একটি শিশুর জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো তার পরিবার এবং শ্রেষ্ঠ
শিক্ষক হলেন শিশুর বাবা-মা। তারপরও প্রচরিত শিক্ষার দায়িত্ব যিনি
যারা পালন করেন তাদেরকেই আমরা শিক্ষক বলি। শিশুর সুপ্ত প্রতিভাকে বিকাশের জন্য আন্তরিকতার সাথে যিনি শিক্ষাদান করেন তিনিই হলেন শিশুর আদর্শ শিক্ষক।
একদা উতবাহ ইবন আবী সুফয়ান তাঁর সন্তানের শিক্ষককে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিলেন; " আমার ছেলের সংশোধনে যেন আপনার
সংশোধন হয়, কেননা তাদের চক্ষু আপনার চক্ষুর সাথে নিবন্ধ। আপনি যা পছন্দ করবেন তাই তাদের চোখে সুন্দর মনে হবে,আর আপনি যা অপছন্দ করবেন তাই তাদের দৃষ্টিতে অসুন্দর লাগবে।"
ইবন খালদুন বর্ণনা করেছেন যে, খলীফা হারুন-অর-রশীদ একদা তাঁর ছেলে আমীনের উস্তাদকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন; "আহমার! আমিরুল মু'মিনীন তোমার কাছে সোপর্দ করেছে তার আত্মার প্রতিকৃতি ও অন্তরের
ফসলকে-- কাজেই তার প্রতি তোমার হস্ত রেখো সম্প্রসারিত আর তার উপরে তোমার আনুগত্য করো অবশ্যম্ভাবী, আমিরুল মু'মিনীন তোমাকে যেভাবে তার জন্য নিযুক্ত করেছেন , তুমিও তার জন্য যেন সেরুপ হও।
তাকে কুরআন অধ্যায়ন করাও , হাদীসের জ্ঞান দাও, কবিতা বর্ণনা করে শোনাও , সূরা শিক্ষা দাও ,বাক্যের সময় ও সুযোগ এবং আরম্ভ করার নীতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করো , অযথা হাসতে দিওনা, তোমার যেন কোন সময় এমন না যায় ,যখন তুমি তাকে কোন না কোন বিশেষ উপকারী বস্তু শিক্ষাদানের সুযোগ না করে দাও-- তবে তুমি তাকে চিন্তায় ফেলে দিও না ,এতে তার অন্তর মুষড়ে যেতে পারে।তার দোষত্রুটি ক্ষমা করার ব্যপারে বেশী গুরুত্ব দিও না, এতে নিষ্কর্যতাই তার কাছে পছন্দণীয় হয়ে যাবে, তাকে যথাসম্ভব নম্রভাবে কাছে টেনে রেখে সংশোধন করে দিও।"
আল গাযালী,ইবন খালদুন ও ইবন মিসকাওয়াই এর মত বড় বড়
শিক্ষাবিদগণ শিশুদের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জোর দিয়েছেন। এজন্য যে, এসময় শিশুর মধ্যে অংকুরিত হয় চরিত্র এবং বর্ধিত হয় অনুভূতি ও
বুদ্ধিমত্তা।
আমরা যেন আমাদের শিশুকে শৈশবেই আদব ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া অপরিহার্য করি যাতে করে শিশু প্রশংসনীয় কর্ম ও সুন্দর চরিত্রে সজ্জিত হয়ে বড় হতে পারে। আজকের শিশুরাইতো আগামীদিনের ভবিষ্যত।