somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিগপ্প: অসমাপ্ত

০১ লা অক্টোবর, ২০০৯ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছোট্ট একটা মাঠ। তার কোনায় একটা বেন্চি পাতা। নিজের চিন্তায় নিমগ্ন এক মধ্যবয়সী হেলান দিয়ে বসা। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে একদৃষ্টিতে দূরে গাছটার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি । তিনি আসলে গাছটাকে দেখছেন না ।

এখন থেকে অনেক বছর আগে তাদেরই পূর্বপুরুষদের হাত দিয়ে শুরু হয়েছিলো এই সমাজব্যবস্থা । এই সমাজে সুষম ভারসাম্যমূলক জনসংখ্যা ছিলো । সবার হাতেই কাজ ছিলো ।
টাকা পয়সার প্রচলন উঠে গিয়েছিলো । মানুষ তার গাড়ীতে অন্য মানুষদের লিফট দিতো । কৃষকের বাড়ীতে ইন্টারনেট দিতো টেকি লোকজন । কৃষকতার ফলানো সবটা শস্যই কেন্দ্রীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রনের হাতে তুলে দিতো। অপ্রয়োজনীয় বিলাস দ্রব্য যেটিয়ে দূর করা হয়েছিলো । মানব কল্যান বিহীন গবেষনাও বন্ধ হয়েছিলো । যেহেতু টাকার প্রচলন নাই -- ধনী গরীবের বৈষম্যও শেষ হয়ে গিয়েছিলো । মানুষকে হিপনোটাইজ করে সুন্দর অসুন্দরের ধারনা দূর করা হয়েছিলো।
সমাজ থেকে অপরাধের ধারনাটাই দূর হয়ে গিয়েছিলো। কারন
মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পর্যাপ্ত সময় ছিলো । যাদের অহংকার খুব বেশী তাদের সম্মানে সমাজ থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিলো । শুধু রিপ্রডাকশনের জন্যই সেক্স এমনটাই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো ।
মোটামুটি বলা যায় -- পৃথিবীতে স্বর্গের রুপ ।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন লোকটা ।
অথচ একটা প্রজন্ম না যেতেই পুরো ব্যবস্থাটাই কেনো বিগড়ে যেতে বসেছে সেটাই চিন্তা করছেন। শুরুটা সম্ভবত ফুল নিয়ে হয়েছিলো ।
কিশোর-যুবকরা তাদের সংগিনীদের ফুল দিতে চায় । সবাই সুখী হবার কারনে ফুল চাহিদা খুব বেড়ে গিয়েছিলো ।
ফুলচাষীটা আবার তাদের মতো করে ছোট আকারে টাকার প্রচলন শুরু করলো । কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন অবশ্য ব্যপারটা জানার আগেই অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিলো ।
ফুলচাষীদের হাতে তখন অনেক টাকা। জন্ম নিলো মাঝের দালাল শ্রেনী তারা ফুলচাষীদের চাটুকার ।
ফুলচাষীরা নিজেদের মহান ভেবে অহংকার করা শুরু করলো ।
তাদের ছাড়া প্রেম অচল ।
রিপ্রডাকশন বিষয়ে নীতির কোন তোয়াক্কাই করলো না তারা ।
কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন তাদের সামনে নতজানু হয়ে গেলো শুধু মাত্র নরম মনের মানুষেরা সেখানে ছিলো বলে ।

স্বর্গের উল্টো পিঠে নরক থাকে -- এটার মতোই যেসব উঠে গিয়েছিলো তা আজ আরো ভয়ানক রুপে ফেরত আসতে শুরু করেছে ।

তরুনদের সাথে এখন বুড়োরাও পিছিয়ে নেই । তারা মরার ভয়ে হেন কোন কাজ নেই যে করছে না । মরার আগে সমস্ত কিছুর অভিজ্ঞতা তাদের নিতেই হবে ।

~~~


মধ্যবয়স্ক লোকটি ভেবেই চলছেন -- আর সুন্দর কোন কিছু ধ্বংস দেখার অভিজ্ঞতায় নির্জীব বোধ করছেন কিছুটা --
চোখের কোন দিয়ে দেখলেন ১৬-১৭ বছরের কয়েকটা ছেলে-মেয়ে গল্প করতে করতে উঠে আসছে ।

~~~

"এই দেখ আরেকটা বসে আছে এখানে" উচ্ছল টাইপের একটা মেয়ে বলল।
বিরক্তির ছাপ পড়া চেহারার একটা ছেলে বলল - "ধুর! আমার সব বোরিং লাগছে"
নেতা গোছের যে ছিলো সে বলল "তাহলে যা - এইবার তোর পালা"

চকচকে একটা ছুরি হাতে ছেলেটা এগিয়ে যায় তার একঘেয়েমি দূর করার আশায় ।


~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
প্রাককথন:
প্রতিকাব্য: হাত খরচের জন্য জংলীফুল -- এই লেখাটার উৎস।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৯:৪৪
৪৫টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×