প্রায় দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে ই-কমার্স রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের অপরিসীম সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও এ খাতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয় নি। নিরবিচ্ছন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, ই-কমার্স সংক্রান্ত আইন, অনলাইনে নিরাপদ লেনদেনের ব্যবস্থা সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এ সেক্টর। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ঘোষণা প্রদান করেছে। সরকারের এ রূপকল্পের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে দেশীয় ই-কমার্স সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)
সম্প্রতি ই-ক্যাব চালু করেছে ই-কমার্স সার্ভিস সেন্টার। ইউনিকো সল্যুশন্স (http://www.unico-solutions.com) এ সেবা কেন্দ্র পরিচালনায় যাবতীয় কারিগরী সহায়তা প্রদান করছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকেউ বিনামূল্যে এ সেবাকেন্দ্রে যোগাযোগ করে ই-কমার্স ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট’ বিবিধ তথ্যসহ নানা ধরনের সেবা পাবেন।
ই-কমার্স সেবা কেন্দ্রের সেবা পরিধি-
ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
• যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে ০৯৬১৩২২২৩৩৩ ডায়াল করে সার্ভিস সেন্টার
সেবা পাওয়া যাবে| এক্ষেত্রে সাধারণ মোবাইল কল চার্জ প্রযোজ্য হবে|
• ই-কমার্স সার্ভিস সেন্টার এর ফোন সেবা প্রতি দিন সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬
টা পর্যন্ত খোলা থাকবে|
• চ্যাট সার্ভিস রাত ১১ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে|
• সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গাইডলাইন ও পরামর্শ সেবা পাওয়া যাবে|
• ম্যাচমেকিং ও বিশেষায়িত সেবার জন্য সেবা প্রার্থীর অনুমতি নিয়ে ই-ক্যাব
নিবন্ধিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এর নিকট রেফার করা হতে পারে, সেক্ষেত্রে পরামর্শক
প্রতিষ্ঠান চার্জ প্রযোজ্য করতে পারে|
বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প/এসএমই খাতের বিশাল অবদান রয়েছে।
দেশে প্রায় ৬ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে; যা এসএমই’র অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া প্রায় ৩০ লাখ মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের ৯০ শতাংশ শিল্প ইউনিটই এসএমই খাতের অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি শিল্প-কারখানায় নিয়োজিত মোট শ্রমিকের ৮৭ শতাংশ এবং মোট সংযোজিত পণ্যের ৩৩ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। গত ৫ বছরে এসএমই খাত সরকারের রাজস্ব ভান্ডারে ২ দশমিক ২ শতাংশের বেশি রাজস্ব প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে দেশে প্রায় ৮০ হাজার নারী-পুরুষ নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এসব ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোগে এবং ৬ দশমিক ৪ শতাংশ মাঝারি উদ্যোগের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। এসএমই’ – Source: Click This Link
এখন প্রশ্ন হচ্ছে-ই-কমার্সের সাথে এসএমই এর সম্পর্কটা কোথায়? সম্পর্কটা এখানে যে ই-কমার্স এবং এসএমই উভয়েই উভয়ের পরিপূরক হতে পারে। ই-কমার্স যেমন এসএমই খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তেমনি এসএমই খাতের মাধ্যমে ই-কমার্স সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে এবং অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
গ্রামে বা মফস্বল শহরের একজন এসএমই উদ্যোক্তার পক্ষে ঢাকায় দোকান খুলে ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভব কারণ এর জন্য দরকার অনেক টাকা। কিন্তু সেই উদ্যোক্তা চাইলে খুব সহজেই একটি ই-কমার্স সাইট খুলে সারা দেশের তার পণ্য বিক্রী করতে পারেন। এটা করার জন্যে তাকে বিশাল পূজি বিনিয়োগ করতে হবে না। ইতিমধ্যেই এ নিরব বিপ্লব শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশে বর্তমানে ৫০০ এর মতো ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে এবং ৩০০০ ফেসবুক পেইজ রয়েছে যারা মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য দেশের জনগণের কাছে বিক্রী করছেন। এসব উদ্যোক্তাদের সিংহভাগই তরুণ উদ্যোক্তা যারা অল্প পূজি নিয়ে ব্যবসা করছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ই-কমার্স খাতের সাথে যুক্ত হবার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-
– যথোপযুক্ত টেকনিকাল জ্ঞান এর অভাব
– ই-কমার্স বিষয়ক তথ্য প্রযুক্তি তথা আইটি সেটআপ বিষয়ে ওয়ান স্টপ সেবা প্রাপ্তির দুর্লভতা|
– ই-কমার্স সেবা শুরু করার বিষয়ে দরকারী সরকারী রেজিস্ট্রেশন (যেমন ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন) সংক্রান্ত তথ্যের সহজপ্রাপ্যতা না থাকা|
– ই-কমার্স সেবা সংক্রান্ত ডেলিভারি বা লজিস্টিক সেবা (যেমন কুরিয়ার সার্ভিস) সংক্রান্ত তথ্য ও সেবার অভাব|
