হাল আমলে বিশেষ করে কিছু মাদ্রাসা পাস করা আলেম এবং মুফতিরা কথায় কথায় সরল মুসলমান ভাইদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়ে বসেন।
অথচ তারা জানেন যে, ফতোয়াএ দারুল উলুম (৪৪০/১২)-এ ফতোয়া বিষয়ে কী উপদেশ দিয়ে সাবধান করে দেয়া হইছেঃ 'কাফের ফতোয়া দেবার প্রশ্ন উঠলে দেখতে হবে যে, যদি শতকরা নিরানব্বই ভাগ কাফের বলার অবকাশ থাকে, কিন্তু মাত্র এক ভাগ কাফের না বলার সম্ভাবনা থাকে, তবে অবশ্যই মুফতি এবং কাজী কাফের ফতোয়া দিতে পারবে না।' আদ দুরুল মুখতার নামক ফতোয়ার কেতাবের মুর্তাদ অধ্যায়ের (৩৯৯/৩) ফতোয়াতে স্পস্ট বলা হয়েছে যে, 'কাফের ফতোয়া দেবার যদি অনেক কারণও থাকে, তবও যদি মাত্র একটি কারণ কাফের না হবার জন্য বাহির করা যায়, তা হলে কোনো মতেই মুফতি এবং কাজী কাফের ফতোয়া দিতে পারবেন না।' এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি বিষয় যে, ইসলামের ইতিহাসে বিখ্যাত কিছু আলেমরা একে-অপরের উপর যা-তা মন্তব্য করে গেছেন। যেমন আমাদের সুন্নি জামাতের হজরত ইমাম আবু হানিফা-কে তারিখ-ই খতিব নামক কেতাবের লেখক খতিব বাগদাদি দাজ্জাল বলেছেন। হজরত ইউসুফ সাউরি জঘন্য এবং অপাঠ্য সমালোচনা করে গেছেন ইমাম আবু হানিফা-কে। এ রকম ভাবে ইমাম মালিক-কে কঠোর সমালোচনা করেছেন মোহাম্মদ ইবনে ইসহাক এবং ইবনে আবি জিব। হজরত ইমাম শাফেয়ী-কে ইবনে মুইন। ইত্যাদি বহু নমুনা তুলে ধরা যায়।
সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো, হানাফিরা শাফেয়ীদের-কে, আবার শাফেয়ীরা হানাফিদের-কে যেমন কঠোর সমালোচনা করেছেন, তেমনি মালেকিরা হাম্বলিদের এবং হাম্বলিরা উপরে বর্নিত তিন মহান ইমামদেরকে কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং একে অপরকে গোমরাহ বলেছেন।
মহানবির প্রিয় সাহাবা এবং আপন চাচাত ভাই হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রঃ) সুন্দর একটি উপদেশ দিয়ে গেছেন এই বলে যে, 'যেখানেই জ্ঞান পাবে তা অর্জন করে নিও। আর হেকাহ্ শাস্ত্রের পন্ডিতদের ঝগড়া এবং সমালোচনা গ্রহন করতে যেও না। কারণ, এরা খোয়াড়ে বাস করা মানুষরূপী ভেড়ার দল। এড়া একে অন্যের উপর চড়াও হয়।'