রূপবতী কোন মেয়ের অপেক্ষা করার দৃশ্য একেবারে হৃদয়ে গিয়ে লাগে।তাও আবার এমন বৃষ্টির দিনে।মেয়েরা খুব গোছালো হয়।তবে এ মেয়েটা কেন ছাতা আনেনি জানেনা ছেলেটা।বৃষ্টির জল মেয়েটার গালে চুমু আঁকছে।কি সুন্দর দৃশ্য!দেখতে দেখতেই বাস চলে আসে।এই প্রথম বাসের খোঁজ পেয়ে বিরক্ত হয় ছেলেটা।
তাদের দুজনের বাস একই।গন্তব্য কিছুটা আগে পরে।প্রতিদিনই দেখা হয় বলা যায়।মাঝে সাঝে মেয়েটার জন্য ইচ্ছে করেই অপেক্ষা করে ছেলেটা।চোখাচোখি হয়,মেয়েটার দৃষ্টির বৃষ্টিতে ভিজে চলে ছেলেটা।
তারপর একদিন ওরা পাশাপাশি বসে।ছেলেটার বুক কাঁপতে থাকে।কল্পনার মাঝে সব জট পাকাতে থাকে একে একে।এরই মাঝে বন্ধুকে ফোন করার একটা অভিনয় করে সে।"দোস্ত রেজিস্ট্রেশনের কাজটা করছিস?নামের স্পেলিংটা ভুল করিস না।সাবিত আহসান।S A B I T A H S A N।মেয়েটা মুচকি হাসে।এ হাসিতে আনন্দ আছে।কারো ভালোবাসার কারণ হতে পারার আনন্দ।কাউকে ভালবাসাতে পারার আনন্দ।
জ্যাম ঘেরা শহরে সেদিন বাস ছুটতে থাকে।মেয়েটার চুল ছুঁয়ে যায় ছেলেটাকে।দম বন্ধ করা ভালো লাগার অনুভূতিতে কোন ইন্দ্রিয় কাজ করেনা আর।
তারপর হঠাৎ ছেলেটাকে আর দেখা যায়না।একদিন,দুইদিন,তিনদিন।মেয়েটা এই প্রথম কিছু একটা অনুভব করে।এই কিছু একটার নাম অনেকদিন ধরে অনেক গল্প,কবিতায় পড়েছে তবে কখনো খোঁজ পায়নি।খোঁজ করেনি।মেয়েরা বড় অদ্ভুত।চোখের সামনে থাকা জিনিষের খোঁজ তারা কখনোই করেনা।তাদের অস্থিরতা শুরুই হয় হারানোর পরে।
ছেলেটার সাথে কখনো কথা হয়নি।তবু আইডিটা খুঁজে বের করে মেসেজ করে সেদিন।"অনেকদিন ধরে দেখছিনা যে?ক্লাস বন্ধ?"অল্প কয়টি শব্দ।তবু লিখতে,কথাটা পৌঁছাতে যেন দীর্ঘকাল লাগছে।
ছেলেটা বসে আছে।কিবোর্ডে লিখতে গিয়ে ওর হাত কাঁপছে।ঠিক এই ক্ষণটায় সে চায় পৃথিবীর সমস্ত ঘড়ি,ছুটে চলা সমস্ত সময়কে বন্দী করে ফেলতে।
আমি চাইনা এ গল্পটা শেষ হোক,এর কোন পরিণতি হোক।আমি জানিওনা কিভাবে এর শেষ টানতে হয়,পরিণতি দিতে হয়।পৃথিবীর সুন্দরতম মুহূর্তগুলো কল্পনা করার ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয়নি।
---------------------------------------------------------------
(প্রতিদিনকার কয়েক ঘন্টা বাস জার্নি আর অপেক্ষা আমাকে অন্তত একটা গল্প কল্পনা করার উপলক্ষ দিল।কে জানে হয়ত সত্যি সত্যিই স্টপেজগুলো ঘিরে আছে অজস্র সুন্দর সুন্দর গল্পে )
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:১৫