হুমায়ূন স্যারের প্রতি একটা ব্যক্তিগত অভিমান আছে আমার। ঠিক ব্যক্তিগত না, পাঠকগত অভিমান। প্রতিটা বইয়ের শেষে এই মানুষটা পাঠকদের সাথে একটা মাইন্ড গেম খেলতে পছন্দ করেন। এমন একটা জায়গায় এসে উপন্যাস শেষ করে দেন যে, পাঠকের উপরে পড়ে বিশাল দ্বায়িত্ব। শেষ পর্যন্ত কি হলো, এটা পাঠককে অনুমান করে নিতে হয়। সেই অনুমানে আবার নিজেরে সান্ত্বনা দেয়া যায় না। কাজেই লেখকের উপর মন খারাপ হয়! আর দুই পৃষ্ঠা লিখে বিষয়টা স্পষ্ট করলে কি হতো!
হুমায়ূন স্যার এই মজাটা বেশ উপভোগ করতেন। পাঠককেও তিনি কল্পনা প্রবণ করতে চাইতেন। বেশিরভাগ তরুণ লেখক, যারা কিনা হুমায়ূন স্যারের বই পড়ে বড় হয়েছে তাদের লেখায় হুমায়ূন স্যারের একটা প্রভাব থেকে যায় কারণ, পাঠক থাকা কালিন স্যার তাদের দিয়ে কল্পনা করাতেন। তবে আমার কাছে সবসময়ই এই প্রভাবটাকে পজেটিভ মনে হয়! এটাই বোধহয় লেখক- পাঠক ভালোবাসা!
হুমায়ূন স্যারের সব বই আমার পড়া হয়নি। মাঝে মাঝে শুকরিয়া আদায় করতে মন চায় যে, সব বই ভাগ্যিস পড়ে ফেলিনি! নাহয় তারপর এক হাহাকার লাগতো যে, ঠিক এইরকম বই আর কেই বা লিখবে! এই বেদনটা বেশি লাগে স্যারের মৃত্যদিবস এলে। এই আমরা পাঠক হয়েছি এক হুমায়ূন আহমেদ নামক এক জাদুকর ছিলেন বলে। হুমায়ূন আহমেদ পড়ি জিইয়ে জিইয়ে, একটা বই দুই তিনবার পড়ে আরেকটা হাতে নিই। বৃদ্ধ বয়সেও মোটা চশমা চোখে, পড়ার জন্যে হুমায়ূন স্যারের কিছু বই থাকুক!
জাহিদ রাজ রনি
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