সময় বের করা একটা জটিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন নয় যে আমি কোনো বিরাট কাজ করি, তবু সময় পাই না। বেকার মানুষের কাজ বেশি থাকে, আমারও কাজ বেশি। অমুকের জন্য একটা টিউশনি খোঁজা, তমুকের জন্য ট্রেনের টিকিট কাটা, বড় আন্টির বাসায় ইন্টারনেট লাইনের সমস্যা ঠিক করা ইত্যাদি!
বড় আন্টির ইন্টারনেট লাইনে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই সমস্যা হয়। আমি গিয়েই যে তা ঠিক করে দিই তা-ও না; আমি গিয়ে বসি। বসে চা খাই। চা নিয়ে আসে তৃণা। তৃণা চায়ের কাপ দিয়ে বলে, ‘কর্ম উদ্ধার করেছেন?’
—‘করিনি, করব!’
—‘কী করবেন?’
—‘ইন্টারনেট সংযোগদাতার অফিসে ফোন দিতে হবে।’
—‘ফোনটা আপনাকেই কেন দিতে হয়?’
—‘বিষয়টা আমিও জানি না। আন্টি আমার ওপর ভরসা করেন, তাই...’
—‘আপনার ওপর ভরসা করার কিছু নেই!’
—‘তুমি ভরসা করো না?’
—‘না করি না, করে উঠতে পারি না ঠিক!’
—‘ওহ আচ্ছা’
বলে চা শেষ করি। তৃণা কাপ নিয়ে চলে যায়। তৃণা হলো বড় আন্টির আতাপাতা ধরনের আত্মীয়া এবং আন্টির ডানহাত। তৃণা প্রচণ্ড বুদ্ধিমতী মেয়ে। এমন বুদ্ধিমতী একটা মেয়ে আমার মধ্যে ভরসা খুঁজতে যাবে কেন? এটাও একটা সমস্যা! বড় আন্টির নেট লাইনের সমস্যার সমাধান করে বিশাল সমস্যা বুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। বয়ে নিয়ে বেড়াই রোজ। আর বড় আন্টির নেট লাইনের সমস্যা দেখা দিলে, চা খেতে খেতে আমার সমস্যার সমাধান খুঁজে বেড়াই!
জাহিদ রাজ রনি
প্রথম প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০১৭, ছুটির দিনে, প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:২০