টোকিও ক্লাবঃ রাত ১ টা ৪৩
ব্ল্যাকবার্ন, ইংল্যান্ড ।
ইনসোমনিয়ার সপ্তদশতম রাত্তিরে সাইক্লোন কিংবা বেদুঈন সাওয়ারীর বালুক ঝরে নিদ্রা যাপনের ব্যর্থ অভিপ্রায়। স্যাটারডে নাইট। ইটস টাইম টু ক্লাবিং টু-নাইট, লিটল স্কোপ টু গেট রিড ফ্রম সারাউন্ডিং পেইনস। অন্ধকারে বৃশ্চিক লোম মেলে ঝাপটে রাখে নির্ঘুম পাতা। ক্লাব সম্মুখীন লাল নীল বাতি চোখের যন্ত্রনা, অজস্র শেলের মত বিদ্ধ। সাপ-খোপ, আর বিড়াল গর্তের আশ্রয়ে ইতমধ্যে জমজমাট আসরে ব্যাস্ত। রেপটিলিয়া শ্রেণীর বিষধর ব্ল্যাকপাইথন, ভাইপার , কোবরা, কোরাল, কারপেট পাইথন থেকে পয়জন ফ্রি মরেলিয়া ভিরিডিস। বিড়াল শ্রেনিতে শ্বেত বিড়াল, ব্ল্যাক আইড পোলিশ , ব্লু আইড রাশিয়ান , এফ্রিক্যান ওয়াইল্ড ক্যাট অগ্রগন্য। মিডল এরাব আর সাউদার্ন বিড়াল নগণ্য। ধর্মীয় গোঁড়ায় আচ্ছন্ন এই বিড়ালগোষ্ঠী গাঁয়ে আঁচরে ভীত। পশমি লোম ক্ষয়ের শঙ্কায় কাবু। শ্বেত বিড়ালে আজকাল অতৃপ্ত বিধায় এফ্রিকান ওয়াইল্ড ক্যাটে তুস্টি খুঁজে রেপটিলিয়ানরা। হা করে থাকা বিড়ালের শিকার নিয়ে আবার ভাইপার আর গোল্ডপাইথনের লড়াকু অবস্থান পাশাপাশি হায়েনার অদ্ভুত দৃষ্টিপাত।
-স্যার ইউর আইডি প্লিজ
-হাউ ডেয়ার ইউ টু আস্ক মি ফর আইডি। অ্যাম রেগুলার হেয়ার ইউ নোউ ফাকিং অ্যাসহোল।
-ইটস রোলস স্যার। উইদাউট আইডি উই কান্ট লেট ইউ গো।
-ফরগট ইউর রোলস ব্লাডি চিকস। হেয়ার দ্যাটস ইউর বুলশিট রেকোয়ারমেন্ট।
-ওহ, স্যরি স্যার, ইঊ ক্যান এন্টার ইন্সাইড নাউ।
Korpiklaani - Beer Beer
হাতে কালো স্টিকারের ছাপ প্রৌঢ় মেম্বার ইন্ট্রোডাকশন দেয়। ক্লাব মিউজিকের যাদু ধীরে ধীরে কাবু করছে অ্যালকোহলে ব্রেন সেল মজে যাওয়া নিরামিশ ক্রোকোডাইলকে। পাশে বসে থাকা সঙ্গিনী ল্যাটিন ক্যাট গার্লফ্রেন্ডের ভূমিকায় অবতীর্ণ, ক্ষণিক বাদের শয্যাসঙ্গিনী। আপস্টেয়ারের কোন এক স্টেরিও রুম শেষ আশ্রয় আর বিড়ালের চিৎকার করে অভিনয়। অর্ধমৃত লোলুপ বিড়াল নিজেকে সুস্থ প্রমাণিত করার নিমিত্তে তীব্র আর্তনাদ। ইট ডাসেন্ট ম্যাটার ফর ক্রোকোডাইলস। মাংশ খেয়ে তৃপ্ত, সর্প শ্রেণীর ন্যায় অহেতুক দন্দে আত্ম বিসর্জিত নয়, নীরবে ঠোঁটের নিচে রহস্য রেখে প্রস্থান নেয়।
ঘারের রগ ক্ষণে ক্ষণে প্রকম্পিত হচ্ছে। নগ্ন রাতে ভয়ানক অন্ধকারের শহরে অ্যানিম্যালিয়া নামক জগতের কিছু সদস্যের আনাগোনা শহর সেন্টারের উচ্ছাসিত কৃত্তিম আলোকে, নিজেদের অবচেতন পর্বটা আলোকিত করে নিতে মিথ্যা ভণিতার দ্বারস্থ হয়। চার্চের আলোকের চাকতি সদা উৎসাহ দানে অনবরত সার্কেল আকারে ঘুরতে থাকে, ডান থেকে বায়ে শত জীবনের দিশারী হয়ে। বার্তা বয়ে আনা আগন্তক হাস্যকর বেজায় এই শহরের অধবাসিদের কাছে যাদের আদিবাসী বলাও পঙ্কিলতায় যায় না।
দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে গ্রে আইড একটি বিড়াল তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর বারে বারে ফুঁসে উঠছে লোলুপ্ত বিকারগ্রস্থ ধ্বনিতে। বিগরে যাওয়া বিড়াল নিয়ে অতীব অস্বস্তিতে জনৈক উত্তরাধিকারিণী যার ঠোঁট কেঁপে উঠছে , চাপা শ্বাস বক্ষ ভেদ করে বেরিয়ে আসতে চায়। নাড়ীর উপরে বসানো রিংয়ে ভঙ্গিমায় আঙ্গুল ঠেকিয়ে উত্তেজনার সঞ্চারন ঘটাতে ব্যাস্ত। মেটাল আর উন্মাদ বিড়াল-সর্প নৃত্যে ডান্স ফ্লোর উত্তাল। সাইড ক্যাটালগে স্থান পায় কামুক নব্য যৌবন প্রাপ্ত অস্থির ভাবনাধারী যুগল যাদের ওষ্ঠ্য একে অপরকে হারাতে চায় না। পাপ, অনুতাপ, অনুশোচনা, নরক, যমদূত, বিভীষিকা এদের এখনো স্পর্শ করেনি, স্পর্শ করলেও টিকতে পারেনি। এতক্ষনে পা বেঁয়ে উত্তরাধিকারিণীর বিড়ালের কাছাকাছি পৌঁছেছে একটি স্করপিওন। চমকে উঠে গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেও বস্তত বেহায়া স্করপিয়ন সামনে আগাতে থাকে। একসময় গোঙ্গানো আর্তনাদ ভেসে আসে, তারপর......
-ইউ লাইক টু টেক মি হোম? ইফ ইউ বাই সাম ড্রিঙ্কস ফর মি, দেন অ্যাম অ্যাগ্রি। ইউ লাইক দ্যাট?
- আই লাইক টু কিক ইউর অ্যাজ। গো ফার এন্ড সার্চ ফর এনি ব্লাডি বাস্টার্ড। আই ওয়ান্ট টু গেট রিড অফ।
-ফাক অব! হোয়াই ইউ আর সাউটিং? ইউ সিক গাই , হা হা হা ।
-ইউ লাইক টু গট অ্যা স্ল্যাপ? গো এওয়ে ফাকড চিকি। গো ফার রাইট নাঊ।
বিড়ালের উত্তরাধিকারিণী এবার হকচকিয়ে দূরে কেটে পরে, ঝাপসা আলোয় স্মোকিং কর্নারে কোনায় এক গোখরা পেয়ে কাঁকড়া তাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে পরে। বিড়ালের মুখের হর্ষক ওষ্ঠো জোড়া ক্রমশ দূরে সরে যায়। ডান্সফ্লোরে তরুণীর ঊরুতে পিশাচের পদচারনা আর বক্ষজোড়ার মাঝখান দিয়ে তিক্ত জলস্রোত। সেই জলস্রোতে পাশবিক তৃষ্ণা নিবারনে ব্যাতিব্যাস্ত পয়সা উসুল করতে আসা যুদ্ধ ফেরত সিপাহীরা। “ব্রাভো ব্রাভো, আই বেট সিক্স হান্ড্রেড অন হার হর্নি “
