ক. সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী পাসের মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনে সেখানেও রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বহাল রাখে।
খ. আওয়ামী লিগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনকে সংশোধন করে তথ্যপ্রযুক্তি আইন (সংশোধিত) ২০১৩ পাস করে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন (সংশোধিত) ২০১৩ এর ধারা ৫৭ একটি কালো আইন।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে:
৫৭-এর ১ উপধারায় বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
অপরাধের শাস্তি:
৫৭ ধারার ২ নম্বর উপধারায় বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং ন্যূনতম সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’
বাংলাদেশে যতদিন পর্যন্ত সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে এবং যতদিন পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি আইন (সংশোধিত) ২০১৩ এর ধারা ৫৭ বহাল থাকবে, ততদিন পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতন কিংম্বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অযুহাতে নানান কিসিমের উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘটনা ঘটতে থাকবে। কারণ সংবিধানের এই দুইটি বিষয় এসব করার জন্য এদেশের সুবিধাবাদীদের জন্য এক ধরনের প্রণোদনা। বাংলাদেশের সংবিধান থেকে এই দুইটি বিষয় যতক্ষণ পর্যন্ত অপসারণ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এদেশে এ ধরনের ঘটনা কেবল ঘটতেই থাকবে।
....................................
১৮ মে ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২