পৃথিবী নামের এই গ্রহে একটি মানুষ যদি কোনভাবে ভূমিষ্ঠ হয়ে যায় তবে তার বাঁচার অধিকার আছে-- যেমন বাঁচার অধিকার আছে আমার আপনার সবার। মানুষটি কোন জাতের, কোন ধর্মের, কোন বর্ণের, কোন দেশের, কোন সীমান্তের এসবকে ছাপিয়ে বড়কথা হলো-- যেহুতু সে এই 'পৃথিবীর মানুষ' তাই তাকে বাঁচতে দিতে হবে। মানুষের সুবিধার জন্য পৃথিবীকে বিভিন্ন অঞ্চলে নামকরণ করে তার সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্র সেই সীমানার মালিক হয়ে যদি তার সীমানায় বসবাসরত কাউকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় তবে সে পাশের রাষ্ট্রে গিয়ে বাঁচার জন্য আশ্রয় খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রই যদি আপন সীমানায় তাকে একটুখানি দাঁড়াতেও না দেয় তাহলে সে যাবে কোথায়?
আয়তনে ছোট্টখাট্টো দেশ বাংলাদেশ, যার পেটের ভেতর ১৮কোটি মানুষের বাস। এদের সবার সবধরনের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা, সন্ত্রাসবাদের দমন, দুর্নীতি দমন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা দেশটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও দেশটি আভ্যন্তরীণ সামাজিক রাজনৈতিক অনেক সমস্যায় জর্জরিত। এমন পরিস্থিতিতে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া, তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করা, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া আসলেই কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। তারচেয়ে বড় ব্যপার হলো তাদের জায়গা দিলে যদি তারা এদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠে, তখন? আর কত দিনের জন্যই বা আশ্রয় দিতে হবে তাও তো অনুমান করা যাচ্ছে না। তাই হয়তো বাংলাদেশ নিরব!
রাষ্ট্রের সকল ভয়-আশংকা আমলে নিয়েই বলছি, বাংলাদেশের সামর্থ্য আছে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার। সময় এসেছে এব্যপারে তৎপরতা হওয়ার। যেহুতু অবিবেচক অত্যাচারী মায়ানমার বাংলাদেশের বন্ধু প্রতিম তাই তাদের সরকারের সাথে কথাবলা এবং জাতিসংঘের সাথে কথাবলে এর সমস্ত খরচ আদায় করা এখন সময়ের দাবী। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল-- এটাই তো মানবতা। বাংলাদেশের বুঝি সেই ঋণশোধ করার সময় এসেছে-- রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে খানিকটা ঋণমুক্তির আনন্দ পেতে পারে প্রিয় বাংলাদেশ।
( ছবি, ইন্টারনেট থেকে নেয়া)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