আমার পকেটে আছে মোট তেইশ টাকা। অনুস্মিতা এর মাঝেই আবদার করে বসলো, চলো বেলুন ফুটাই! পকেটের সর্বশেষ তেইশ টাকা জলাঞ্জলি দিয়ে পাখি মারার পাইপগানে বেলুন ফুটানোর ব্যাপারটা আমার কাছে অনর্থক মনে হলে, আমি ক্ষীণ গলায় প্রস্তাব দিই- তার চেয়ে আমরা বরং দুইকাপ চা খাই!
সামনের স্বল্প দূরত্বের একটা চায়ের দোকান দেখিয়ে আমি বলি, এখানকার চা অসাধারণ! সত্যি বলতে পূর্বে ওই দোকানে আমি কখনোই চা খাইনি! অনুস্মিতা আমার প্রস্তাবে রাজি হলেও বেলুন না ফুটানোর একটা আক্ষেপের চাপ তার চেহারায় রয়ে যায়। আমি বলি,
- অনুস্মিতা নামের অর্থ কি জানো?
- জানি না! নিশ্চয়ই ভালো কিছু!
- 'অ' বর্গীয় নাম! অ দিয়েই যত সমস্যা!
- যেমন?
- অসুখ, অসভ্য, অমানুষ, অমানবিক, অনুস্মিতা!
এতে অনুস্মিতা আমার হাতে কিল মেরে খিলখিল করে হাসতে থাকে। আমিও হাসি! এই যে হাসিটা হাসি; এটা একটা নকল হাসি। অনুস্মিতা যদি কোনদিন ঘাড় ব্যাকা করে বলে, 'এই চোখের দিকে তাকাইয়া হাসো তো!' তাইলেই আমি ধরা খেয়ে যাই! পকেটে তেইশ টাকা নিয়ে মনখুলে হাসা যায়না।
তবে অনুস্মিতা 'খিল খিল' হাসিটা রূঢ় সত্য। এই হাসিটা শুনলে মনে হয় অনেক দূরের কোন মন্দিরের শাঁখার আওয়াজ! এইসব অনুস্মিতারে বলি না। বলি না নিজের দুরবস্থা বিবেচনায়। আমি এক নিগৃহীত অভিনয় করে অনুস্মিতারে বলি, 'হাসি না কাকের ডাক!' অনুস্মিতা এতে আহত হয়না। অনেক দূরের মন্দিরের শাঁখার আওয়াজ তুলতে তুলতে সে ভেঙ্গে পড়ে!
অ-বর্গীয় প্রেম | জাহিদ রাজ রনি
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪০