দৃশ্যপট--১
"আহ একটু কাছে আসো না, এমন করছো কেন ?" রায়হানের আজকের রাতটুকু মাদকতার রাত, উষ্ণতা দিয়ে পরষ্পরকে ভরিয়ে তুলার রাত। শিলার তুলতুলে শরীর কে খুব নিজের করে নিজের মত করে আয়ত্ত করবার সুতীব্র বাসনা।কি জানি আজ কেন মনটা এত আবেগী হয়ে উঠল, বাইরে কাল বৈশাখীর ঝোড়ো বাতাস, নিকস কালো আঁধারের বুক চিরে হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ এর ঝলকানি প্রিয়ার বুকে মুখ লুকাবার কথা যেন বলছে !
কবি হলে বলতে পারতো রায়হান " আজ আমি ভালোবাসতে ভালোবাসতে ফতুর হয়ে যাব " । শিলা ততধিক কঠিন শিলার মত মুখ করে নিচু স্বরে বলল নাহ আমার ইচ্ছে করছে না। কলমা পড়া বউ এর কাছ থেকে এমন সুস্পষ্ট দৃঢ় না শুনতে পৌরুষে লাগে । কতদিন রায়হান তার ৭ বছরের বিয়ে করা বউকে কাছে টানে না , আজ একটু আদর আহলাদ উপছে পড়ছিল বলেই না রোমান্টিক হতে চেয়েছিল, ভেবেছিল ঘরের বউটিকে অনেকদিন উন্মত্ত শারীরিক সুখ দেয়া হয়ে উঠেনা । বাইরের ভিন্ন ভিন্ন নারী শরীরের স্বাদ নিতে নিতে ভুলে ঘিয়েছিল ঘরেও একটা বউ নামের নিজস্ব সম্পত্তি আছে। ধূত্তরি দিল মুডটার বারোটা বাজিয়ে । রাগে অপমানে রায়হানের ফর্সা মুখ লাল হয়ে উঠল, আস্পর্দার মাত্রা এত বেড়েছে শিলার ! আশ্চর্য্য ! আহত বাঘের মত ঘরঘর করতে লাগল , পাল্টা আঘাতে চুর্ন করে দিতে চাইল দম্ভ, উদ্যত নারীর অসংযত আচরন। হেচকা টানে বিছানায় ফেলে দিল শিলাকে, হাজার বার না না করা স্বত্তেও পারলনা হিংস্র বাঘের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে, রায়হানের পাশবিকতায় যন্ত্রনায় কাতর শিলার মুখ চাপা পড়ে যায়। সারা শরীরে তীব্র ব্যাথা নিয়ে নিজেকে বলছিলো আর কতদিন এভাবে নিজ স্বামী দ্বারা ধর্ষিতা হতে হবে ? ইচ্ছার বিরুদ্ধে তথাকথিত স্বামী নামোক সাইনবোর্ডের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে ? নিজের শরীরের উপর কি কোনো অধিকার নেই, কিছু রাস্ট্রীয় আর ধর্মীয় অনুশাসনের বেড়াজালে কি বন্দী শিলার জীবন ? এটাকে বউ না বলে বলা উচিত যৌন দাসী । নিজের প্রতি ধিক্কার হানছিল । এ কেমন তর জীবন ।
দৃশ্যপট--২
হেলাল হাফিজের কবিতার মতই ভালবাসে টয়া ,হাসান কে । সকাল থেকে ঘুমাতে যাবার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত টয়া হাসানের খোঁজ নেয়, খুব বেশি কথা যে বলে তা নয় কারন সে নিজেই থাকে বেশ খানিকটা সময় অফিসে, বাসায় ফিরে যে কথা হবে সেটাও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হয় না, বাসার লোকজন থাকে বলে। এরই মাঝে হয়তো মেঘলা ভোর, বিষন্ন দুপুর কিংবা লালচে আকাশে নেমে আসা সন্ধ্যায় মনে পড়ে যায় খুবই সাধারন ছেলেটিকে । বেশীর ভাগ সময় হাসান বিরক্ত হয়, কখনো ফোন ধরেই না,
