সম্প্রতি পেট্রোবাংলার একটি জরিপ দল সিলেটের হবিগঞ্জে একটি নতুন গ্যাস ক্ষেত্রের জরিপ শেষ করেছে সাফল্যের সাথে। সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই প্রথম বাংলাদেশ কোন বিদেশি কোম্পানির সাহায্য ছাড়াই জরিপ করতে পেরেছে। অভিনন্দন পেট্রোবাংলাকে। অনেক দুঃসংবাদের মধ্যে এটি একটি সুসংবাদ আমাদের জন্য। টিভিতে এই নিউজ দেখার পর গ্যাস সংক্রান্ত একটা পোস্ট দেব চিন্তা করছিলাম। বাংলাদেশে বর্তমানে গ্যাসের তীর্ব সংকট চলছে, শিল্প কারখানায় গ্যাস এর অভাবে উতপাদন অনেক কমে যাচ্ছে। সার কারখানার অনেক গুলো ইউনিট বন্ধ আছে, গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো মোট উতপাদন ক্ষমতার অর্ধেকের মত যোগান দিতে পারছে। সিএঞ্জি চালিত গাড়ি গুলোর সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। মোট কথা আমাদের চাহিদা আরো সম্প্রসারিত হচ্ছে, নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার না হলে মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদিনির চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। এই অবস্থায় সংবাদটি আশা জাগানিয়া নিঃসন্ধেহে। আর আমার এই পোস্ট হচ্ছে জরিপ নিয়ে। কয়েক বছর আগেও বি এনপি সরকারের আমলে একবার আমাদের গ্যাস রপ্তানির কথা বেশ জোরেসোরেই আলোচনা হচ্ছিল। ক্রেতা ছিল আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত। ভারতের সাথে বিএনপির কুটনৈতিক সর্ম্পক ততটা গভীর নয় যতটা আওয়ামীলিগের সাথে। কিন্তু বিএনপি সরকার ভারত কে গ্যাস দিতে উৎসাহী কেন? উত্তর হচ্ছে আমেরিকা প্রচন্ড চাপ সৃস্টি করেছিল। ক্রমেই পরাশক্তি হয়ে উঠা ভারতকে কিছু সুবিধা করে দিয়ে আমেরিকা তার সার্থ হাসিল করবে। বাংলাদেশ কি কিছু ঋন দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক, এডিবি গ্যাস বিক্রির জন্য শর্ত দিল, গ্যাস রপ্তানির ভালো দিক গুলো তুলে দরতে লাগল আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রীর কাছে। তখন প্রসংগিক ভাবে গ্যাসের মজুদ নিয়ে কথা উঠল। ৫০ বছরের জন্য গ্যাস মজুদ রেখে গ্যাস বিক্রি হবে। জরিপ কারী দলগুলো ছিল বিদেশি কোম্পানির তত্বাবধানে। এরা সে সময়ে ভুল জরিপ রির্পোট প্রদান করেছিল । ৫০ বছরের মজুদ থাকলে এখন এত গ্যাস কোথায় গেল ? জরিপ প্রসংগে নাইজেরিয়ার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। মজুদের ভুল তথ্য দিয়েছিল তথাকথিত বিদেশি কোম্পানি গুলো , এখন নাইজেরিয়া তেল শুন্য, নিজেরাই আমদানি করে চাহিদা মেটায়।ততকালীন প্রধান বিরোধীদল আওয়ামিলীগ গ্যাস ইস্যুতে তেমন আন্দোলন করেনি কারন আমাদের দেশের মত গরীব একটি দেশে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমেরিকার সন্তুষ্টি একটা বিষয় বটে। কিছু বামদল ও সুশিল সমাজের আন্দোলনের মুখে সেই দফা গ্যাস রপ্তানির উদ্যোগ বাতিল হয়ে যায়। বিশাল মজুদের কথা বলা হলেও আমাদের সাংগু গ্যাস ফিল্ড পরিত্যাক্ত হওয়ার পথে, নতুন কুপ খনন না করলে আর গ্যাস উত্তোলন করা যাবে না । গরীবের সুন্দরী বউ আসলেই বিপদের কারন , আমাদের মত একটি গরিব দেশের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ও হয়েছে সে রকম। ভুল জরিপের তথ্য দিয়ে কত তাড়া তাড়ি প্রাকৃতিক সম্পদ নিঃশেষ করা যায় তার সকল আয়োজন নিয়ে ব্যাস্ত পরাশক্তি আমেরিকা, ও তাদের মুনাফাখেকো কোম্পানি গুলো। বিশ্বের সবচেয়ে বড় খনিজ তেল সম্পদের মজুদ আমেরিকার কাছে তারপরো তারা নিজেদের খনিজ উত্তোলন না করে তার আমদানি করে চাহিদা মেটায়। তাই বাংলাদেশের উচিত হবে আর কোন বিদেশি কোম্পানি দিয়ে খনিজ সম্পদের জরিপ না করে নিজেরাই সামর্থের মধ্যে তা সম্পাদন করা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১০ রাত ৩:১৪