চিন্তার দর্শন
চিন্তার স্তর ৩ টি রেশনাল মেথডে চিন্তা করলে সাধারণত প্রকৃত সত্য উপলব্ধি বা অর্জন সম্ভব অন্যদিকে মেথডের কোন একটি স্টেপ বাদ পড়লে বা ফলো না করলে প্রকৃত সত্য অনুধাবন সম্ভব নয়
উদাহরণ স্বরূপ: ছোটবেলা বাচ্চাকে নানা ধরণের তথ্য দেয়া হয়ে থাকে যেমন-ভূত, আগুন হাত পুড়ে যায়, জীবানু পেটে গেলে অসুস্থ হয়, আল্লাহ সব কিছু দেখেন, কান্না করলে শয়তান আসে ইত্যাদি বাচ্চা যখন বড় হয় সে চিন্তা করতে শেখে প্রতিটি তথ্যকে সে যাচাই করে নেয় এজন্য রেশনাল মেথডে সে চিন্তা করে:বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ-মস্তিকে প্রেরণ-এ সম্পর্কীয় পূর্ব তথ্য বাস্তবতার সাথে তুলনা করে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যার ফলে সে ভূতকে কাল্পনিক মনে করে, আগুনে হাত দিলে পুড়ে যাওয়াকে সত্য হিসেবে গ্রহণ করে কান্না করলে শয়তান আসে বিষয়টি বাস্তবতা বিবর্জিত আল্লাহর অস্তিত্বের বিষয়টিও যখন সে চিন্তা করে তখন এর ফলাফল নির্ভর করে সে কোন স্তরের চিন্তা করতে পেরেছে, তার ওপর
তিনটি স্তরের চিন্তা হলো-
-ভাসা ভাসা চিন্তা (সুপারফিশিয়াল)
-গভীর চিন্তা (ডিপ)
-আলোকিত চিন্তা (এনলাইটেন্ড)
চিন্তার স্তর ভাসা ভাসা হলে স্রষ্টি কর্তার অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রমাণ না থাকায় এ বিষয়ে ভ্রান্তি তৈরি হয় চিন্তার স্তর ডিপ হলে বাস্তবতার নিরিখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রমাণ করতে যায় অনেকে এবং ব্যর্থ হয়ে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে আলোকিত স্তরে চিন্তা করলেই শুধু সৃষ্টিকর্তাকে রেশনালি প্রমাণ করা যায় এবার স্তর তিনটিকে সংজ্ঞায়িত করা যাক
সুপারফিশিয়াল থট-বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে বাস্তবতার আলোকে যখন কেউ সিদ্ধান্ত নেয়, তাকে সুপারফিশিয়াল বা ভাসা ভাসা চিন্তা বলে শুধুই বাস্তবতার আলোকে চিন্তা করা হয় বলে সাধারণত এর ফলাফল ভুল হয়ে থাকে এখানে সমস্যার মধ্যেই সমাধান খোঁজা হয় উদাহরণ-ঢাকার জ্যাম সমস্যার সমাধান হিসেবে রিকশা তুলে দেয়া, প্রাইভেটকার তুলে দেয়া ইত্যাদি হলো ভাসা ভাসা চিন্তার ফসল
ডিপ থট- বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে এর সাথে অন্যান্য বাস্তবতার সম্পর্ক তৈরি, কারণ-ফলাফল ইত্যাদি অনুসন্ধান করে যে চিন্তা করা হয় তাকে ডিপ থট বলে যেমন- জ্যাম সমস্যার সমাধান হিসেবে সিগনাল ব্যবস্থার উন্নতি, পুলিশের ঘুষ খাওয়া বন্ধ করা বা আরো ডিপে গেলে ঢাকাকে বিকেন্দ্রিভূত করা ইত্যাদি
এনলাইটেন্ড থট- বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে, অন্যান্য বাস্তবতার সাথে সম্পর্ক তৈরি করে উক্ত বাস্তবতার আগের ও পরের বিষয়ের পর্যালোচনা করে যখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাকে এনলাইটেন্ড থট বলে এ জন্য চিন্তাশীল ব্যক্তিকে চিন্তাগতভাবে রিভাইভ্ড বা (পুনর্জাগরিত) হওয়া দরকার না হলে ডিপ থেকে এনলাইটেন্ড চিন্তা হওয়া সম্ভব নয় যেমন- জ্যাম সমস্যার সমাধান হিসেবে এর কারণ অনুসন্ধান করে দেখা যায় পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা ও উন্নয়নই এর মূল কারন কেননা এ ব্যবস্থায় পুঁজিপতিরা নিজেদের স্বার্থে সম্পদ কেন্দ্রিভূত করে ও কেন্দ্রিয় উন্নয়ন হয়, এজন্য ঢাকায় লোকসংখ্যা বেশি ও সমস্যাও বেশি তাই এ সমস্যার সমাধান অাদর্শিক ভাবেই খুঁজতে হবে
তবে মার্ক্সীয় দর্শনে চিন্তাকে অন্যভাবে ডিফাইন্ড করা হয়েছে যা নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করা যেতে পারে (চলবে)