কখনো বা ধরলেও টয়া ওর মুড বুঝে বলার সাহস পায় না যে আজ হাসান কে কাছে পেতে ইচ্ছে করছে। গত ৬ মাস ধরে ওদের সম্পর্ক নেই বল্লেই চলে কোনো ভাবেই টয়া পারছেনা এমন স্বার্থপর টাইপের ছেলের সাথে নিজেকে জরিয়ে রাখতে। যতবারি বিপদে পড়ে হাসান ততবারই টয়ার কাছে ছুটে আসে অথচ টয়ার পারিবারিক, অর্থনৈতিক বা কাজের ক্ষেত্রের কোন সমস্যা হলে হাসান জানতেও চায় না কি হয়েছে....সাহায্য সহযোগিতা করা তো দুরের কথা । কাছের মানুষের নোংরা আচরন মনকে অনেক পীড়া দেয়। সেদিন দুপুরে হুট করে হাসান ফোন দেয় টয়াকে বলে শুভর বাসায় যেতে, ঐ বাসায় এর আগেও টয়া বুহুবার গিয়েছে ওদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ঐ বাসায় হয়েছে তাই ৬ মাস পরে হাসানের ফোন পেয়ে টয়া খুব বেশি খুশি হতে পারেনি শুভর বাসায় যেতে বলায় ।
পর পর তিন দিন এভাবেই চলল হাসান অনবরত টয়াকে নানা ভাবে বুঝাতে চাইল টয়াকে তার এখন খুবই প্রয়োজন । যথারিতী টয়া গেলো শুভর বাসায়, আগে থেকেই হাসান ওর জন্যে অপেক্ষায় ছিল । এতদিন পর দেখা হওয়ায় টয়ার মনে জমা হয়েছিলো রাজ্যের অভিমান, অনুযোগ, রাগ, ক্ষোভ । হাসান টয়া কিছু বলবার আগেই জড়িয়ে ধরে কামুক পুরুসের আদিমতায় মত্ত হয়ে উঠল, বার বার বাধা দিতে চাইলেও টয়ার
পক্ষে হাসানের বিশাল শরীরটিকে তার উপড় থেকে সরাতে পারেনি।
যতবার মুখ খুলতে চেয়েছে হাসানের ওষ্ঠ টয়ার অধরে বিলীন হয়েছে। অবশেসে ক্লান্ত , শান্ত, ধীর ,স্হির হাসান বিছানায় টয়াকে পাশ ফিরে নিরবে কাদতে দেখে বলে জানোই তো আমি আসলে এর বেশি কেয়ার করতে জানি না । টয়ার অশ্রু সজল চোখে তখন জন্মের ঘৃনা, হাসানকে বলল একটু আগে তুমি আামাকে ধর্ষন করেছ । হাসান হেসে উঠে একটা সিগারেট ধরাল আর বলল কি আবোল তাবোল বলো আমার প্রেমিকাকে আমি ধর্ষন করেছি ? টয়া নিস্ফল রাগে গজরাতে থাকল, চীৎকার করে বলল তোমার মত অমানুষ এটা বুঝবে না । কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে এল শুভর বাসা থেকে, নারী শরীর কেন মানুষের মন থেকে বড় হয়ে উঠে ?
একজন মানুষ আগে না সে নারী আগে তারপর সে মানুষ । যাকে ভালবাসে সেই তাকে অসম্মান করল তাহলে টয়া আর রাস্তার পাশে দাড়ানো দেহ পসারিনীর মাঝে কি পার্থক্য ? এ কেমন তর জীবন ।
একজন নারী বার বার নানা পটভুমিকায় নিজেকে দেখে কখনো সে মেয়ে শিশু যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তার অভিভাবক হিমশিম খান,
কখনো বা কিশোরী যে নানা সময় ইভটিজারের শিকার, কখনো বা যুবতী টয়া হয় নিজ প্রেমিক দারা ধর্ষিতা কখনো বা সে পরিনত হয় স্বামী কর্তৃক দেহ দাসীতে ।