সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ক্রিমি একটি বড় বাধা। ক্রিমির কারণে এলার্জি বা চুলকানি, মারাত্মক রক্তশূণ্যতা, পেট ব্যথা, দুর্বলতা, পেট ফাঁপা, বদমেজাজ, মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি রোধ হয় । শিশুরা যখন পায়খানার রাস্তায় আঙুল দিয়ে চুলকায়, তখন তাকে ক্রিমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত। ক্রিমি থাক বা না থাক, ২ বছরের পর থেকে শিশুদের প্রতি ছয়মাস পরপর ক্রিমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত। ক্রিমির ঔষধ এক বা দুই মাত্রা খাওয়ানোই যথেষ্ট, তবে প্রয়োজনে আরো কয়েক মাত্রা খাওয়ানো যেতে পারে।
আমাদের দেশের প্রায় সব মানুষই কোনো না কোনো সময় কৃমি (Worm, helminthiasis) রোগে ভুগে থাকেন। এসব ক্রিমির মধ্যে গোল কৃমি (Round worm, Ascaris lumbricoides) । এই গোল কৃমি একসময় চলতে চলতে ক্ষুদ্রান্ত হয়ে পিত্তনালিতে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে আক্রান্ত মানুষের পেটের উপড়ের অংশে তীব্র ব্যথা হয়। এর ফলে একসময় পিত্তনালির সরু হয়ে যাওয়া, ঘা হয়ে পুঁজ হয়ে যাওয়া, যকৃত এবং পিত্তথলিতে পুঁজ জমে যাওয়া সহ নানা জটিল পরিস্থিতির আবির্ভাব ঘটতে পারে। তবে কৃমিটি যদি জীবিত অবস্থায় শুধু পিত্তনালির মুখে প্রবেশ করা অবস্থায় চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হওয়া যায় তাহলে তা কেবল ওষুধ গ্রহনের মাধ্যমে পিত্তনালি থেকে বের করে দেয়া যায়।
এর পর যথারীতি রোগীকে কৃমিনাশক ওষুধ খাইয়ে এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচানো সম্ভব। তবে ওষুধে কাজ না হলে ERCP করেও ক্রিমিটি বের করে নিয়ে আসা যায়। কৃমিটি যদি পিত্তনালিতে মারা গিয়ে থাকে বা আটকে যায় বা অন্য জটিল কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে তাহলে রোগীর অপারেশন (Choledochotomy) লাগতে পারে। অপারেশন করে ক্রিমি বা এর সৃষ্ট জটিলতা সরিয়ে দিলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়।
কিছু কৃমি আছে যা ক্ষত যুক্ত চামড়ার সংস্পর্শে গেলে চামড়া ভেদ করে ফুসফুস এবং পেটে সংক্রামণ করে। তাই খালি পায়ে মাটিতে হাঁটা ঠিক না। খাওয়ার আগে এবং প্রস্রাব-পায়খানার পর সাবান দিয়ে ভালমত হাত ধোয়া উচিত। ফুটপাতের ও হোটেলের খাবার (কাটা সালাদ,লেবু ইত্যাদি) বর্জন করা উচিত। নিয়মিত ৩ মাস পরপর পরিবারের সকলেএকই সময়ে ক্রিমিনাশক খেলে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।