কে যেনো বলেছিলো....ইমু! - "ঈদের দিনটা কিন্তু আর সকল দিনের মতই । সেই একি সূর্য; একি আকাশ; একি দিন । তারপরও মানুষের মনে কত আনন্দ, কত রং । তফাৎটা কোথায় জানো? তফাৎটা তাঁদের মনে । তাঁরা জানে আজ ঈদ । আজ আনন্দ,ফূর্তির দিন । তাঁদের মনের চোখে ঈদের দিনটা তাই অন্যরকম । আর সকল সাদামাটা দিন থেকে আলাদা । একেবারেই আলাদা । মনের ব্যাপারটা বুঝেছো? মানুষ নিয়ন্ত্রিত হয় মন দ্বারা । মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে অবশ্যই মানুষ এত ভুল করতো না । কিছুটা লজিক প্রয়োগ করার চেষ্টা করত । মনটাকে ফূর্তিতে রাখো । দেখবে চারপাশের পৃথিবীটাও কেমন ধূসর থেকে রঙিন হচ্ছে । বুঝলে, একটা শক্তিশালী মন দরকার আমাদের । যা সব সময় রঙিন থাকতে পারে । সব পরিস্থিতিতে । সর্বক্ষণ । তাহলে আমাদের একদিনের ঈদ হবে সবদিনের । "
মন। এই বোকা মনকে ভাল করার উপায়ই বা কি ? আর মন ভালো থাকবেই বা কিভাবে? বাবা-মা দুজনই দু সপ্তাহের জন্য দেশের বাইরে । ঈদের তিন দিন আগে থেকেই । অফিসিয়াল কাজ । নয়না যে রকম তাতে তার বন্ধু-বান্ধবের সংখ্যাও নেহায়েৎ কম ।
কিছুদিন ধরে এক বন্ধু নিয়ম করে সুন্দর সুন্দর এসএমএস পাঠাচ্ছিলো । আজ ঈদের দিন বলেই হয়তো বেচারার কোন খবর নেই । নয়না অবাক হলো । এই কয়দিনে এই উড়ে আসা শব্দগুচ্ছের প্রতি তাঁর একপ্রকার নির্ভরতা তৈরি হয়েছে । তাঁর মন চাচ্ছে আজও একটা শব্দগুচ্ছ উড়ে এসে ডেকে উঠুক ।
অসহ্য একাকীত্বে নয়না নিজের ঘরেই পড়ে রইলো সারাটা দিন । দুপুরের পর গেলো দিনের জ্বরও ফিরে এসেছে তাঁর। একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা । এই দিনগুলি নয়নার সয়ে গেছে । কাউকে জানাবেও না যে তাঁর জ্বর । জ্বর আসে । আবার সেরে যায় । অদ্ভুত অভিমানী আর নিরব মেয়ে নয়না ।
ঈদের দিন গত হলো । রাত বারোটা দশ । প্রচন্ড জ্বর নয়নার । এই জ্বরের ঘোরেই তাঁর কানে আসে ঘররর... ঘররর... শব্দ। ... সেই ছেলেটি! ... । পুরো একটি দিনের পরে তাঁর সাহস হলো ফোন করার । হা হা হা । কখনও কখনও কিছু মানুষ কেন যে এত ভীতু হয় । ভীতু? নাকি প্রয়োজনই বোধ করে নি কোন? কি জানি? কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করতে গিয়ে ক্যানসেল বাটন চেপে ফেলে নয়না ।
তারপর... জ্বরের ঘোরে কোন এক অনিকেত প্রান্তরে ভেসে যায় নয়না... । .... কাঙ্খিত ফোন কলটি তাঁর আর ধরা হয় না...।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:২৯