গত দেড় বছরে যেভাবে টার্গেট কিলিং হয়েছে বাংলাদেশে, রাজীব হায়দার থেকে শুরু করে শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যা চেষ্টা পর্যন্ত , হিসাব করলে দেখা যায়, প্রত্যেকটা খুনের দায়ভার নিয়েছে ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী আনসারুল্লা বাংলা টিম। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী দাপটের সাথে বলেছেন বাংলাদেশে কোন জঙ্গি তৎপরতা নেই, আমার প্রশ্ন হল, এত গুলো গুপ্ত হত্যা হবার পরও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কি করে বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে ঘুমায়? এই শান্তিতে ঘুমানোর বদৌলতে পর পর সকাল সকাল খুন হয়ে গেলেন, রঞ্জিত রোজারিও ৫ জুন, অনন্ত গোপাল গাঙ্গুলি ৭ জুন , নিরঞ্জন পাণ্ডে ১০ জুন ২০১৬। তারিখ গুলো খেয়েল করলে আপনারা সময়ের অন্তর গুলোও দেখতে পারবেন।
প্রশ্ন হল,গত দেড় বছর আগে যে প্রথম খুনটি হয়েছিল তখন থেকেই যদি প্রশাসন তৎপর থাকতেন তাহলে হয়ত এসকল নিরীহ মানুষগুলো খুন হতেন না। খুনের তদন্ত যখনই ঘটেছিলো, সকলেই ধর্মের নিন্দুক, বিধর্মী, নাস্তিক, মুরতাদ বলে এই খুন গুলকে প্রশ্রয় দিয়েছিল। ইসলাম ধর্ম অনুসারী সাধারণ জনগন থেকে শুরু করে সরকার পর্যন্ত এই খুন গুলকে প্রশ্রয় দিয়েছিল। ইসলাম ধর্ম অনুসারী সাধারণ জনগন খুনগুলোকে কেন প্রশ্রয় দিয়েছে সেটা সকলের কম বেশি জানা, বেশির ভাগ মানুষকে ধর্মের নামে উস্কে দিয়েছিল জামায়েত ইসলামী, হেফাজতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র শিবির। সাধারণ মানুষের মন বিষিয়ে দিয়েছিল এই ধর্ম রক্ষার নামে ধর্ম নিয়ে ব্যাবসা করা ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল। ধর্ম কে অস্র সরূপ ব্যাবহার করেছিল এরাই। এবং এখনো এই একই পন্থা অবলম্বন করে মানুষকে উস্কে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি করছে।
আর বর্তমান সরকার! বরাবরের মতই সমর্থন করেছে আসন্ন ভোটব্যাংক বাড়ানোর জন্য, নিজের দলের পক্ষে ভোট পাওয়ার জন্য এসকল ইসলামী দলের বিরুদ্ধে না গিয়ে এদের অন্যায় গুলকে প্রশ্রয় দিয়েছে। বলতে পারেন একটা নোংরা রাজনৈতিক চাল। কারন সংখ্যালঘু এবং মুক্তমনাদের সংখ্যা হাতে গুনে কয়জনই বা হবে? এদেরকে রক্ষা করলে বেশি ভোট দলের পক্ষে আসবে না বরং এদের কে প্রোটেকশন দিলে ইসলামী দল গুলোর হাতে যে সকল ভোট গুলো রয়েছে তা সকল হাতছাড়া হয়ে যাবে। আবার ক্ষমতায় আশা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।
এত গেল ভোট পাওয়ার রাজনীতি। কিন্তু যখন হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে আর দেশে বিদেশী খুন থেকে শুরু করে, আমেরিকান এমব্যাসির প্রটোকল অফিসার কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয় খুন হলেন বিদেশী দেশগুলোর চাপ বেড়ে গেল বাংলাদেশের উপর। প্রধানমন্ত্রী এই পর্যন্ত কোন রকম অভিযান তৎপরতার আদেশ দেন নি। কিন্তু যখন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মারা গেলেন, একই দিনে পর পর ৩ টা খুন হয়ে গেল, খুন গুলো হল রমজান মাসের শুরুতেই। দেশের পরিস্থিতি সজোরে নরে উঠল, ঠিক তখনই প্রধান মন্ত্রী সাঁড়াশি অভিযানের নামে ৭ দিনের এক লোক দেখানো জনগণের উপর আস্থা রাখতেই অভিযানের ঘোষণা দিলেন।