আঁধার বাড়ে দ্বিগুণে, উন্মাদনার চরম পর্যায়ে বারম্যানের দ্রুততা বৃদ্ধি পায়। ড্রিঙ্কসের জন্য মাতালের কর্কশ চীৎকার, বীভৎষত সব সরীসৃপ পিচ্ছিল দেহ উলঙ্গ তারপর পারতপক্ষে হাজার বর্ষ পেছনে ফিরে যাওয়া সময়ের স্বাদ, কাম বোধের উন্মেষ । কর্ণ জুড়ে আবেশ দেয়া ক্লাব ফরম্যাট ডেড মেটাল, রেপটেলিয়া আর বিড়াল শ্রেনিকে উস্কে করেছে হিতাহিত শুন্য । হঠাৎ কেন যেন বিড়াল কদাকার আর কুচ্ছিত বলে আলড়োন দেখা যায়। সভ্যতার মুখোশধারী বিনিদ্র সমাজের অথর্ব শহরে রাত বাড়ছে, শহরের সাক্ষ্যের উপকরন বেড়ে চলেছে।
সুইজ ফ্লুইটের সূক্ষ রাগে স্তম্ভিত কর্ণযুগল। সংখ্যালঘু কীটদের দীর্ঘশ্বাস। থেতলে যাওয়া অবয়বে দস্যুনেতার অ্যালকোহলের গুমট গন্ধে আন্দোলিত হিংস্র হাসি। লেজারের একচ্ছত্র আলো এক চোখ থেকে অন্যতে মাদকতার জন্ম দেয়। ফঁনা তুলে দাঁড়ানো সর্পের মুখমুখি অলস গিরগিটি। সরু জিভ বেরিয়ে এসে ঘ্রান নিয়ে যায়।
এইতো সেই যৌবন প্রাপ্ত জুটির সেই তরুণীর আর্তনাদ শোনা যায়। আজ তাহলে ফার্স্ট নাইট এন্ড ফার্স্ট স্টেপ ফর হেল। মহুর্মুহ কিছু চিৎকার অতঃপর আবার স্তদ্ধতা। নিখোলা শ্বেত উদর দিপ্ত আর উষ্ণ লোভ দেখিয়ে বেড়ায়। বারো নম্বর হুইস্কি প্যাগ। ইনসোমনিয়ার সপ্তদশতম রাতের লাস্ট সেলেব্রেশন। নগ্ন মাতালের দল ভেদাভেদ বিহীন ফ্লোরে পড়ে আছে। সুখ হারিয়ে কৃত্তিম সুখের পেছনে মুন্ডপাত করা এই সকল নির্বোধ আত্মহন্তারক, ডানা মেলা ডাহুক পাখির পথ না নিয়ে শকুনের নখদর্পণে নিজেকে খুঁজে।
ভোর- ৫টা ০৩ ।
বাইরের আকাশে ভোরের আলো আসতে শুরু করেছে। মৃদু রশ্মির আভায় হেটে বাঁকিটা পথ চলতে হবে। আপন আলয়ে আপন ঠিকানা করে নিতে হবে। ভেন্টিলেটরের ফাঁকে কাচা রোদ আবার হাসবেই। অন্য রোদে এবার ক্লান্ত দুপুরের স্নান। রক্তচক্ষু জলাঞ্জলি দিয়ে হলুদে আভার সূর ধরতে হবে। বদলে যাবে সব, হ্যাঁ আঁচানক। নীরবে নিজের সত্তায় বিপ্লব। এখনি সময়, বেরিয়ে পরতে হবে। তুষারশুভ্র পথে পা বাড়ানোর এখনি যথার্থ সময়“ গো এহেড ম্যান! ইউ কুড, ইটস ইউর টার্ন। “
“Never give in. Never give in. Never, never, never, never – in nothing, great or small, large or petty – never give in, except to convictions of honor and good sense. Never yield to force. Never yield to the apparently overwhelming might of the enemy.”
– [ Winston Churchill ]"
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬ஜ۩۞۩ஜ▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
উৎসর্গ: আমার খুব প্রিয় একজন গল্প লেখক আরিশ ময়ূখ। ।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬ஜ۩۞۩ஜ▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