একজন প্রকৃত জনপ্রতিনিধি যিনি তার সাথে সব সময়ই সাধারন মানুষের ভালোবাসা থাকে। সাধারাণ মানুষের ভালোবাসা ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি শব্দটা বোধ করি বড়ই বেমানা। খুব কাছাকাছি সংসদ নির্বাচন। বলতে গেলে এক বছর। আমি বিশ্বাস করি দেশের মানুষ এখন খুব সচেতন, ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা এখন তাদের আছে আর এই মানুষ গুলো চাইলে দেশের পট পরিবর্তন মূহুর্তের ভেতরে সম্ভব।আমি আসলে এত বর্ণনায় যেতে চাই না। বর্তমান সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছে আমার একটা দারুন আরজি আছে আর এমন আরজি আমি করতেই পারি। দেশের একজন সচেতন নাগরীক হিসেবে আমার দায়িত্ব সঠিক হিসেবটা তুলে ধরা বা সঠিক মানুষকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কামনা করা।
সংসদ নির্বাচনের জন্য মাগুরা জেলা দুটি আসনে বিভক্ত যার একটা মাগুরা-১ (সদর এবং শ্রীপুর) আর অন্যটা মাগুরা-২ (শালিখা এবং মো:পুর) আমি যে আসনের বাসিন্দা বা যে আসনে আমি ভোটার সেটা মাগুরা-১ আর আমার জন্মও শ্রীপুর থানায়। জন্ম থেকে বেড়ে উঠতে উঠতে আমি আমার এই থানাটিকে বেস অবহেলিত দেখতে দেখতেই বড় হয়েছি।
অসংখ্য ঐতিহ্য ধারণ করা এই থানাটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে দির্ঘ বছর অবহেলায় পড়ে আছে। আর রাজনৈতিক কারন এ কারনেই বললাম যে এই আসন থেকে যিনি আওয়ামী লীগ থেকে কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি কখনোই একটা থানা বা আসনকে উন্নয়ন করতে হবে সে চিন্তা করেন নি। বলতে গেলে সাধারণ মানুষের সাথে যার কোন যোগাযোগই ছিলো না! অথচ এই ব্যক্তিই তিন তিনবার আমার আসন থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন! আর তার নির্বাচিত হওয়ার পেছনে তার প্রতি সাধারণ মানুষের এক বিন্দু ভালোবাসা ছিলো না বরং তাকে জেলার প্রতিটা মানুষ ঘৃনা করেছে।
সাধারণ মানুষ ভোট দিয়েছে নৌকায়! প্রতিক দেখে ভোট দিয়েছে ব্যক্তি বা নেতা দেখে নয়। আর যতবারই নির্বাচন এসেছে ততবারই সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ থেকে অন্য কাউকে কামনা করেছে যাকে নমিনেট করা হয়েছিলো তাকে নয়! শুধুমাত্র দল এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিক নৌকা কে ভালোবাসে মাগুরার মানুষ তাই বাধ্য হয়ে তাকেই ভোট দিতে হয়েছিলো। আমি যার কথা বলছি তিনি মরহুম জনাব এম এস আকবর এমপি!
আমি মূল কথায় আসতে চাই।১৯৭১ সালে পাকিস্থান বাহিনী বা পাকিস্থানের মস্তিস্ক বিকৃত মিলিটারিরা নিরিহ বাঙ্গালীর উপর হুট করেই হামলা করলো। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে জনাব গোলাম কাদের মিয়ার সুযোগ্য পুত্র জনাব মরহুম আকবর হোসেন মিয়া জন্ম গ্রহন করেন! যার জন্মের পরেই হয়তো লিখা হয়েছিলো ভবিষৎ মুক্তিযুদ্ধের সমরনায়কের ইতিহাস।
১৯৫১ সালে জনাব মরহুম আকবর হোসেন মিয়া রয়েল পাকিন্থান বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। তার আগে তিনি পুলিশ বাহিনীতে চাকুরি পেয়েছিলেন। পাকিস্থানীদের বৈষম্য তিনি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেন নি। ১৯৫৪ সালে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন।১৯৬৫ সালে যোগ দেন সক্রিয় রাজনীতিতে এবং শ্রীপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই সময়ে তিনি মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি শ্রীকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন যেখানে তিনি একটানা ২৪ বছর সাধারন মানুষের ভালোবাসায় চেয়ারম্যান পদে বহাল ছিলেন।
১৯৭১ সালে সেই বীর জনাব আকবর হোসেন মিয়ার বীরত্ব সমগ্র বাঙ্গালী জাতি জানে। ইতিহাস কথা বলে।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জনাব আকবর হোসেন মিয়া, আকবর কমান্ডার, আকবর বাহিনী, শ্রীপুর বাহিনী যে নামেই ডাকেন না কেন তিনি একজনই ছিলেন! সমরনায়ক জনাব আকবর হোসেন মিয়া। যার নেতৃত্বে হাজারো মুক্তিকামী মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো এবং যার সাহসী নেতৃত্বে মাগুরা জেলা শত্রুমুক্ত হয়।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ তাকে কতটুকু মুল্যায়ন করেছে সে প্রসঙ্গে কথা নাইবা বললাম।এই যে কিছু দিন আগে এই মহান বীরের বাড়িতে হামলা করলো ভাংচুর করলো তার বাড়ি গাড়ি এমন কি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছবি ও শেখ হাসিনার ছবিও ভেঙ্গে চুরমার করে দিলো! কারা করলো এসব! এই এলাকারই ক্ষমতালোভী কিছু দালাল শ্রেনীর আওয়ামী লীগ নামধারী জানোয়ার এবং তাদের সাথে ছিলো জামায়াত বি এন পির লোকজন! কি সম্মানাই না দেখালো দেখালো তাকে! প্রশাসন নিরব থাকলো ক্ষমতার অতল জলে। যে মানুষটা সারা জীবন আওয়ামী লীগকে কোলে পিঠে করে বাঁচিয়ে রেখেছিলো, যে মানুষটার ছায়াতলে শান্তিতে দিন কাটিয়েছে ঠিক সেই মহান বীরের বাড়িতে তারাই হামলা করলো ! শুধুমাত্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার লোভে! আর এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক! যে দেশে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারে সে দেশে তো এমনটি ঘটবেই!
আমার কথা বলার জায়গাটা আসলে এখানে নয়! আমি আসলে এসব কথা বলতে চাই না! এসব কথা বলে কোন লাভ নেই! যেখানে জানোয়ারদের রমরমা সেখানে এসব কথা বলে কখনো লাভ হয় না। তবু আশা করতে তো দোষ নেই। এলাকার একজন সাধারণ এবং সচেতন মানুষ হিসেবে আমার ভিষণ একটা দাবী আছে বর্তমান সরকারের মাননীয়া প্রধাণ মন্ত্রির কাছে। আমি বিশ্বাস করি মমতাময়ী প্রধাণ মন্ত্রি কখনো কাউকে নিরাশ করেন না বা কখনো করবেন না। আর তিনি যে জাতীর জনকের কন্যা!
মরহুম আকবর হোসেন মিয়া তার এক সন্তান কে রাজনীতির শালিন শিক্ষায় শিক্ষিত করে গেছেন।স্বাধীন বাংলাদেশ তাকে সে ভাবে মুল্যায়ন না করলেও তার কোন আফসোস ছিলো না। তিনি মাগুরার সমস্ত মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছিলেন তাতেই তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গেছেন। তবে তার ইচ্ছা ছিলো তার এক সন্তান জনাব কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি একজন সু-রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে আর সেই সাথে বাংলাদেশের একজন সংসদ প্রতিনীধি হিসেবে এলাকার মানুষের আজীবন সেবা দিয়ে যাবে। মরহুম আকবর হোসেন মিয়া দেখে গেছেন কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়া বঙ্গবন্ধু এবং তার আদর্শকে লালণ করে রাজনীতি করে এলাকার সমস্ত মানুষের ভালোবাসা আর্জন করেছেন! কিন্তু তিনি দেখে যেতে পারেন নি যে তার সন্তান একজন সংসদ সদস্য! আর এই আফসোস টি নিয়েই তিনি আমাদের মাঝ থেকে চিরো বিদায় নিয়েছেন! তাহলে তার মৃত্যুর পরও কি আমরা তার চাওয়া পুরণ করতে পারি না!
খুব বেসি দিন নেই সংসদ নির্বাচনের। মাগুরা-১ আসনে বর্তমানে যদি শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের ভালোবাসা পাওয়া কোন যোগ্য নেতা থাকে তাহলে প্রথমেই যে নামটা আসবে সেটা নিশ্চয় কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়া ছাড়া আর কেউ নয়! আমার বক্তব্যটা আসলে পরিস্কার। আমি সরাসরি আগামী সংসদ নির্বাচনে কুটি মিয়াকে কামনা করছি। আর এই চাওয়াটা শুধূ আমার নয়, আমি বিশ্বাস করি মাগুরা -১ এর ৯০ ভাগ মানুষের চাওয়া।আমার বিশ্বাসটা যদি কারো কাছে অবান্তর হয়ে থাকে তাহলে একটু জরিপ করে দেখতে পারেন!