লক্ষ্য করে দেখুন, অভিযান কিন্তু অনেক আগেই হতে পারত, কি পারত না? তাহলে হল না কেন? এর পিছনে কি কারন ছিল? কি গভীর ষড়যন্ত্র ছিল? দেশের সাধারণ জনগণের জীবনের নিরাপত্তাই যদি সরকার প্রধান নিশ্চিত করতে না পারেন তাহলে ক্ষমতায় আছেন কেন? এই খুনিগুলোকে ধরতে দেড় বছর কেন লেগে যাচ্ছে? আচ্ছা যদি ধরেই নেই যে গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য সাধারণ জনগনদের জানানো প্রয়োজন মনে করেননি অথবা আপনি যদি ভয় পেয়ে থেকেন যে, খুনিরা পালিয়ে যাবে তাহলে পালানোর সমস্ত রাস্তা বন্ধ করেন নি কেন? আপনি প্রেস কনফারেন্সে বলেছেন, খুনিদের সকল তথ্য আপনার কাছে রয়েছে। যদি খুনিদের তথ্য আপনার কাছে থেকেই থাকে তাহলে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এদেরকে আনছেন না কেন? সমস্যা টা কোথায়? সাধারণ জনগন আজকে যে নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছেন, এই দায়ভার কি আপনার নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
জঙ্গিদের ‘টার্গেট কিলিং’ অভিযানে, মাদারীপুরে শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যাচেষ্টায় জনগণের হাতে নাতে ধরা পড়া ব্যাক্তির নাম- প্রিন্স ফাইজুল্লাহ ফাহিম, বয়স-১৮ বছর , বাড়ি-চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ফাহিমের এবছর এইচ এস সি পরীক্ষা দেবার কথা। কয়েকটা পরীক্ষাও দিয়েছিল। প্রতিবেশি ও শিক্ষকদের কথায় ফাহিমকে সব সময় চুপচাপ থাকা, নামাজ কালাম করা এক তরুণই মনে হতো। এই জঙ্গি হামলা করার জন্য ফাহিম ঘর ছেড়ে চলে যায়। পরিবার মনে করে ফাহিম নিখোঁজ হয় ১১ জুন। ফাহিমের বাবা ফাহিমের নিখোঁজের একটা জি ডিও করে ঢাকার উত্তরার দক্ষিণ খান থানায়। এর থেকে বোঝা যায় ফাহিম এর পরিবার ঢাকায় থাকতো। নিখোঁজের পর ফাহিম তার বাবাকে, ‘বিদেশে চলে গেলাম, এছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে।’ বলে একটা এস এম এস পাঠায়। উল্লেখ যোগ্য বিষয় হল, ফাহিমের বাবা গার্মেন্টস কর্মকর্তা, মা কামরুন নাহার গৃহিণী। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান গুলো কেই এভাবে টার্গেট করছে জঙ্গি সংগঠন।
অপরদিকে, আনসারুল্লা বাংলা টিমের আর এক সদস্য সুমন হোসেন পাটোয়ারী গ্রেফতার হয়। সুমনের বাড়ি চাঁদপুরে কিন্তু বড় হয়েছে চট্টগ্রামের হালিশহরে। ঢাকার বাড্ডার সাঁতারকুল ও মোহাম্মদপুর এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল এই সুমন। আনসারুল্লাহর ‘সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ ও ‘বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে এই আস্তানা দুইটি ব্যাবহার করা হতো। এই সুমন/ সাকিব/ শিহাব এই নাম গুলো একেক সময় ব্যাবহার করত। খেয়াল করে দেখবেন জঙ্গি আস্তানা গুলো ঢাকার বেশ গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল জায়গায় করা হয়েছে। এরকম আরও অনেক অজানা জঙ্গি আস্তানাও রয়েছে হয়ত আপনার আসে পাশে। এই সুমন বাংলাদেশে যে জঙ্গি গোষ্ঠী আছে সেটাই প্রমাণ করেছে, সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বলা কথা, এই দেশে কোন জঙ্গি সংগঠন নেই, তা নাকচ করে দিয়েছে। সরকার ক্ষমতায় থেকে এরকম বিভ্রান্তি মুলক কথা ছড়াচ্ছেন এটাই আবার প্রমান হল। আবার, বিরোধী দলের নোংরা রাজনৈতিক চক্রান্ত গুলো একে একে সামনে আসলো। এসকল রাজনৈতিক দল ক্ষমতা দখলের জন্য একে অপরের দিকে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে নোংরা লড়াই করবে এটাই স্বাভাবিক। মাঝখান থেকে সাধারণ জনগনই হবে মুল টার্গেট।