– ই-কমার্স সেবা বিষয়ে যেকোনো অভিযোগ বা মতামত প্রদানের সমন্নিত ক্ষেত্র এর অভাব |
– ই-কমার্স সেবা / ব্যবসা অর্থায়ন বিষয়ে পরামর্শ না পাওয়া|
– ই-কমার্স সেবায় আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ (যেমন পেমেন্ট গেটওয়ে) বিষয়ে পরামর্শ না পাওয়া|
ই-কমার্স সেবা কেন্দ্রের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে এসব প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা।
২০১৫: ই-কমার্স বছর[/sb
দেশীয় ই-কমার্স সেক্টরের উন্নয়নকল্পে ই-ক্যাব ২০১৫ সালকে ই-কমার্স বছর হিসেবে ঘোষণা করেছে। ই-ক্যাব এই এক বছরে ই-কমার্সের উন্নয়নে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করবে। ই-ক্যাব বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ই-কমার্স খাতে নতুন উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ই-কমার্স খাতের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এ সেক্টরে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদের নিয়ে এক সাথে বসে কি কি সমস্যা রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে ধরা এবং তা নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে সহায়তা করা। ই-কমার্সের উন্নয়নে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৫ এর ৭ই এপ্রিল ই-কমার্স দিবস পালন করবে। এদিন ই-কমার্স সাইটগুলো বিভিন্ন অফার দেবে তাদের সাইট থেকে কেনার জন্যে, একই সাথে ই-কমার্সের উপরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে, টিভি চ্যানেলে টক-শো হবে এবং পত্র-পত্রিকায় ই-কমার্সের উপরে লেখা প্রকাশিত হবে। এছাড়াও অনুষ্ঠিত হবে ই-কমার্স মেলা যেখানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ও সেবা সমূহ সাধারণ জনগণের কাছে তুলে ধরবে।
ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র চালু এবং ২০১৫ সালকে ‘ই-কমার্স বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা উপলক্ষে মঙ্গলবার (ডিসেম্বর ৩০ ২০১৪) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট আখতারুজ্জামান মঞ্জু, ই-ক্যাবের সভাপতি রাজিব আহমেদ, ই-ক্যাব ডিরেক্টর (গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স) রেজওয়ানুল হক জামী এবং ই-ক্যাবের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সারাজীতা। অনুষ্ঠানে ই-কমার্স সেবাকেন্দ্রের উদ্দেশ্য ও সেবাসমূহ এবং ‘ই-কমার্স বর্ষ’ নিয়ে তাদের পরিকল্পনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
ই-ক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচশ’র মতো ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে। এছাড়া ফেসবুকে কমপক্ষে ৩০০০ পেজ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাসমূহ অনলাইনে বিক্রি করছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এরপরও বাংলাদেশে ই-কমার্স এখনো সেভাবে জনপ্রিয় নয়। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি বড় শহরেই ই-কমার্স এখনো সীমিত রয়েছে। দেশীয় ই-কমার্স খাতকে গতিশীল করতে হলে সবার আগে ই-কমার্সকে আমাদের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দিতে হবে। এ লক্ষ্য নিয়েই ই-ক্যাব ২০১৫ সালকে ‘ই-কমার্স বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। ই-কমার্স নিয়ে আমাদের বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। নতুন ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্যে আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মিলিতভাবে বেশ কয়েকটি কর্মশালার আয়োজন করতে যাচ্ছি। যেসব তরুণ-তরুণী ই-কমার্স ব্যবসায় আসতে চায় তাদের ই-কমার্স ব্যবসায়ের বিভিন্ন সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা এসব কর্মশালায় জানানো হবে।
আপনারা আরও জানেন, বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এ লক্ষে আমরা দেশীয় ই-কমার্স খাতের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মিলে পলিসি ডায়ালগ বা নীতি-সংলাপ করব। এসব সংলাপ থেকে সংগৃহীত তথ্য এবং পরামর্শ নিয়ে আমরা সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করব, যেন সরকার ই-কমার্স খাতের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করে। এছাড়া ই-কমার্স মেলা, সেমিনারসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন আমরা করব। এছাড়াও বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত নিয়ে গবেষণা এবং ই-কমার্স খাতের ওপর একটি ই-নিউজলেটার প্রকাশ করা হবে।
