আমি মৃত্যুদন্ড বিরোধী। পৃথিবীর অধিকাংশ সভ্য দেশেই এই দন্ড নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সেকিউলার সমাজও "দাঁতের বদলে দাঁত, চোখের বদলে চোখ" এই মধ্যযুগের মধ্যপ্রাচ্যীয় নীতিতে বিশ্বাসী।
নিঃসন্দেহে কথিত জানোয়ারটি কারো সহানুভূতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কি কারণে এ'কে অন্য পলাতক জনের তুলনায় ভালো মনে হলো, সেই প্রশ্ন আমারও। আশা করি বিচারকের রায়ের পূর্ণাংশ পড়া গেলে হয় তো কোন হদিশ পাওয়া যাবে। আবার এমনও হতে পারে পলাতক জন আত্মপক্ষ সমর্থন না করায় বাদী পক্ষের দাবি বিনা প্রশ্নে গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু পরের জনের আইনজীবী হয়তো কোন সঙ্গত ফাঁক-ফোকর খুঁজে পেয়েছে, যেটা কাটাবার মত আত্মবিশ্বাস রাজনৈতিকভাবে নিযুক্ত অনভিজ্ঞ-অযোগ্য বিচারকের ছিল না (তাদের তো বেলজিয়ামে স্কাইপ করে আইন জানতে ও বুঝতে হয়)। যেহেতু নিজের পিতার হত্যার অপরাধে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাতে তিনি শোকরানা নামাজ পড়েছিলেন, আমাদের প্রধান মন্ত্রী তো এই দন্ডের বিরোধী নন এবং তাঁর হুকুমেই যে দুদক থেকে সুপ্রিম কোর্ট সবাই পরিচালিত হয় এটা তো সর্বজ্ঞাত।
তরুণরা অতীত নিয়ে ভাবুক, অপরাধীর শাস্তি দাবি করুক এটা আমি চাই। তবে এ জাগরণ যদি পদ্মা সেতুর জন্য বা কালো বিড়ালের কারণে হতো , আমি আরো খুশি হতাম। তারা ভবিষ্যতের দিকেই তাকাক। অতীত অধ্যয়ন করুক, কিন্তু তার জন্য প্রাণ দিয়ে দেয়ার দরকার নেই। প্রেক্ষিত সঠিক রাখা দরকার।
দুঃখ হয় (এবং হাসিও আসে) যখন দেখি তিন চার বছরের বাচ্চাকে নিয়ে আসা হয়েছে, এবং সে কিছু না বুঝেই শুধু শেখানো "ফাঁসী চাই" বলছে, এবং সেটাকে মিডিয়া তরুণের গণজাগরণের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করছে।
আমরা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায়, গণিত ও ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে, দাবা প্রতিযোগিতায় অনভিজ্ঞতা সত্ত্বেও অসাধারণ অপ্রত্যাশিত সাফল্য লাভ করেছি। আমাদের মাথায় তো কিছু থাকার কথা।