বিগত বহু পোস্টে মজা এবং হাসাহাসি হইল, এইবার কিছু জ্ঞানের কথা শেয়ার করি। দেখে নিন কিছু আসাল্ট রাইফেলের কথা এবং তার সুবিধা অসুবিধা। যদিও এইগুলা জেনে আপনাদের বেশিরভাগেরই কোন কাজে আসবে না, তবুও দেখেন। কাজে লাগতেও পারে।
১.এম৪এ১
১৯৯৪ সাল থেকে দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও বহুল ব্যাবহারিত রাইফেল। নির্মাতা দেশ আমেরিকা। একে আপনি তিন মুডে রাখতে পারবেনঃ সেফ মুড, সেমিঅটোমেটিক মুড ও অটোমেটিক মুড, তার মানে এক মেশিনে দুই রাইফেলের মজা। ৫০০ থেকে ৬৫০ মিটারের মধ্যে এর সাড়ে ৫সেন্টিমিটার ন্যাটো ষ্ট্যাণ্ডার্ড বুলেট দিয়ে যেকোনো মুরগি, গরু মানুষ ফেলে দিতে পারবেন অনায়সেই। এর সমগোত্রীয় এসিআর বা স্কার রাইফেলের থেকে এইটা চালিয়ে বহুত মজা, যদিও এর জারকিং একটু বেশি। বহু দেশের সেনাবাহিনী আর পুলিশের স্পেশাল স্কোয়াড এই রাইফেল ব্যাবহার করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো এবং পুলিশের সোয়াটের কাছে এই জিনিস আছে।
এর আরেকটি ভালো লাগার দিক হল এর অনেক এক্সেসসরিজ আছে। যেমন এতে আপনি গ্রেনেড লঞ্চার লাগাতে পারবেন। এর সাথে নিশানা ঠিক করার জন্য রেড ডট কিংবা হলগ্রাফিক স্কোপ লাগাতে পারেন।
এছাড়া নাইটভিশন, লেজার, হারটবিট সেন্সর লাগানর সুযোগ তো থাকছেই। এর সাথে পাবেন এম ক্লাস রাইফেলের অভিজাত্যের স্বাদ। এত সুবিধার জন্য একে আমি ১ নাম্বারে রাখছি।
২. এসসিএআর বা স্কার এল
ইনার পুরা নাম স্পেশাল অপারেসন্স ফরসেস কমব্যাট আসাল্ট রাইফেল। এগুলো দুই ধরনের হয়, খাতগুলোকে বলে স্কার এল এবং লম্বাগুলোকে বলে স্কার এইচ। স্কার এল হইল আসাল্ট রাইফেল, স্কার এইচ কে ব্যাটেল রাইফেল বলে।
প্রস্তুতকারী দেশ বেলজিয়াম এর এফএন হাস্ট্রাল। এটাতেও গ্রেনেড লঞ্চার এবং বিভিন্ন স্কোপ লাগানো যায়। রেড ডট স্কোপ লাগিয়ে এটি চালাতে কম খারাপ লাগেনা, তবে এর খ্যার খ্যার শব্দটা আমার কাছে বিরক্তিকর লাগে। দুনিয়ার মাত্র ৬টি দেশের কমান্ডোরা এটি ব্যাবহার করে। এক আদর করে বুদ্ধিজীবীরা আসাল্ট রাইফেলের নেক্সট জেনারেশন বলে থাকেন। এটিও ন্যাটো ষ্ট্যাণ্ডার্ড বুলেট ব্যাবহার করে, তাই আপনি এম৪ এর ম্যাগাজিন দিয়ে এটি চালাতে পারবেন। যারা ক্রাইসিস গেমটি খেলেছেন, তাদের কাছে আর এর বর্ণনা দেওয়ার দরকার নেই। তাই স্কার এল এর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য একে ২ নম্বরে রাখলাম।
৩. একে৪৭
এর কোন পরিচয় না দিলেও চলে। রাশিয়ানরা কি জিনিস বানাইল, সেই ১৯৪৫ সালের ২য় বিশ্বযুদ্ধ থেকে এখন পর্যন্ত সমান জনপ্রিয়। প্রায় সাড়ে সাত ক্যালিবারের রাইফেলটির শক্তিও অনেক। এটিই মনে হয় এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় শেষ রাইফেল জেটিতে লোহার পাশাপাশি কাঠও ব্যাবহার করা হয়। এতে পুরাতন জামানার আয়রন সাইট লাগানো থাকলেও এতে হলগ্রাফিক স্কোপ লাগিয়ে নিলে একটু আধুনিক আধুনিক ভাব আসে, তবে আমার কাছে চালানর সময় একটু উজি উজি ভাব লাগে। তবুও জনপ্রিয়তার দিক থেকে দেখতে গেলে এটি এখনও এক নম্বর। পৃথিবীর বহু দেশে এটি প্রচলিত আছে।
বাংলাদেশে এর চাইনিজ ভার্সন টাইপ ৫৬ প্রচলিত।
৪. জি৩৬কে
এর প্রস্তুতকারী দেশ জার্মানি। ১৯৯০ সালে এর ডিজাইন করা হয়, যা ১৯৯৭ সালে বাজারে আসে। এর প্রস্তুতকারী কোম্পানি হল বিখ্যাত হেকলার এন্ড কোচ, ফলে একে ব্রান্ডের রাইফেলও বলা চলে। এখন পর্যন্ত এটি দুনিয়ার প্রায় ৩৫টি দেশে ব্যাবহারিত। এর প্রধান সুবিধা হল এতে একাধিক ম্যাগাজিন ব্যাবহার করা যায়, এবং নরমাল এবং ড্রাম উভয় ম্যাগাজিনই চলে।
এই রাইফেল সবচেয়ে রিফ্লেক্টিভ স্কোপ সাইটের সাথে চালিয়ে মজা। এতেও বিভিন্ন আক্সেসসরিজ লাগানো যায়, এবং এর সাথে ফ্রি ভাঁজ করা যোগ্য বাইপড পাওয়া যায়।
৫. এসিআর
এর পুরা নাম আডাপ্টিভ কমব্যাট রাইফেল। এটি একদমই নতুন মাল, ২০০৮ এ রিলিজ হয়ে গতবছর বাজারে এসেছে। প্রস্তুতকারী দেশ আমেরিকা। এটিও ন্যাটো ষ্ট্যাণ্ডার্ড ম্যাগাজিন সাপোর্ট করে, ফলে ম্যাগাজিন ফুরিয়ে গেলে এম৪ বা স্কার এর ম্যাগাজিন দিয়ে কাজ চালাইতে পারবেন। দাম মাত্র ২লাখ ১৫ হাজার টাকা। এর রেঞ্জ ৩০০মিটার। এটি অনেক কম কাপাকাপি করে, ফলে এতে লাগানো আয়রন সাইট দিয়েই ভালভাবে গুলাগুলি করতে পারবেন।
এটি একদমই নতুন বিধায় শুধু মাত্র আমেরিকান সেনারাই এখন পর্যন্ত এটি ব্যাবহার করতে পেরেছে।
***********
এখন আপনারা চিন্তা করতে পারেন, রিফু এত রাইফেল চালাইল ক্যামনে? নেন, আমার রাইফেল চালানোর স্ক্রিনশট দিলাম, দেখেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:৫১