কেমন সে চেহারা? বিয়ের আগে তানজিল বলেছিলো, সে অনার্সের ছাত্র। পরে দেখা গেলো এসএসসিও পাস করেনি। ‘অন্তরাকে ছাড়া বাঁচবো না, সুখের সংসার গড়ে তুলবো’ এরকম কতোই না বাহানামার্কা কথা। বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় তানজিল মোটরসাইকেল দাবি করে। কৌশলে টাকাও চায় সে। এসব অভিযোগ করে অন্তরার মা বললেন, কী করবো বলো বাবা! মেয়ের সুখের কথা ভেবে মোটরসাইকেল দেয়া হলো। নগদ দেয়া হলো ত্রিশ হাজার টাকা। এতেও মন ভরলো না। অবশেষে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের একটি হোস্টেলে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। নির্যাতনের শিকার অন্তরাকে গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সুমিতা আক্তার অন্তরা ও তার পাশে থাকা নিকটজনেরা বলেন, অন্তরা এখন এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সে আলমডাঙ্গা খাদিমপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুরের আনিছুর রহমানের মেয়ে। বছর দু আগে তার সাথে মোবাইলফোনে পরিচয় হয় একই উপজেলার ভাংবাড়িয়া মহেশপুরের তানজিলের সাথে। তানজিল সে সময় নিজেকে অনার্সের ছাত্র বলে দাবি করে। মোবাইলফোনেই প্রেম। পরে দেখা হয়। বিয়ের সিদ্ধান্তও নেয় তারা। বিয়ে হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিছানায় অন্তরা এসব বলতেই উদাসীন হয়ে গেলেন। তার দু চোখের কোণ গড়িয়ে ঝরলো অশ্রু। নির্বাক হয়ে পড়লো সে।
বিয়ের ১ বছর ৮ মাসের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তরাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেডের পোঁচ। চোখের ওপর কালসিটে দাঁগ। কেনো? গতপরশু বুধবার বিকেলে স্বামী তানজিলের সাথে আলমডাঙ্গার একটি হোস্টেলে দেখা করতে গিয়েছিলো। সেখানে দেখা করার জন্যই তানজিল তার স্ত্রীকে ডেকে ছিলো। সেখানেই ব্লেড দিয়ে পোঁচানো হয়। কিলঘুষি মেরে জখম করা হয়। অন্তরার বরাত দিয়ে তারই শয্যাপাশে থাকা কয়েকজন এ অভিযোগ করে বললেন, পরশু সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নেয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তানজিল আলমডাঙ্গার পল্লি মহেশপুরের আবু তাহেরের ছেলে। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে অন্তরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:০৫