স্বপ্নগুলো নিতান্তই সাদামাটা ছিলো!
কার্তিকের রাত ঘন হয়ে এলে হরিদ্রাভ ঘাসের শিশিরে,
চাঁদের আলোকে ভরে বুকপকেটের ভিতরে,
হাঁটার স্বপ্ন ছিলো ধলপহরের আগে!
নীল তারা খসে পড়ে যেই সাদা মাঠে,
রাত্রিটা গাঁড় হলে থোকা থোকা জুঁইফুল আলো হয়ে ফোটে!
সারারাত হেঁটে যাবো রাস্তাটা ধরে লাল ধুলো মাখা,
সাদা মাঠে ছায়াপথে মিটিমিটি হাসবে হলুদ তারারা!
হালকা শীতের বাতাসে দুই একটা খরগোশ,
যেভাবে শিকার খোঁজে নব্যপ্রস্তর যুগের গন্ধ শুঁকে,
পুরানো দেয়ালের ফাঁকে!
তাদের মতোই হেঁটে যাবো সারারাত অন্ধকার কেটে,
শেষ হলে তিথি,
দিগন্তে মানুষের ছায়ায় কতো অশরীরীরা হয় অতিথি,
তোমরা ঘুমাও তখন অঘোরে পাশে অহল্যা পাষাণী!
শুধু সামান্য ইচ্ছা ছিলো হাঁটবো আবার মেঠো রাস্তায়,
ছায়াপথে চাঁদ হবে উদাসিনী!
এখনো হলোনা জানো,
ভেংগে যাওয়া মধ্যরাতের স্বপ্নের মতো অপূর্ণ স্মৃতি,
কুড়ে কুড়ে খায় অনুভূতি সব আজন্ম কোলাহলে,
তোমাদের এই শহর সকাল দুপুর মিলে খিলখিল করে হাসে,
করে মাইকিং কয়েকটা কিংকং,
ওরে দেখে যা রাতের শহরে পথভুলে এসেছে পাগলে!
স্বপ্নগুলো তেমন বড় ছিলোনা কখনো!
দুহাত ছড়িয়ে শুয়ে থাকবো কংক্রিটের ছাদের উপর,
রেলিঙের ধার ঘেঁষে নেমে আসা বাতাবি লেবুর কচি ঘ্রাণে,
ভিজিয়ে মাথার চুল,
সপ্তর্ষির সাথে গল্প করবো কয়েকশো বছর!
কালো সিমেন্টের সাথে মিলেমিশে ভেসে যাবে অরোরা ঝড়,
পাগল বাতাসে পাল্টাবে ফেরেলের দিক!
ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি তাদের রং সোনালী নীল,
পশমের মতো ভেসে এসে ডুব দিবে আমার ছাদের জোয়ারে!
ব্যস এটুকুই! তবুও হলোনা পূরণ!
শহরটা ভরে গিয়েছে অসময়ে অদ্ভুত আষাঢ়ে!
এ বৃষ্টি বিলাসী নয়,
ভয়ংকর ক্ষার নাকি মিশে থাকে তার শহুরে শরীরে!
এখানে মানুষ ডুবে যায় গভীর কাদায়,
নিয়ে দুঃখ সকল!
তবু সাথে নিয়ে মৃত স্বপ্নগুলি ভেংগে এই শহরের ঘিঞ্জি-গলি,
মেঘলা আলোর দিনে আমি আজো হেঁটে চলি!