আমি বাঁচতে চাই, মামলা থেকে আমাকে কিভাবে বাঁচাবেন সেই ব্যবস্থা করেন বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাবুল শেখ। বছর দুয়েক আগে ভাগ্য বদলানোর আশায় স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি ও তার সহকর্মী মতিন।
ঢাবির সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষকদেও ফোন পেয়ে নারকেল (ডাব) পাড়তে এসে দিন দুপুরে চুরির দায়ে ধরা পড়েন দুই ভ্যানচালক। এরপর শিক্ষকদেও দুই পক্ষেও রেশা-রেশিতে জেল খেটে জরিমানা দিয়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে এখন পথে পথে ঘুরছেন এই দুই ভ্যানচালক।
ভ্যানচালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আবাসিক শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বাবুলকে দিয়ে নারকেল পাড়িয়ে আসছেন। ঘটনার দিন হাউজ টিউটরের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক তাদের আবাসিক এলাকার গাছ থেকে ডাব পাড়ার জন্য ভ্যানচালকদের খবর দেয়। ডাব পাড়ার সময় ঘটনাক্রমে প্রতিপক্ষ আবাসিক শিক্ষকরা এসে ভ্যানচালকদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ ভ্যান আটক করে এবং তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চালান দেয়।
একমাস ২ দিন জের খাটার পর ১৬ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে জামিনে বের হয়ে এসেছেন তারা। ভ্যান, আর্থিক সহযোগিতা এবং মামলা প্রত্যাহারের আশায় তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দুপক্ষের কাছেই।
কিন্তু দুপক্ষের নোংরা রাজনীতির কাছে এরা অসহায়, ব্যর্থ এদের সকল আকুতি।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে হল প্রভোস্ট প্রফেসর খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রভোস্ট কিংবা হল প্রশাসনকে না জানিয়ে ডাব পাড়া অন্যায়। যারা ধরা পড়েছে তাদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে যেসব শিক্ষকরা ঘটনার সাথে জড়িত তারা ভুল স্বীকার করলে ভ্যানচালকদের নির্দোষ করা যাবে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে শিক্ষক আল-আমিন নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, প্রভোস্ট কে না জানিয়ে তিনি অন্যায় করেছেনএটা ঠিক, তবে পদত্যাগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হয়রানী করতে বিষয়টা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। একজন প্রভোস্টের জেনেশুনে নিরীহ ভ্যানচালকদের এভাবে হয়রানী যুক্তিসঙ্গত নয়।
এদিকে এজহার দায়ের ও মামলা প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বাদী যদি ভ্যানচালকদের নির্দোষ হিসেবে লিখিত আবেদন দেয় তবে মামলা প্রত্যাহার করা হবে। না হলে ৬ মাস বা ২ বছরের জেল হতে পারে। ভ্যানের বিষয়ে তিনি বলেন, আদালত থেকে আদেশ দেওয়া হলে ভ্যান ফেরত দেওয়া হবে।