতালিকা ও নিয়োগের স্বপ্ন দেখিয়ে আগ্রহী চাকরি প্রার্থীদেরকে আরও কিছুদিন বেকার ও অথর্ব বানিয়ে রাখার অপকৌশল মাত্র। হতে পারে, সরকারি- বেসরকারি সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেতাই নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং দুর্নীতিকে অবিতর্কিত রাখাতেই “Non Government Teachers Registration and Certification Authority” বা এনটিআরসিএ'র সার্থকতা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:১৩