ছবি: বইমেলা থেকে তোলা।
ছোটবেলা থেকে ওয়াজে শুনে আসছি- এটা করলে ১০ নেকি, ওটা করলে ১০০ নেকি, এই কাজ করলে ১০০০ নেকি, ওই দোয়া পড়লে নেকি লিখতে লিখতে ফেরেস্তারা ক্লান্ত হইয়া পড়ে। কিছু বই বাজারে কিনতে পাওয়া যায় (যেগুলির লেখক কোনো নো কোনো আলেম সাহেব) যেখানে সেকেন্ডে-মিনিটে লক্ষ-কোটি নেকি কামাই করবার আমল সম্পর্কে বর্ণনা থাকে।
প্রশ্ন হলো- প্রতি নেকির মূল্যমান কতো? এক নেকি দিয়ে কী কী সেবা বা দ্রব্য পেতে পারব?
আমরা যখন মুদ্রা কামাই করি তখন তার মূল্যমান সম্পর্কে জ্ঞাত হই। একশ টাকা কামানো আর একশ ডলার কামানো এক কথা নয়। এক ডলার দিয়ে আমি কী কী দ্রব্য বা সেবা পেতে পারি সে সম্পর্কে যদি নাই জানি তবে তা কামাই করার কোনো অর্থ থাকে না। যদি বলা হয় জিম্বাবুয়ে গেলে আপনার বেতন দেওয়া হবে ৫ লাখ টাকা (জিম্বাবুয়ের মুদ্রায়) তবে তাতে খুশি হবার কিছু নেই, কারণ জিম্বাবুয়ের টাকার মূল্যমান এতই নগণ্য যে, ৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগলও ক্রয় করতে পারবেন না।
কত নেকি কামাই করতে পারলে জান্নাতে যাওয়া যাবে? যদি অল্প কিছু নেকির জন্য জাহান্নামে যেতে হয় তবে নেকি কামানোই তো বৃথা হয়ে গেল। আর যদি জান্নাতে যাবার মতো নেকি কামাই হয়েই যায় তবে তো আর কষ্ট করে নেকি কামানোর কোনো দরকারই পড়ে না। আবার কোন কাজে কত নেকি কেটে গেল সেটার হিসাবও তো কেউ বলে না।
জান্নাতে গেলে তো যা ইচ্ছা তা পাওয়া যাবে, যেমন ফল খেতে ইচ্ছে হলে এমনিতেই ফল চলে আসবে, পাখির গোস্ত খেতে ইচ্ছে হলে তাও চলে আসবে, মদ খেতে ইচ্ছে হলে সাথে সাথেই সামনে চলে আসবে তাহলে একজন অল্প নেকি নিয়ে জান্নাতে গেল আর অন্যজন বেশি নেকি নিয়ে জান্নাতে গেল- এ দুজনের সুযোগ-সুবিধা তো একই হয়ে গেল। আবার আরেকজন যদি অনেক নেকি করেও দু-একটা গোনাহ করার জন্য জাহান্নামে চলে যায় তবে তো পুরাই লোকসান।
প্রশ্নগুলো কেবলই মাথায় জট বাধছে, উত্তরের আশায় পোস্ট করলাম। কেউ যেন আবার আমাকে নাস্তেক ফতোয়া দিয়েন না, যৌক্তিক উত্তর দিয়েন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