অথচ গত ২০ বছর ধরে এই মানুষটাকে কোন ঠাসা করে রাখার জন্য এলাকার সামান্য কয়েকজন মানুষ যাদের কে বেঈমান বা দালাল বললে কখনোই আমার ভুল হবে না! তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। কারন তারা সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ছাড়াই নেতা হতে চায় বা অপক্ষমতা বা অপশক্তির বলে নেতা হতে চাই। আবার এই মানুষগুলোই যখন বিপদে পড়ে তখনই কুটি মিয়ার কাছে আশ্রয় নিতে দৌড়ে এসেছে। আর এই সব মানুষের শত অত্যাচার আনাচার সহ্য করেই কুটি মিয়া আওয়ামী লীগ এবং নৌকা প্রতীককে আগলে রেখেছেন। কখনো ভয় পাননি তিনি। গত বি এন পির সময় এলাকার তখাকথিত নেতা পালিয়ে গেলেও তিনি কিন্তু রাজপথ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। আর যারা তখন ভয়ে পালিয়ে গেছিলো আজ তারাই আওয়ামী লীগের নেতা হতে চায়। জোর করে, মানুষ মেরে, ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসতে চাই। সব থেকে দু:ক্ষজনক বিষয় আকবর হোসেন মিয়ার মত এত বড় একজন বীরের বাড়িতে হামলা করে তারা প্রমান করেছে তারা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধ বা সাধারণ মানুষকে ভালোবেসে রাজনীতি করে না! তারা শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্যই রাজনীতি করছে। শুধু তাই নয় বর্তমানে তারা বি এন পি জামাতের নেতা কর্মিদের নিয়ে রাজনীতি করছে এবং এই বি এন পি জামাতের কতিপয় নেতাদের সাথে নিয়েই বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন মিয়ার বাড়িতে নেক্কারজনক হামলা করে যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবিও রক্ষা পা্য়নি। আর এটাই হলো তাদের চরিত্র।আবার এরা্ই এখন জামাত বি এনপি কে সাথে নিয়ে যারা কুটি মিয়াকে ভালোবাসে তাদের উপর হুমকি ধামকি পুলিশি ঝামেলা করে যাচ্ছে। আর তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ ঠিকমত ঘরেও থাকতে পারছে না। এই মানুষ গুলো অপরাধ তারা কুটি মিয়াকে ভালোবাসে।
মাগুরার সমস্ত মানুষ কুটি মিয়াকে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে দেখার অপেক্ষায় আছে! আমার বিশ্বাস মমতাময়ী নেত্রী শেখ হাসিনা জনাব মরহুম আকবর হোসেন মিয়ার আত্বার শান্তি কামনার্থে, এই মহান বীরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার সন্তানকে এবারের সংসদ নির্বাচনে মনোণয়ন করবেন বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতিক দিয়ে। মমতাময়ী নেত্রীর প্রতি আমার বিনয় এবং অনুণয়, যদি কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়ার এলাকায় জনপ্রিয়তা বুঝতে চান তাহলে গোপনে জরিপ চালিয়ে দেখতে পারেন। আমি চ্যালেণ্জ করে বলতে পারি এলাকার ৯০ ভাগ মানুষ এবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়াকেই ভোট দিবে। আমি কোন ব্যক্তি পক্ষের হয়ে কথা বলছি না আমি একজন ভালো রাজনীতিবীদ এবং নৌকা প্রতীকের একমাত্র যোগ্য মানুষটির পক্ষে কথা বলছি। আর তিনি ব্যক্তি মানুষ নয় তিনি সামষ্টিগত মানুষের ভালোবাসা বা শ্রদ্ধার মানুষ। আর এই মানুষটিকেই আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য কামনা করছি।
আমি জানি বঙ্গবন্ধু কণ্যা কখনোই ভুল করবেন না। তিনি সঠিক এবং যোগ্য নেতাকেই মনোনয়ন দিবেন। আর সে হিসেবে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে জনাব কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটিকে মনোনয়ন দেয়া হবে সেই সুসংবাদ পাওয়ার বা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু..
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:১৮