রাত শেষ হলেই ডিসেম্বর বিজয়ের মাস শুরু ।এ মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন দেশের জয়মুকুট পরেছিল।ক্যালেন্ডারের পাতা ঘুরে এবারও আসছে কাল বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।বাঙ্গালী জাতির রাষ্ট্রের পরিচয় নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াবার চূড়ান্ত বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।১৯৭১ সালের নয়মাস ধরে চলা মুক্তিসংগ্রামের উত্তুঙ্গ মুহূর্ত এসে দাঁড়িয়েছিল এই মাসে।তাই ডিসেম্বর ‘বিজয়ের মাস’।অন্যদিকে, এই ডিসেম্বর দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাস,যুদ্ধে নিহত ৩০ লাখ শহীদের স্বজনদের কাছে এই ডিসেম্বর বেদনার মাস।এই ডিসেম্বর অঙ্গীকারের মাস, প্রত্যয়বদ্ধ হবার মাস।বাবা হারানো সন্তানের কাছে,স্বামী হারানো স্ত্রীর কাছে,মেয়ে হারানো পরিবারের কাছে জাতি,রাষ্ট্র,সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর জবাবদিহিতার মাস।বাঙ্গালী জাতির জীবনে ডিসেম্বর নতুন করে শপথ নেবার মাস।সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পেছনের মূল স্বপ্ন ও লক্ষ্য অর্জনের অঙ্গীকার ও প্রেরণা নবায়নের মাসও এই ডিসেম্বর।
মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পরেও আমরা জাতিগত জীবনে যা অর্জন করতে পারিনি,জাতি হিসাবে আমাদের যা স্খলন – তার উত্তরণ ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে সমাজে,রাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য শপথ নেয়ার মাস- ডিসেম্বর।
মুক্তিযুদ্ধের পর গত ৪০ বছরে জনগণের দীর্ঘ আন্দোলনের পরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি আজো বাস্তবায়িত হয়নি।সরকারের কাছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সেই দাবি বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গীকারের মাস ডিসেম্বর।
তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছরের ডিসেম্বরটা যেন একটু অন্যরকম।নতুন আশা, উদ্দীপনা, স্বপ্ন নিয়ে ফিরে আসছে ডিসেম্বর—মহান বিজয়ের মাস।তিরিশ লাখ শহীদ,দুই লাখ নিপীড়িত-অত্যাচারিত মা-বোনসহ মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যাঁরা পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকে সম্ভব করেছিলেন,এই মাসজুড়ে তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা ও একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ,গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য সরকার গত ২৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা,আইনজীবী প্যানেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।তাই ১৬ ডিসেম্বর আনন্দের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেখতে চাই ও বিজয়ের এই মাসে যে বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত,তা হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন, যা থেকে আমরা এখনো অনেক দূরে রয়েছি।সেই চেতনা ও স্বপ্ন হলো এক সুখী,সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন,গণতান্ত্রিক ও শান্তিময় বাংলাদেশ।আমাদের সব কর্মতত্পরতার চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত সেই বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই
যুদ্ধাপরাধীর সাথে এটাই হোক আমাদের শেষ ডিসেম্বর।এই বিজয় দিবসে যারা মা-মাটি-মাতৃভূমির সাথে বেঈমানী করেছে তাদের লাশের অপেক্ষা .....
ডিসেম্বর আসলেই সব বাঙালীর মত আমরও বিজয় চেতনাটা খুব নাড়া দেই!! ডিসেম্বর আমাদের মনে করিয়ে দেয়,আমরা স্বাধীন। ১৬ ডিসেম্বর এর পর থেকে আবার সেটা ম্লান হতে থাকে।এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু আমার যেটা মনে হয় উন্নত জাতি হবার জন্য সবার আগে দরকার বিজয়ের এই চেতনাটা সবার মধ্যে ভালোভাবে সঞ্চারিত করা।ছোটবেলা থেকেই আমরা শিখি ভালো মুসলিম আর ভালো হিন্দু হতে।কেউ কি আমরা চাই ভালো বাঙালী হতে?মনে হয় না, আমরা বাঙালী সাজতে চাই!!বছর শেষে বাঙালী সাজার এ অভিনয় কি জানি কবে বন্ধ হবে। অপেক্ষায় রইলাম ....
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৮