এমনও হতে পারে সাহারা আমাকে পরিক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলো। তাই সে তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতেই সিগারেটের ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে বললো, 'আমি প্রায়সই গাঁজাও খাই। আগে বাবাও খেতাম, বর্তমানে জিনিশটা পাওয়া খুব রেয়ার!'
যেনো বাবা নামক নেশাদ্রব্য সহজলভ্য না হওয়ায় সাহারা ব্যাথিত! আমি 'ঝমঝম টি-স্টোর' এর দোকানদার জনাব মুরসালিনের দিকে তাকালাম। জনাব মুরসালিনের চোখে মোটা গ্লাসের চশমা। চশমার কারনে তাকে জ্ঞানী মনে হচ্ছে! তিনি চশমার উপর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ নাচালেন। ভঙ্গিটা স্পর্টতই এমন যে, 'কি মিঁয়া খইলা তো ধরা! এখন কি করবা!'
আমি বলে দিলাম, গাঁজা খেলেও আমার আপত্তি নেই! সাহারা অবাক হলোনা। মুখ টিপে হাসলো ঝমঝম টি-স্টোরের মালিক জনাব মুরসালিন; যেনো খেলাটা এতোক্ষনে ঠিক জমে উঠেছে! সাহারা এবার সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বললো, 'কিন্তু আপনি তো ভিন্ন টাইপ!'
এইটা ঠিক যে, আমি ভিন্ন টাইপ। আমার দৌড় বন্ধুদের আড্ডায় সমাজ রক্ষা করার জন্যে সিগারেটে দুই টান দেয়া পর্যন্ত। আমি সাহারাকে বললাম, 'কিন্তু আপনাকেই তো আমার চাই!' সাহারা আমার আবদার সম্পূর্ণ অগাহ্য করে 'উঠি!' বলে অলস্যের ভঙ্গিতে বেঞ্চ থেকে উঠে চলে গেলো!
আমি বসেই রইলাম। যে ধরা দিয়েই আছে, তাকে ধরবার বিশেষ তাড়া নেই! জনাব মুরসালিন খানিকটা হতাশ হলো বিষয়টায় সাহারার এইরুপ অনাগ্রহ দেখে। তাকে খানিকটা বিরক্তও মনে হচ্ছে। সার্কাসের টিকেট কেনার পর শো ক্যান্সেল শুনলে দর্শক যেমন হতাশা মাখা বিরক্ত হয়!
দোকানের বেঞ্চে ফেলে যাওয়া সাহারার সিগারেটে ফিল্টারের কাছাকাছি আগুন এখনো। আমি তুলে নিয়ে লম্বা টান দিলাম! জনাব মুরসালিন আমার দুঃখে সহানুভূতি সরূপ কিংবা আরেকটি সিগারেট আমার নিকট বিক্রয় করতে না পারার কারণে দীর্ঘশ্বাস ফেললো! দীর্ঘশ্বাস সাহারার লালচে চুলের চাইতেও দীর্ঘ! দীর্ঘশ্বাস অনেকটা সিগারেটের লম্বা টানের মতো।
...
ঝমঝম টি-স্টোরের জনাব মুরসালিন | জাহিদ রাজ রনি
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:১৩