১.
বহুদিন আগে, আওয়ামীলীগ নেতা ও সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার লেখা, পূর্ব পাকিস্তানের বিশ বছর নামে একটা বই পড়েছিলাম। বইটি পাকিস্তানের শেষ দিককার লেখা। ভদ্রলোক ওখানে আওয়ামীলীগের মহৎ উদ্দেশ্যগুলোর একটি উল্লেখ করেছেন অনেকটা এরকম: পাকিস্তানের সংহতি ও অবিভাজ্যতা রক্ষা করা। এবং এই সংহতি যারা বিনাশ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে জেহাদই আওয়ামীলীগের মূল মন্ত্র। আমি ভাবছিলাম, এই বই যদি ৭১ এর পরে প্রকাশিত হতো, তাহলে এই বক্তব্য কি এখানে ঠিক এভাবে স্থান পেত? আমি এরপর থেকে ৭১ এর আগে প্রকাশিত আওয়ামীলীগ নেতাদের লেখালেখিগুলো পড়ার আগ্রহ পাই। গতকাল মিডিয়ায় খবর আসল, স্বয়ং মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকথা প্রকাশিত হইছে। প্রথমে আনন্দিত হলাম, এই স্মৃতিকথা কাজ দেবে। কিন্তু পরক্ষণেই খটকা লাগল, এই স্মৃতিকথার ব্যাপারে এর আগে কখনোই কোথাও শুনি নাই। আর, এমন কোন স্মৃতিকথা স্বয়ং “বঙ্গবন্ধু”র দ্বারা লিখিত থাকলে এটির খবর বা এটি প্রকাশ করতে ‘বঙ্গবন্ধু’ পরিবার এত দীর্ঘ সময় নিল কেন, যেখানে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা তাঁর পরিবার এবং দলীয় বুদ্ধিজীবীমহল থেকে তাঁর প্রতিদিনকার প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্নগুলোর কথা শুনতে শুনতে আমাদের কানে অসুখ হয়ে যাচ্ছে? এটি কি এমন হতে পারে যে, ইতিহাস মিমাংসার বিষয়ে এখন আর স্রেফ হাইকোর্টে ভরসা করতে পারছেন না তাঁরা?
২.
দিপুমণির ভাষ্য অনুযায়ী রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযানের অংশ হিশেবেই মীর কাশেম গ্রেফতার হতে পারেন। কারণ, আমার জানা মতে ইনি জামাতের মডারেট অংশের নেতা, মা-আ-হানিফ যাদেরকে যুদ্ধাপরাধীদের জামাত ভেঙ্গে নতুন জামাত গড়ার ওয়াসওয়াসা দিচ্ছিলেন। আর একটা কারণ হতে পারে, ইনি এখন আর মডারেট থাকতে ইচ্ছুক নন। তবে মিডিয়ায় দেখলাম, মানবতা বিরোধী আইনজীবী উনার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুললেন।
৩
‘দি আনফিনিসড মেমোরিজ’: ২০১২। এক্ষণে এসে হঠাৎ শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি থেকে কথা বলে উঠলেন। হাইকোর্ট উচ্ছন্নে যাক, এখন স্বয়ং পিতার কণ্ঠে শুনো, হে বিভ্রান্ত পুত্র সম্প্রদায়।
৪
গণতন্ত্রে সুকি থাকি।
৫
আমার ‘যাচ্ছেতাই’ না হলে আমি কার ‘যাচ্ছেতাই’ ভাষা দিয়ে লিখব?
৬
প্রথম মুষল ধারে বৃষ্টি। মনে হয় অনেক বছর ধরে শহরে শুধুই রুক্ষ্ম, খড়খড়ে সূর্য সম্রাট হয়ে ছিল। শুধু গুম, হত্যা, বিএসএফ, গণতন্ত্র, গ্রামীণ ব্যাংক, নাসাকা এইসব। আজ বৃষ্টি এলো।
৭
বিচারপতি শামসুদ্দিনের অপসারণ চান সরকারি এমপিরা, এইটা কৌতুহলকর সংবাদ। হাইকোর্টে বহুদিন ধরে নাগরিকদের সাথে বেআদবী চলেছে। আদালত অবমাননার বেশীর ভাগ মামলাই এবং এই সুনির্দিষ্ট বেঞ্চের প্রায় সব মামলাই নাগরিকদের প্রতি অবমাননা, অহমিকা ও বেআদবীতে ভরপুর। বহু পাপ ঘটে গেছে হাইকোর্টে। কিন্তু, এর দায় কি কেবলই বিচারপতি শামসুদ্দিনের? আমি মনে করি, এই নাগরিক আবমাননাগুলোর অপরাধের ভাগ সংসদ, প্রধানমন্ত্রী, হাইকোর্ট কেউ এড়াতে পারবে না। নাগরিকের প্রতি অবমাননা ও বেআদবী সংসদ মুখ বুজে সয়েছে সব সময়, স্পিকারের প্রতি অবমাননায় সংসদের আত্মমর্যাদা জেগে উঠল। আমার কথা হলো, এইটাও মুখ বুজে সইতে হবে, যদি আপনারা অপরাপর বেআদবীগুলোর প্রতিবাদ ও প্রতিকার না করেন। মাননীয় ধর্মাবর্তার, সংসদ বা হাইকোর্ট।
৮
অবশেষে ইলিয়াস সত্যিই গুম হয়ে গেলেন। তিনি এখন ভূত হয়ে হাইকোর্টের বারান্দায় ফখরুল সাহেবদের জামিনের জন্য দৌঁড়ান।