হাত- পা ,মাথাসহ সারা শরীর অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা আমাদের গণমাধ্যমের। বিবেক ও শিরদাঁড়া অনেক আগেই ক্ষমতাসীন ও রাজপথের বিরোধীদলের কাছে বিক্রি করে দেয়া । ক্ষমতাসীনরা যে ভাষায় কথা বলেন ,আমাদের গণমাধ্যমের হর্তা-কর্তারা একই ভাষায় সুর মেলান । ইদানীং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরাও দলীয় ক্যাডারদের ভাষায় কথা বলেন ।উপরমহলকে সন্তুস্ট করতে এরা সবাই চাটুকারিতার চোঙ্গা ফুঁকেন ।
কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে এই চাটুকার শ্রেণীটির সবাই গলা ফুলিয়ে বলেন , ' দেশে এতো এতো টেলিভিশন ,রেডিও,সংবাদপত্র, অনলাইন চালু আছে। গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা না থাকলে কি সম্ভব হতো?'
কি চমৎকার যুক্তি ।
লালচোখে কঠিন কথা না বলে টুপ করে বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিচ্ছেন। নিউজটা ফেভারে না গেলে ঝাড়ি দিচ্ছেন । ভাতে মারার জন্য চাকুরীচুত্য করাচ্ছেন । নানানভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখছেন। এখনকার গণমাধ্যম মালিকদের নানানভাবে শাসিয়ে ব্যবসায় মনযোগী হতে বলছেন। মালিক আর কি করবেন ?
ভয়ে কর্মীদের বলছেন ," বাপুরা রেখে ঢেকে নিউজ করো,'' সরকার ক্ষেপে এ রকম নিউজ এড়িয়ে যাও ।''
কি বলেন আমাদের গণমাধ্যম অনেক স্বাধীন না?
আবার সরকার সমর্থকরা বলবেন , '' ভাই এতো কচলান কেনো ? গণমাধ্যম স্বাধীন না হলে আপনি ফেসবুকে এইসব লিখেন কিভাবে?''
তাতো অবশ্যই। কিভাবে লিখি ?
আমরাতো এর আগে ২বার সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেয়ার নমুনা দেখেছি।
আলোচনা- সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা কারো মাঝেই দেখি না। কলম , কী-বোর্ড ও মাউসকে ভয় পেয়ে ফেসবুক,টুইটার , ভাইবার, হোয়াটস আপ, ইমো, স্কাইপ সহ সবক'টি সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। এইবারও যখন লিখছি ,ভাবছি হয়তো ফেসবুক অথরিটিকে চিঠি লিখে জানতে চাওয়া হবে আমার আইডি সম্পর্কে ! হয়তো বন্ধ করে দিতে বলা হবে আমার আইডি ।হয়তো অতীতের মতন আমার ইনবক্স গালাগালিতে ভরে যাবে। হয়তো ফোনে কুতসিত গালিসহ হুমকি ধামকি পাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
ভাই, বুঝতে পারলেন কিভাবেই লিখি ।
তারপরেও বলি ,গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমের বিকল্প নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