জঙ্গি হামলার জন্য আনসারুল্লা বাংলা টিম, ছোট ছোট স্লিপার সেল গঠন করেছে, এই সকল হত্যাকাণ্ডের জন্য। খেয়াল করে দেখেবেন, তারা বলেছেই যে তারা এই মুহূর্তে বড় কোন অপারেশনে যাবে না। আরও হত্যাকাণ্ড হবার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড গুলোর জন্য টার্গেট কিলিং হবে সংখ্যালঘু এবং বুদ্ধিজীবী। গত দেড় বছরে দীপন ও টুটুলের উপর হামলার আগে শাহবাগে হত্যা করা হয় লেখক অভিজিৎ রায়কে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ছিলেন টুটুল ও দীপন উভয়ই। লেখালেখির জন্য হুমকির মুখে ছিলেন অভিজিৎ রায়। অভিজিৎ এর পর বেশ কয়েকজন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট কে হত্যা করে আনসারুল্লা বাংলা টিম এর এই ছোট ছোট স্লিপার সেলের সদস্যরা। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত হন বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষু, শিয়া ও আহমদিয়া মুসলিম। চট্টগ্রামে খুন হন পুলিশপত্নী মাহমুদা আক্তার মিতু। এখানে একটা বিষয় বেশ উল্লেখযোগ্য, প্রতিটা হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লা বাংলা টিম এর ওয়েবসাইট থেকে দায় স্বীকারের খবর আসলেও কিন্তু পুলিশ পত্নী হত্যা খবরে উল্টো শোক বার্তা প্রকাশ করেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম এর ওয়েবসাইট। আশ্চর্য জনক হলেও ঘটনাটি সত্য। কেন হঠাৎ করে এই সহানুভূতির উদয় হল এই রহস্য রহস্যই থেকে যাচ্ছে।
এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইএস কিংবা আল কায়দার নামে দায় স্বীকারের বার্তা ইন্টারনেটে এলেও তা উড়িয়ে দিয়ে সরকার সবসময় বলেছে, দেশীয় জঙ্গিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর নামে তা প্রকাশ করছে। বাংলাদেশে আই এস তৎপরতা নেই। তাহলে যুগান্তরে ৭ মে প্রকাশিত খবর , ‘‘রমজানেই বাংলাদেশে আই এস এর নেতা নিয়োগ’’ এই হেডলাইনের খবরটি, পাঠকগণ একটু পড়ে দেখবেন। স্পষ্ট ভাবে বলা আছে যে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক রিসার্চ গ্রুপ ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের (আইএসডব্লিউ) এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে এই খবর উঠে আসে, যে বাংলাদেশে রমজান মাসেই আই এস এর নেতা নিয়োগ করা হবে। সিঙ্গাপুরের ধরা পড়া জঙ্গি গুলোর কথা কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। তারা যে দেশে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে সেটাই কিন্তু তারাও স্বীকার করেছে। রমজান মাসেই হঠাৎ করে হত্যা সংখ্যা বেড়ে যায়। এগুলকে কি শুধুই হত্যা বলে এড়িয়ে যাবেন? একই দিনে ৩ খুন। পুলিশ পত্নী, সুনীল গমেজ, কর্নেল জননী। তারপর গুপ্ত হত্যা বেড়ে গেছে। ঘটনা গুলো এত পর পর হচ্ছে যে, খবর গুলকে বানোয়াট, গুজব বলে হেসে উড়য়ে দেয়া কোন ভাবেই উচিৎ হবে না। জনগন আপনাদেরকে আরও সাবধান হতে হবে।
এই গুপ্ত হত্যা গুলোর কায়দা গুলো যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, কিভাবে খুন করতে হবে তার প্রশিক্ষণ এর ব্যাবস্থা করে এই আনসারুল্লা বাংলা টিম। শরীরের কোন অংশে কোপটা দিলেই নির্ঘাত মৃত্যু হবে, কিভাবে কায়দায় করে কোপ দিলে শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাবে, বুকের কোথায় কোপ দিলে কিভাবে কোপ দিলে সাথে সাথে মৃত্যু নিশ্চিত হবে, এগুলো খুব ভাল করে সকল সদস্যদের শেখানো হতো। কি ভয়াবহ! শিশির কে খুনের চেষ্টার পর মসজিদেই চাপাতি ধোয়া হয়। আমার প্রশ্ন, মসজিদের কেউ কি দেখেনি রক্ত মাখা চাপাতি ধুইতে? এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য? আপনারাই বলুন?
