somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান সরকারের ব্যার্থতা এবং আমার আক্ষেপ

০১ লা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে মানুষদের জীবনের মূল্য পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক নিচে। বাংলাদেশে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা আর বেঁচে থাকার অধিকার বর্তমান সরকার নিশ্চিত করতে অপারগ। এমন একটা দেশে বাস করছে মানুষ, যেখানে সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে, দায়িত্ব আর মূল্যবোধ হারিয়ে, ক্ষমতা ধরে বসে আছে। লোভ আর ক্ষমতার মিথ্যা লালসায় মনুষ্যত্ব বোধ হারিয়েছে বর্তমান সরকার। গনতন্ত্রের দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেটাতেও আপত্তি ছিল না, যদি বর্তমান সরকার তাদের দেশের প্রতি ,সমাজের প্রতি, নাগরিকদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে সরে না আসতেন।

একটি দেশের সরকার এর হাতে সর্বচ্চো ক্ষমতা থাকে। আমরাও সেটাই জানি। তাহলে, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কিসের এত ভয়? আর কিসের এত উদাসীনতা? তাহলে কি মেনে নেব জঙ্গি, সন্ত্রাসীদের ক্ষমতা আর নেটওয়ার্ক দেশের সরকার এর চেয়ে বেশী? দেশ তাহলে কি জঙ্গিবাদ পৃষ্ঠপোষকদের হাতে বন্ধি? আর বর্তমান সরকার তারই ছত্রছায়ায় নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে হাত মিলিয়েছেন?

সরকার এত কিছু করে, চাইলেই বিএনপি, জামাত, জাতিও পার্টি, গণজাগরণ মঞ্চর সমাবেশ , মিটিং- মিছিল ভণ্ড/ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ২০১৩ সনের হেফাজতের বিশাল সমাবেশ টা বন্ধ করতে পারলেন না কেন? সরকার এর অনুমতি ছাড়া তো কিছুই সম্ভব নয় তাহলে কি করে হেফাজতের মাওলানা মুফতি আর তাদের সাঙ্গ পাঙ্গরা অনুমতি পেল সমাবেশ করার? তাছাড়া যেখানে এই মাওলানা মুফতিরা ওয়াজ মাহফিল এ সমানে সংখ্যালঘুদের পৃথিবীর যত রকম জঘন্য অশ্রাব্য গালিগালাজ আছে , মাইক এ ডেরা পিটিয়ে বয়ানের সুরে সুরে দিতে থাকে তখন সরকার কেন চুপ করে থাকেন? যেভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মান হানির মামলা করতে পারেন বা যখন তখন গ্রেফতার করে বন্ধি করতে পারেন তাহলে কেন এদেরকেও পারেন না?

তাহলে জঙ্গিবাদ বা জঙ্গি গোষ্ঠীকে সরকার নিজের উঠোনের হাঁস -মুরগি, গরু- ছাগলের মতো পালছেন? নাকি ক্ষমতা ধরে রাখতে এদের কে ব্যবহার করছেন? আর বলির পাঠা হচ্ছেন এই নিরীহ মানুষ গুলো। একের পর এক খুন হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সরকার কিছুই করতে পারছে না এটা কি করে মানা যায়? শেষ পর্যন্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত অকপটে বলে দিলেন যে বাংলাদেশ সরকারের একার পক্ষে এই খুনি বা জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব নয় তাই আমেরিকা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

চোখের সামনে এটা বীরের জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা কিছুই করতে পারছি না। প্রথমে ভারত বাংলাদেশকে আস্তে আস্তে গ্রাস করে নিচ্ছে আর এখন আমেরিকা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাহলে নিজেদের স্বকীয়তা বলতে আর কি থাকলো? একটা স্বাধীন দেশ ,একটা বীরের জাতি, একটা আত্মনির্ভরশীল জাতি আস্তে আস্তে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। হয় ধর্মের নামে, হয় নোংরা রাজনৈতিক আক্রোশের নিচে, হয় সরকারের নির্লজ্জ লোভের দাবানলের নিচে, না হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সাম্প্রদায়িক চাপের মুখে।

৪২ বছর পর যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছিলো এবং বাংলার মাটিতে এর বিচার দেখেছি, বর্তমান সরকার এর প্রতি আস্থা আর বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল। ভেবেছি অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের যেমন বিচার হয়েছিল , যুদ্ধাপরাধের বিচার ,ঠিক সেইরকম নিজ দলের একেকজন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিতে বিশ্বাসী আমরা আবার রাজাকারমুক্ত, মুক্তিযুদ্ধের ঋণমুক্ত একটা সুন্দর দেশ পাওয়ার স্বপ্ন দেখব। বড় লোভ হয়েছিল সোনার বাংলাকে আবার গড়ার। কিন্তু এখন ঘাবড়ে যাচ্ছি। আমার সহযোদ্ধারাও নড়ে চড়ে উঠছে।

দয়া করে সোনার বাংলাকে আবার গড়ার এই স্বপ্ন ভেঙ্গে দেবেন না মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী। কঠোর হাতে দমন করুন এই জঙ্গিবাদ। আমাদের দেশটাকে বাঁচান। আমরা অনেক বিশ্বাস করে, আমাদের এই দেশটার গুরু দায়িত্ব ভার আপনার হাতে তুলে দিয়েছি। একটি ধর্মনিপপেক্ষ দেশ, একটি বীরের জাতি, আপনার মৃত বাবার স্বপ্নের দেশটি শেষ হয়ে যাচ্ছে । আপনি আর চুপ করে থাকবেন না। আপনি বলেছেন, দেশের বিএনপি, জামাত এই রকম গুপ্ত হত্যা চালাচ্ছে। যথেষ্ট প্রমান ছাড়া আপনি নিশ্চয়ই এমন কথা বলবেন না। যদি আপনি জেনেই থাকেন আর আপনার কাছে প্রমান থেকেই থাকে তাহলে কেন তাদের কে গ্রেফতারের আদেশ দিচ্ছেন না? কেন এদেরকে খোলা ছেড়ে রেখেছেন?

তাহলে কি ধরে নেব এটাও ক্ষমতা ধরে রাখার, ভোট হাতে রাখার একটা নোংরা রাজনৈতিক নিল নকশা? যেখানে আপনি আপনার ইচ্ছেমত গুটি সাজাবেন আর ইচ্ছেমত গুটি নিয়ে নাড়াচাড়া করবেন? মনে রাখবেন এই জাতিটা একটা বীরের জাতি। ১৯৭১ এ যেরকম ভাবে দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, ঠিক তেমনি আবারো এই বীরের জাতির যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরা এখন শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার।

সময় থাকতেই দয়া করে নিজের ক্ষমতার সঠিক প্রয়োগ করুন। আর একটা প্রাণ ও যেন চাপাতির কোপে শেষ না হয়ে যায়। আর কোন পরিবার যেন সন্তান/পিতা হারা না হয়। আপনি নিজেও তো একজন মা। আপনি কি বোঝেন না সন্তানহারা বাবা /মা /ছেলে/মেয়ের কষ্ট? সৃষ্টিকর্তা না করুন, এমন ও তো হতে পারে যদি আপনার সন্তানদের চাপাতির কোপ সহ গলাটা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া লাশটি দেখতে পান, তখন?

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×