কি আর করা যাবে, ভাইয়েরা আমার ? যদি আমি নিজেকে চিনতে নাই পারি ।
আমি খৃস্টান নই, ইহুদি নই, বৌদ্ধ নই, নই মুসলিম ।
আমি পূর্ব নই, পশ্চিম নই, ভূখণ্ডের নই বা সমুদ্রেরও নই ;
আমি প্রকৃতির নির্যাস নই, নই স্বর্গচক্রের অন্তিম ।
আমি পৃথিবীর নই, জলের নই, বায়ুর নই, আগুনের নই ;
আমি জ্যোতির্ময় নই, ধুলোর নই, এমনকি অস্তিত্ব বা সত্ত্বাও নই ।
আমি ভারত, চীন, বুলগেরিয়া বা সাকাসিন থেকে আসিনি
আমি ইরাকের রাজত্ব বা খোরাসান প্রদেশকে চিনিনি ।
আমি এই দুনিয়া বা পরবর্তীর অংশীদার নই, নই আমি জান্নাত অথবা দোযখের
আমি আদম বা হাওয়া নই, নই স্বর্গ এবং রিজওয়ানের ।
আমার স্থান হল স্থানহীন , আমার চিহ্ন যে পথচিহ্নহীন ;
শরীর বা আত্মা কোনটাই নই, আমি দয়িতের আত্মার অন্তর্গত ।
আমি দ্বৈততা ছুড়ে ফেলেছি, দেখেছি যে দুই পৃথিবী আসলে একীভূত ;
একজনকে খুঁজি, একজনকে জানি, একজনকে দেখি, একজনকে ডাকি ।
তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই বাহ্যিক, তিনিই অভ্যন্তরস্থ;
আমি 'তুমি' এবং 'তুমি ছাড়া' আর কিছুই জানিনা ।
আমি প্রেমের পেয়ালায় মত্ত, দুই পৃথিবী আমার আওতার বাইরে চলে গেছে ;
আমি কোনভাবেই দায়ী নই সেইসব হল্লা এবং হুল্লোড়ের কাছে ।
যদি একবার জীবনে আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত কাটিয়েছি ,
সেই সময় থেকে এবং সেই মুহুর্ত থেকে আমি জীবনকে অভিশাপ দিয়েছি ।
যদি একবার এই জগতে তোমার সঙ্গে একটি মুহূর্ত করি জয় ,
আমি উভয় জগতে দৃঢ়তায় দাঁড়াবো, নাচবো বিজয়উল্লাসে সর্বময় ।
হে শামসি তাবরিয, আমি কি এই পৃথিবীতে যথেষ্ট মাতাল নই ,
উন্মত্ততা এবং হুল্লোড় ছাড়া আমার যে বলার কিছু নেই ।
কৃতজ্ঞতা
জালালউদ্দীন রুমি
আলাউদ্দিন আহমেদ সরকার
ইমন জুবায়ের