এ শহরের রাতগুলো ধীরে ধীরে বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে যেন,
বিকেল পাঁচটার মুক্তি আমার ভাগ্যে জোটে রাত দশটা এগারটায়,
পাবলিক বাসে ঠাসা এক আস্ত শহরের আধেক মানুষের এঁটো গন্ধ,
চতুর্থ বিবাহ বার্ষিকীর ব্ল্যাক ফরেস্টকে দুমড়ে মুচড়ে করে দেয় লণ্ডভণ্ড।
কারো কোন আক্ষেপ নেই, নেই প্রায়শ্চিত্ত, আমি কাঁদি বুক ভেঙে চিৎকার করে,
আমার ব্ল্যাক ফরেস্টে লুকিয়ে ছিল ওভারডিউটির একমুঠো মাইনে।
উফ এত বিষাক্ত লাগছে সব কিছু, চারদিকে ধোঁয়া আর ধোঁয়া,
কষ্টের ধোঁয়া, মুঠোফোনের ধোঁয়া, লাল ধোঁয়া, নীল ধোঁয়া,
ল্যাম্পপোস্টের ধোঁয়া, গাড়ির ধোঁয়া।
আমি তবুও কাঁদছি, বুক ভেঙে কান্না আসে আমার, আমার কান্না গুলো ধোঁয়া হয়ে যায়,
এক উটকো বুড়ো হেলে পড়েছে আমার উপর, ভিজিয়ে দিচ্ছে ঘামে, ঘাম গুলোও ধোঁয়া হয়ে যায়।
"এইযে বয়ঃজ্যাষ্ঠ, একটু ঝেড়ে কাশুন না, আপনাদের জন্য তো আঁটসাঁট পড়নেও বাঁধা",
"বন্ধা মাগীর অন্ধ পুত্র চন্দ্র দেখতে যাবে, পাবলিক বাসে ব্ল্যাক ফরেস্টে বিবাহবার্ষিকী খাবে"
বুড়োকে এক লাথি মেরে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে হল,
না, আজ আমার চতুর্থ বিবাহবার্ষিকী, আজ খুন করা যাবেনা।
আমার রাগ গুলো ধোঁয়া হয়ে গেল, এক অপরিচিত রঙের ধোঁয়া,
আমার কষ্টে চারপাশ যেন চাপা আনন্দে হাসছিল, আমায় ঘিড়ে ধড়েছিল বেগুনী রঙের ধোঁয়া।
আমার দৃষ্টি ক্ষীন হয়ে যায়, আমার চোখের সামনে শুধু জলরঙে আঁকা মায়ের সে ছবি,
আমি অবাক হই, কাগজের উপর থেকে রঙ গুলো ধোয়া হয়ে উড়ে যায়।
বাসের কন্ট্রাক্টর গলা ফাটায়, "মানিক মিয়া এভিনিউ", তার কথা গুলো ধোঁয়া হয়ে যায়,
আমি কাঁদি, বুক ভেঙে কান্না আসে আমার, কান্না গুলো ধোঁয়া হয়ে উড়ে যায়।
ঘুম ভেঙে যায় মুঠোফোনের রিমাইন্ডার শুনে, "চতুর্থ বিবাহবার্ষিকী আমার, ব্ল্যাক ফরেস্ট উইথ ক্যান্ডেল লাইট ডিনার",
আমি হাসি, বুক উজাড় করে হাসি, হাসি গুলো ধোঁয়া হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