কৃষিতে নারীর অবদানের কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আধুনিক কৃষিতে নারীর অবদান কমে আসছে বলেই মনে হয়। বাণিজ্যিক কৃষির কারণে এখন মানুষ আর ঘরের বীজ ব্যবহার করেন না।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডিলারদের নিকট থেকে বীজ কেনেন। আবার ফসল চাষের ক্ষেত্রে কৃষক পরিবারের মহিলারা মাঠে কাজ করেন এটা বলা যাবে না। অনেক মহিলা এখন মাঠে কাজ করেন কারণ গ্রামে এখন ফসল চাষের মৌসুমে শ্রমিক সংকট থাকে। এখানে যারা যুক্ত হন তারা কৃষাণী হিসেবে নয়- শ্রমিক হিসেবে।
ফসল উত্তোলনের স্তরে মাড়াই এখন যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলে গেছে। ধান ফসলের একটা বড় অংশ চলে যায় রাইস মিলে। অতএব ধান থেকে চাউল বানানোর কাজটি এখন মহিলাদের হাতে নেই।
কৃষির যে স্তরে মহিলারা বেশি অবদান রাখেন সেটি হলো পারিবারিক কৃষি- আঙ্গিনায় সবজি চাষ, গাছপালা- গরু বাছুরের যত্ন। মাঠের কৃষি বা বাণিজ্যিক কৃষিতে কৃষক এখন নিজেই তেমন কিছু করেন না- কেউ চাষ করে দেয়- কেউ লাগিয়ে দেয়, কেউ কেটে দেয়। বাণিজ্যিক সবজি তো মাঠ থেকেই বিক্রী হয়ে যায় = সেখানে অনেক সময় ক্রেতাই ফসল সংগ্রহের জন্য লোক নিয়োগ করেন।
অথচ একটা সময় কৃষিতে নারীরাই বেশি সময় ব্যয় করতেন। এখন তেমনটি আর দেখা যায় না্। কৃষি তো এখন কৃষকের কাছেও নেই। ব্যবসায়ে রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যবসায়ের প্রসঙ্গ যখন আসে তখন মূলধন- প্রযুক্তি-শ্রমিক-মুনাফা এই স্তরগুলো চলে আসে। সেক্ষেত্রে নারীরা বড় জোর কৃষি শ্রমিক হিসেবে চলে আসেন- তাও আবার দরিদ্র পরিবারের নারীরা।
তাহলে কৃষিতে নারীর অবস্থান এখন কোথায় কোন স্তরে আছে সেটা দেখা দরকার। আগের চেয়ে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে না কমছে সেটি নিয়েও কোনো গবেষণা আছে কিনা জানি না। তবে কথা বলার ক্ষেত্রেে উপাত্তের চেয়ে আবেগের অবদান বেশি।