হাসানের এক হাতে সিগারেট আরেক হাতে নীহার হাত।হাসানের মুখ দিয়ে ক্রমাগত ধোঁয়া বের হচ্ছে আর নীহার চোখ দিয়ে পানি।
হাসান হয়তো বুঝতে পারছে না,নীহা ঠিকি বুঝতে পারছে এই হাতের স্পর্শর কথা মনে করেই তাকে পার করে দিতে হবে জীবন।দ্বিতীয়বার এই হাতটা ধরার সুযোগ তার হবে না।
নীহা হাত দিয়ে হাসানের পাঞ্জাবীতে হাত বোলায়,মলিন পাঞ্জাবী জায়গায় জায়গায় ফেসে গেছে।নীহার খুব কষ্ট হয়,হাসান নির্বিকার।তার খুব ইচ্ছে করছে জাঁকজমক পূর্ণ সে দেশের ভিসা আর পাসপোর্ট টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে তার নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলিতে ছুড়ে দিতে।ইচ্ছে করলেই সব করা যায় না সেও পারছে না।
-হাসান।
-জী।
-তোমার কাছে জীবন মানে কি?
-কিছু না,Nothing.
-আমার কাছে জীবন মানে তোমার ফ্যাঁকাসে পাঞ্জাবী,তোমার গায়ের গন্ধ,তোমার মলিন মুখ আর কর্ণফুলী।
-নীহা তোমার জীবনের সংজ্ঞা পালটে যাবে খুব শীঘ্রই দেখো।
-তোমার পাল্টাবে না?
-নাহ।আমার জীবন কর্ণফুলীর মত বহমান না।আমার জীবনের সংজ্ঞা স্থির।
-হাসান আমার জীবনের সংজ্ঞাও পাল্টাবে না।
হাসানের মুখে রহস্যের হাসি।
************************
ছয় মাস পর নিউইয়র্কে ব্রক্লিন ব্রিজের ওপর নীহা দাঁড়িয়ে আছে তার এক হাতে বিয়ারের ক্যান আরেক হাতে এক ফর্সা যুবকের হাত।নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ইস্ট নদী।
সেই নদী থেকে ১২৮৪৪ কিলোমিটার দূরে আরেকটা নদী।নদীটির নাম কর্ণফুলী।সেই নদীর ওপর একটি ব্রিজ,ব্রিজে ফ্যাকাসে পাঞ্জাবী পরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার নাম হাসান,যার জীবনের সংজ্ঞা স্থীর।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:০৯