ঝিকমিক প্রতিচ্ছবি চোখের কোনায় আশ্রয় নেয়।অবাক নয়ন দেখে সবুজ ঘাসের ওপর সোনালী রঙের আস্তরন।বহুদূরের ঝাপসা পৃথিবী যেন আগ বাড়িয়ে সামনে আসতে আসতে হঠাৎ আবার ফিরে যায় তার পুরনো নিবাসে।নীল আকাশের গায়ে সাদা রঙের দুর্গ রোধ করে দিয়েছে নীলের সাথে পৃথিবীর সকল যোগাযোগ।দাবদাহের উত্তাপে কোমল স্নিগ্ধ চারিপাশ যেন ঘোলা কাচের ছায়া।
এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় ফাটা মাঠ চেয়ে আছে উপরে।সোনালী ধানের মাঠ আজ হাজারো ভগ্নাংশ।শুকনো বাতাস বয়ে যায় দখিন দিকের প্রতিনিধিত্ব করে।কেপে কেপে ওঠে বৃক্ষের পাতা।নেচে ওঠে নদী তীরের লম্বা ঘাসের ডগা।সমস্ত অস্বস্তি সরে গিয়ে তাকে দখল করে নেয় একটু স্বস্তির শীতল পরশ।
নদীর জলে সহস্র ক্ষুদ্র ঢেউ আছড়ে পড়ে একের পর এক;একের ওপর এক।চিকচিক করে ওঠে জলের ওপর রোদের প্রতিচ্ছবি।দিগন্তের ছায়া পড়েছে।ছলকে ছলকে সেই ছায়া বার বার এলোমেলো হয়।কুলকুল ধ্বনিতে আবিষ্ট নয়ন পাতা বার বার হুমড়ি খেয়ে পরে একে অপরের গায়ে।
মরা গাছটির শুকনো ডালটিতে বসে নিঃসঙ্গ দোয়েল ডেকে চলেছে অবিরাম।ঝলসে যাওয়া মাঠে গরু উবু হয়ে খুঁজে চলছে প্রাণময় সজীব ঘাস।কিন্তু ব্যর্থ হয়ে অবশেষে হাম্বা রবে জানান দিয়ে যায় তাদের সকরুন ব্যর্থতার গল্প।যেই খালটি মিশে গেছে নদীর সাথে;তারই কূলে কাদায় গা ডুবিয়ে পরম শান্তিতে, নিভৃতে চোখ বুজে আনমনা হয়ে আছে দুটি মোষ।কাদার বুক থেকে জেগে ওঠা কুজের ওপর বসে আছে শালিক।
আঃ কি সুন্দর! কি অপূর্ব!
চোখ মুদে ভাবি; "হে পল্লী।তুমি কত সুন্দর!"
গাড়ির হর্নের শব্দে ঘোর কেটে যায়।ব্যস্ত এই শহরে পল্লীর সৌন্দর্যের ,স্নিগ্ধতার আবেশটুক না পাই;তাকে কল্পনা করার সময় আর ফুসরতটুকুও আমাদের হয় না।
কৃত্রিমতায় ঠাসা রঙ্গিন শহর তো আসলে রঙ্গিন নয়;কেবলই ধুসর।