আমার শিক্ষক জীবন ছিলো বেশ গৌরবমন্ডিত! আমি প্রথম গৃহশিক্ষকতা করাই নোয়াখালী থাকাকালীন, ক্লাশ এইটে পড়ার সময়। আমার ছাত্রী ক্লাশ ওয়ানে পড়ে। প্রথমদিন পড়াতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি বর্ণমালা সব পারো?’ ছাত্রী ঘাড় নাড়লো! আমি মুগ্ধ হয়ে বললাম, লেখো তো দেখি! আমার ছাত্রী বললো, ‘কাগজ শেষ হইলে তুই-নি দিবি?’
আসলেই তো! কাগজ শেষ হলে আমি কিনে দিবো না তো, আমি লিখতে বলার কে! কাগজের তো মূল্য আছে, নাকি!
আমার প্রথম শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার পর, আমি দীর্ঘ তিন বছর নিজেকে জ্ঞান বিতরণের মহান কাজ থেকে বিরত রেখেছি। দ্বিতীয়ত শিক্ষকতা করাই, ঢাকায় যখন ইন্টার ভর্তি হয়। এবারে ছাত্র, ক্লাশ ফোরে পড়ে। আমি আর প্রথম দিন তাকে কিছু লিখতে বলার ঝামেলায় গেলাম না। হালকা আলাপ করে কাটালাম। দ্বিতীয়দিন তাকে বললাম, পড়াশুনার কি খবর? আমার ছাত্র বললো, ‘পড়ার কথা কবি না! পড়ার কথা কইলে, তোরে প্রথমে মারমু। মাইরা পরে বস্তায় ভইরা ফ্যানের সাথে ঝুলামু। ফ্যানের সুইচ দিলে ফ্যানও ঘুরবো, তুইও ঘুরবি!’
শুনে, ফ্যানে ঝুলানো ছাড়াই আমার মাথা ভনভন করে ঘুরতে লাগলো! সেদিনের পর, আজ পর্যন্ত বাচ্চাদের শিক্ষকতা করার সাহস পাইনি!
জাহিদ রাজ রনি
প্রথম প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, রস আলো, প্রথম আলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১০