আদম (আ.) যখন পৃথিবীতে আসলেন তখন মহান আল্লাহ তাঁকে পৃথিবীতে জীবনযাপনের জ্ঞান দান করেছিলেন। কীভাবে তিনি খাদ্য সংগ্রহ করে ক্ষুধা নিবারণ করবেন, কীভাবে বংশবৃদ্ধি করবেন, কীভাবে নবজাতকদেরকে বড় করে তুলবেন, শিক্ষা দিবেন, কীভাবে হিংস্র প্রাণীদের থেকে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখবেন ইত্যাদি বিষয়। এই পৃথিবীতে চলতে যা যা প্রয়োজন সবই তাঁকে শিক্ষা দেওয়া হলো। বাস্তব জীবনে যে যে সমস্যার সম্মুখিন তিনি হতে পারেন তার সবকিছুর সমাধান আল্লাহ তাঁকে শিক্ষা দিয়ে দিলেন। তাঁর জন্য এই শিক্ষাই ছিলো ধর্ম (দীন বা জীবনব্যবস্থা)। অর্থাৎ যথার্থ ধর্ম হলো বাস্তব জীবনের যাবতীয় সমস্যার বাস্তব সমাধান।
যুগের পরিবর্তন হয়েছে, মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, সমাজ হয়েছে, রাষ্ট্র হয়েছে তখন ধর্মের বিধানগুলোতেও পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু মূল ঐ একই। মানুষের সার্বিক জীবনযাপনের বাস্তব সমাধান। জীবনকে সুন্দর করবার মূল মন্ত্রই হলো ধর্ম। ধর্ম সমাজকে শান্তিময় করবে, নতুন নতুন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যাবতীয় সমস্যার সমাধান দেবে।
কিন্তু বর্তমানে ধর্মকে নির্জীব, মৃত, কাল্পনিক করে ফেলা হয়েছে। কেবল উপাসনা, প্রার্থনা, সোয়াব-গোনাহর মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ধর্ম এখন বাস্তব সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারছে না। এর কারণ হলো- ধর্মকে যখন থেকে স্বার্থোদ্ধারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে তখন থেকে ধর্ম তার আসল রূপ হারাতে হারাতে আজ সম্পূর্ণ কাল্পনিক রূপ নিয়ে শুধু মৃত্যু পরবর্তী জীবনের একটি ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। (অবস্থা এমন হয়েছে যে, একে জীবনব্যবস্থা না বলে মরণব্যবস্থা বলাই যথার্থ হয়)। এখন ধার্মিক মানুষগুলো বলছে- সমাজের যা হই হোক তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আমি উপাসনা-প্রার্থনা চালিয়ে যাব আর মৃত্যুর পর জান্নাতে যাব। এ দুনিয়া নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই।
কিন্তু আমার আহ্বান সত্যানুসন্ধী চিন্তাশীল বিবেকবান মানুষের প্রতি। আসুন আমরা ধর্মের প্রকৃত রূপটি ফিরিয়ে আনি। ধর্ম দ্বারা সমাজকে শান্তিময় করি, সমাজ শান্তিপূর্ণ করতে যা করা হবে, মানুষের শান্তির জন্য, কল্যাণের জন্য যা করা হবে তাই সওয়াবের কাজ, তাই ধর্ম।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৪