এক ই দিনে দুই জায়গায় খুনের পরিকল্পনা করে এই জঙ্গি সংগঠন। সুমনের দলের সমন্বয়কারী ছিল শরীফ। দীপনকে হত্যাকারী দলের সমন্বয়ক ছিল সেলিম। এরা দু জনেই আনসাররুল্লাহ বাংলা টিমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে। তার কয়েক মাস আগে তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যার পরিকল্পনায় এই শরীফ, সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে। দিনে দিনে এই স্লিপার সেল তৎপর হয়ে উঠছে। জঙ্গি গোষ্ঠী এই আনসারুল্লা বাংলা টিম এর পড়ে বড় বড় জগি অভিযান চালাবে বলেও সুমন এর কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা এখন অত্যন্ত ভয়বহ হয়ে উঠছে। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তাই নেই।
দেশের সাধারণ জনগণের কাছে অনুরোধ করি, আপনার পরিবারের সন্তানদের প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখুন। কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন দেয়ার আগে ১০০ বার ভাবুন। জঙ্গি দমন পরিবার থেকেই শুরু হওয়া দরকার। এই ফাহিম এর কথাই ধরুন, ফাহিম মেধামি ছাত্র। পড়াশোনাতেও ভাল। এস এস সি তে ভাল ফলও করেছে। শিক্ষকরা বলেছিল সে মাথা নিচু করেই কথা বলতো, চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতো না। নামাজী ছিল ধর্ম নিয়ে অনেক গুরু গম্ভীর ধারনা পোষণ করত। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন, একটা বয়সের ছেলে/ মেয়ে এদেরকেই টার্গেট করে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো নিম্ন বিত্ত/মধ্যবিত্ত/ উচ্চ বিত্ত পরিবার থেকে সন্তানগুলো কে কেড়ে নিচ্ছে। আপনারাই বলুন আপনার ভাই, আপনার বোন, আপনার সন্তান, যদি এরকম মানুষ খুন করা জঙ্গি হয়ে দেশের এত বড় ক্ষতি সাধন করত, আপনার কেমন লাগত? দেশের নাগরিক হিসেবে, আপনাদের কি এই দেশের প্রতি বা সমাজের প্রতি কোনই নৈতিক দায়িত্ব নেই?
সবার আগে আপনাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করুন। প্রয়োজনে ঘরে শিক্ষক ডেকে এনে পড়ান। দরকার হলে সামনে বসে থাকুন পড়াবার সময়। ছেলে / মেয়ের আচরণে কোন পরিবর্তন এসেছে কিনা সেটা লক্ষ্য করুন। রাত জেগে কম্পিউটার এ বসে আছে কিনা দেখুন। আপনি নিজে, সেই কম্পিউটার এ বসে দেখুন কি করছে আপনার সন্তান। কম্পিউটার এর ফোল্ডার গুলো দেখুন। ভাল করে নিরীক্ষণ করুন। উঠতি বয়সে স্মার্ট ফোন দেয়া বন্ধ করুন। বন্ধুদের মতো আচরণ করুন ছেলে মেয়েদের সাথে। তাদের সাথে মেশার চেষ্টা করুন। একটা কথা কখনোই ভুলে যাবেন না আপনারা বাবা মা। আপনারাই আপনাদের সন্তানদের জন্ম দিয়েছেন। এদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা দেয়া/ দেখা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। সময় হয় না, কাজের চাপ, সংসার, ধর্ম এগুলোর দোহাই দিয়ে কর্তব্য- দায়িত্ব এড়িয়ে যাবেন না।
যে ছেলে ফাহিম চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারত না, ভাল করে লক্ষ্য করুন তার চোখে কত ঘৃণা। যে ছেলের আজকে পরিবারের সাথে থাকার কথা ছিল, সে আজকে একজন উদীয়মান জঙ্গি সদস্য। এই জন্য দায়ী কে? নিজের বিবেক কে একবার প্রশ্ন করে দেখুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫১