somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভাগীয় নগরীতে চাকুরীর নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের দাবী প্রসঙ্গে

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সংবধিান মতে সকল নাগরকিরেই নজি নজি যোগ্যতা মোতাবকে সরকারী চাকুরীতে প্রবশোধকিার রয়ছে।ে যোগ্যতা নরিূপন করে যাচাই বাছাই করইে চাকুরীতে নয়িোগ দওেয়া হয়। এজন্য লখিতি মৌখকি ও মনস্তাত্বকি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ‘ক্যাডার সার্ভিস’ এ নিয়োগের জন্য রয়েছে ‘সরকারী কর্ম কমিশন’ ( Public Service Commission)। বর্তমানে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য গঠন করা হয়েছে ‘ বৈচারিক কর্ম কমিশন’ ( Judicial Service Commission), সুপ্রীম কোর্ট এবং জেলা আদালত সমূহে আইন ব্যবসা করার সনদ ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল’ থেকে দেওয়া হয়। বিভিন্ন আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ একই ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ করে থাকে। এসব পরীক্ষা প্রায়ই অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা মহানগরে। ‘সরকারী কর্ম কমিশন’ এবং কিছু রাষ্টায়ত্ব ব্যাংকসহ কোন কোন প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষার কিছু অংশ বিভাগীয় মহানগরে নিয়ে থাকে। তবে চ’ড়ান্ত নির্বাচনী পরীক্ষা তারা গ্রহণ করে তিলোত্তমা ঢাকা মহানগরে। ‘বৈচারিক কর্ম কমিশন’, ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল’ তাদের এতদসংক্রান্ত সকল পরীক্ষা গ্রহণ করে রাজধানী ঢাকা মহানগরে। দেশে উচ্চ শিক্ষিত ও মেধাবী যুবক-যুবতীর অভাব নাই। তাদের অধিকাংশই বেকার অথবা যোগ্যতার তুলনায় নি¤œতর পদে চাকুরী করতে বাধ্য হচ্ছে। পারিবারিক অভাব-অনটনই এর কারণ। বেকারত্বের কারণে বা আশংকায় এরা অনেকেই ভুগছে হতাশায়। এই হতাশার কারণে কেউ কেউ ভিন্নরূপ জীবন যাপন করতে শুরু করে---যা তার নিজের, পরিবারের ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর। একে তো চাকুরীর সংকট তার উপর চাকুরীর জন্য ঢাকা গমন , এটা বেকার চাকুরী প্রার্থীদের জন্য দুঃসহ খরচান্তের ব্যাপার। যার কারণে অনেকেই মফস্বল এলাকাতেই যোগ্যতার তুলনায় নি¤œ পদ মর্যাদার পদে চাকুরী করে। আবার কেউ কেউ অনেক কষ্ট করেও অবস্থান করে ঢাকাতে। এভাবে যাঁরা রাজধানীতে অবস্থান করে তারা আলোকোজ্জ্বল রাজধানীর নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে পারে না, কারণ তা পাবার জন্য যে সম্পদ ও প্রতিপত্তি থাকার দরকার তা তাদের নাই। তা অর্জন করতে তাদেরকে কুপথে পরিচালনা করার উপাদান ও প্রলোভন তাদেরকে প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকে। এই ফাঁদে পড়ে অনেক শান্ত শিষ্ট মেধাবী প্রতিভাবান ছেলে-মেয়ে বিপথে চালিত হয়। যা থেকে তাদেরকে আর ফেরানোর কোন উপায় থাকে না। এভাবে অনেক প্রতিভা বিপথে চালিত হয়ে হারিয়ে যায় । প্রতিভার মৃত্যু জাতি গঠন ও উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ‘ক্যাডার সার্ভিস’ সহ সকল ‘কর্মক্ষেত্র’ এগুতে থাকে মেধাশূণ্যতার দিকে। এই গতিধারা যে কোন জাতিকে নিয়ে যায় ধ্বংসের শেষ প্রান্তে।

