সারা দেশে 'সুস্থ-মানসিকতার' জয় জয়কার উঠেছে !!!
দেশ জুড়ে আল্লার নাম প্রতিষ্ঠা করতে আমরা ‘সুস্থ-মানসিকতার' মোল্লা বাহিনী দা-কুড়াল হাতে মন্দির ভাঙ্গতে উঠে পড়ে নেমেছি । দেশে আমরা আল্লার আইন প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বো । মুজিবের জন্য হানাদাররা পারে নাই । জামাআত পারতে পারতেও পারে নাই কী জন্য বুঝি না । আমরা পারবোই । কোন পূজা-পার্বণ এদেশের বুকের উপর হবে না । সব হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানরা আজ গনিমতের মাল ।
আল্লাহর কোরআন আমার কখনো পড়ার সময় হয় না , আর পড়েই বা কী !! আরবি ভাষা তো বুঝি না । কিন্তু বাংলা-ইংরেজি ভাষায় তো আর কোরাআনের অনুবাদ পড়তে পারি না । একটা হিন্দুর আর একটা ইয়াহুদি-নাসারাদের ভাষা । ওই ভাষায় গনিমতের মালের উপর চড়া যায়, কিন্তু আল্লার কথা পড়া যায় না ।
তাই নিজের বিবেচনা অনুযায়ী অয়সালা করি । আল্লাহর রাস্তায় নামছি , আমার মুখ দিয়া যা বাহির হয় তাই বিধান !!! ব্যাস ।
সারা দেশে আমরা সুন্দর 'সুস্থ-মানসিকতার' ছেলেরা অস্ত্র হাতে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে নামছি । কোথাও কোন অন্যায়-অবিচার হতে দেবো না । সবাই মাথা নিচু করে থাকবে । মাথা তুললেই shoot.
যেখানে যেখানে যে যে মাথা তুলবে, কিছু দাবি করবে সেখানেই আমাদের বাহিনী পৌছে যাবে । কোন দাবি দাওয়া নয় । যা দেব, যতটুকু দেব তাতেই সবাইওকে খুশি থাকতে হবে । না দিলেও কিছু বলা যাবে না । কেড়ে যে নিচ্ছি না এটাই তো বেশি । এ বাংলাদেশ আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি । আমি যা ইচ্ছা করব-কার কী ।
কিসের শিক্ষক !!! তাদের আবার কিসের আন্দোলন । কাদানে গ্যাস ছুড়ছি বলে সুশীল সমাজের গায়ে লাগছে ?? বুলেট যে মারি নাই এই বেশি । সব চুপ ।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাহেব, 'সুস্থ-মানসিকতার' এই ঢেউয়ে আপনি 'সাম্প্রদায়িকতা' কোথায় পেলেন !!! আপনিও কি তবে অসুস্থ,বিকৃত,জঘন্য ?? ঐ ‘কতিপয় ছেলেমেয়ে’গুলোর মত ? সাম্প্রদায়িকতা-অসাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা আমরা বলে দেব । তারপর statement দেবেন । অযথা বিভ্রান্তি ছড়াবেন না !!!
[সেই প্রথা বিরোধী মানুষটা বলেছিলেন -
রাহু গ্রস্থ সভ্যতার অবশিষ্ট সামান্য আলোক
আমি জানি তারা সব নষ্টদের অধিকারে যাবে ।
আজ আমরা নষ্টরা সব অধিকার করে ফেলেছি । কিন্তু বুকের গভীরে কোথায় যেন চিন চিন একটা ব্যথা – কোথায় যেন কী অবিরাম বলে চলেছেঃ নষ্টই তোমাদেরকে অধিকার করে ফেলেছে । তুমি কেবল নষ্টের শিকলে বাধা একটা পশু – কিংবা আরো অধম কিছু ।]
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:২৭