পরিতাপের বিষয় কতিপয় বিত্তবান, ভাগ্যবান ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির স্বার্থে দেশের সমস্ত কার্যক্রম রাজধানীতে কেন্দ্রীভ’ত করা হয়েছে। এই কারণে ঢাকা মহানগর আর চট্টগ্রাম মহানগর ব্যতীত সারা দেশের মানুষ রাষ্ট্রের কাছে তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পরীক্ষা দেবার জন্য ঢাকায় যাবার প্রয়োজন হলে পরীক্ষার্থী এবং তার মাতা-পিতা অভিভাবক মহলে শুরু হয় দুঃশ্চিন্তা। অর্থ , যাতায়াত, থাকার জায়গা , পরীক্ষার কেন্দ্রস্থল এসব নিয়ে তাদেরকে অনেক ভাবতে হয়। সব্রাই তেমন আত্মীয় স্বজন যে আছে তা নয়। থাকলেও সকলের মনমানসিকতা সহযোগিতামূলক নয়। এই অবস্থায় কোন হোটেল বা রেস্ট হাউসে তাদের থাকতে হয়। এই সব স্থানে আসন পাওয়াটাও কঠিন ব্যাপার। খাবার ব্যাপারটাও একই রকম। সুযোগ বুঝে আবাসিক হোটেল মালিকেরা আসন ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। খাবার হোটেলের মালিকেরাও খাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়। থাকা ও খাবারের এই অবস্থার কারণে পরীক্ষার্থীগণ পরীক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ পায় না। সারা দেশের পরীক্ষার্থী একই সময়ে ঢাকার পথে রওনা হয়, তাই যানবাহনে হয় প্রচন্ড ভিড়। টিকেট সংগ্রহ করতে হয় গলদঘর্ম, ফেরার সময়ও একই ঘটনা ঘটে। পরীক্ষারস্থলে পৌঁছাতে যানজটের কারণে পরীক্ষার্থীদেরকে হতে হয় হয়রানির একশেষ। অনেকে এই যানজটের কারণে যথাসময়ে পরীক্ষার ‘হলে’ হাজির হতে পারে না। এই বাস্তবতার কারণে পরীক্ষার্থীগণ ফলাফল কাঙ্খিত মতে পায় না। এটা সারা দেশের পরীক্ষার্থীগণ ও তাদের অভিভাবকদের জন্য প্রকট সমস্যা। সেই জন্যই দাবী উঠেছে পরীক্ষা সমূহ বিভাগীয় মহানগরে অনুষ্ঠানের।

মফস্বলের সকল শহরেই এসব পরীক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত স্থাপনা ও দক্ষ প্রাজ্ঞ ব্যক্তি রয়েছেন। তাই পরীক্ষা সমূহ মফস্বল শহরে গ্রহণ করতে কোন বাধা ও সমস্যা এর কোনটাই নাই। বি সি এস পরীক্ষার প্রাথমিক বাছাই ও লিখিত পরীক্ষা বিভাগীয় শহরগুলোতে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এ নিয়ে কিন্তু কোন সমস্যা হয়না। মৌখিক পরীক্ষাও বিভাগীয় শহরে নেওয়া যেতে পারে। পরীক্ষক হবার যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষাবিদ বিভাগীয় মহানগরে অনেক আছেন। এ কাজে তাঁদেরকে সংশ্লিষ্ট করা যেতে পারে। ‘বিচার কর্ম কমিশন’ ও ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল’ তাদের পরীক্ষা সমূহ ঢাকায় গ্রহণ করে থাকে। এই রূপ পরীক্ষা নেবার উপযুক্ত নিজস্ব ভবন তাঁদের নাই, পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলও তাদের নাই। এজন্য তাদের উভয়কেই গৃহ ও জনবল বাইরে থেকে নিতে হয়। এজন্য তাদেরকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। বিভাগীয় মহানগরে এসব পরীক্ষা নেবার জন্য উপযুক্ত গৃহ ও জনবল পাওয়া সম্ভব। ‘সরকারী কর্ম কমিশন’, পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়, বিশ^বিদ্যালয় কলেজ, ‘সরকারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা এক্ষেত্রে নেওয়া যেতে পারে। তাহলে পরীক্ষাও সুষ্ঠু ভাবে গ্রহণ করা যাবে, পরীক্ষার্থী ও তাদের মাতা-পিতা-অভিভাবকগণ অযথা হয়রানি ও খরচান্তের হাত থেকে রেহাই পাবে। পরীক্ষা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান সমূহও এভাবে তুলনামূলকভাবে কম খরচে এবং স্বপ্ল সময়ে তাদের কার্য সমাধান করতে পারে।

এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে সম্প্রতি রাজশাহীর বিশিষ্ট নাগরিকগণ মানব-বন্ধন করেছেন। জনগণ এই দাবীর প্রতি জানিয়েছে ব্যাপক সমর্থন। এনিয়ে সর্বত্র আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। সরকারী পর্যায়সহ ‘বিচার কর্ম কমিশন’, ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল’ এবং নিয়োগকারী সংস্থা সমূহ এই বাস্তবতা উপলব্ধি করবেন বলেই আশা করা যুক্তিযুক্ত।

লেখক ঃ সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×