রেজওয়ানুল হক জামী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হলেও এ দেশের রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে আমাদের তরুণ-তরুণীরা। বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ৩০ ভাগ হচ্ছে ১০-২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণী। এরাই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ। এদের মধ্যে অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এবং নিজেদের ভাগ্য নিজেরা গড়ে তুলতে চায়। ই-কমার্স তাদেরকে সেই সুযোগ দিতে পারে। আমি খুবই আনন্দিত, ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে এবং যারা ই-কমার্স খাতের নতুন ব্যবসায় করতে চান, তারা এ সেবাকেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পাবেন। বাংলাদেশের জনসংখ্যার বড় অংশই মফস্বল শহর এবং গ্রামে বাস করেন। এসব জায়গায় অনেক উদ্যমী তরুণ-তরুণী রয়েছেন, যারা ই-কমার্স ব্যবসায় শুরু করতে চান, কিন্তু কী করবে তা জানেন না। ই-ক্যাবই বাংলাদেশের প্রথম ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, যারা প্রথমবারের মতো এ ধরনের সেবা কেন্দ্র খুলে সেবা দিতে যাচ্ছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকেউ এ সেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করে ই-কমার্স সম্পর্কে বিনামূল্যে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। ই-কমার্স সেবা কেন্দ্রে যেসব সেবা পাওয়া যাবে, তা হলো : নতুন উদ্যোক্তারা ই-কমার্স ব্যবসায় শুরুর সব ধরনের সহযোগিতা পাবেন, পেমেন্ট গেটওয়ে ও ডেলিভারি সার্ভিস সম্পর্কে জানতে পারবেন, যেকোনো অভিযোগ বা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারবেন এবং ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের জন্য সব ধরনের টেকনিক্যাল সহযোগিতা পাবেন।’ ই-কমার্স সেবাকেন্দ্রের কারিগরী সহযোগীতায় রয়েছে ইউনিকো সলিউশন।
ই-ক্যাব সেবা কেন্দ্রের যোগাযোগ নম্বর: ০৯৬১৩ ২২২ ৩৩৩
বিসিএসের সাবেক সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র খুবই সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। ই-কমার্স খাতের বিকাশের জন্য দরকার সাধারণ মানুষের কাছে একে জনপ্রিয় করে তোলা এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র এ ক্ষেত্রে খ্বুই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে এক দশকের বেশি সময় ধরে ই-কমার্স থাকলেও এ খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। এখনো বেশির ভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্যাশ-অন-ডেলিভারি করে থাকে। অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন করতে এখনো সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। পণ্য ডেলিভারি একটি বিশাল সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে দরকার সমন্বিত প্রচেষ্টা। ই-ক্যাব ২০১৫ সালকে ‘ই-কমার্স বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং বছরব্যাপী দেশীয় ই-কমার্স খাতে বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে সকলকে নিয়ে কাজ করে যাবে। আমি আশা করব, ২০১৬ সালে ই-কমার্স খাত যেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট আখতারুজ্জামান মঞ্জু বলেন, ‘ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে। সে বিচারে অদূর ভবিষ্যতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্সের ওপর জোর দেবে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দেরিতে ই-কমার্স শুরু হলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রয়েছে আমাদের তরুণ-তরুণীদের। তারা ই-কমার্স সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। যেসব ই-কমার্স কোম্পানি রয়েছে তাদের বেশিরভাগই তরুণ উদ্যোক্তা। সময় এসেছে এখন দেশের সর্বত্র ই-কমার্সকে ছড়িয়ে দেয়ার। আমাদের দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে, যারা ই-কমার্স খাতে আসতে চায়। ই-ক্যাবের ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র সেসব তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি বড় আর্শীবাদ হয়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সালকে ই-কমার্স বছর হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যা দেশের ই-কমার্স খাতের জন্য খুবই ইতিবাচক। এর ফলে দেশের ই-কমার্স খাত যেমন উপকৃত হবে, দেশের সাধারণ মানুষের কাছেও ই-কমার্স আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোনে কথা বলে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-কমার্স সার্ভিস সেন্টারের উদ্বোধন করেন মোস্তাফা জব্বার।
ই-ক্যাবের ২০১৫ সালকে ই-কমার্স বছর হিসেবে ঘোষণা বিভিন্ন মিডিয়ায় গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। বিবিসি বাংলা সার্ভিস লিখেছেঃ
“ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এই ঘোষণা দিয়েছে ।
সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচশ’র মতো ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে।
এছাড়া ফেসবুকে কমপক্ষে ৩০০০ পেজ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাসমূহ অনলাইনে বিক্রি করছেন।“
সুত্রঃ Click This Link
এছাড়া অন্যান্য মিডিয়ার লিংক এখানে দিচ্ছিঃ
প্রথম আলোঃ Click This Link
Dhaka Tribune: Click This Link
Bangla Mail24: Click This Link
Corporate: http://corporatenews.com.bd/?p=8949
ইত্তেফাকঃ Click This Link
সমকালঃ http://www.samakal.net/2014/12/31/108718
Priyo dot com: http://www.priyo.com/2014/12/30/126029.html
সব শেষে এটুকু বলতে চাই যে, আমরা অনেক কিছুই অনেক দেরীতে পেয়েছি বাংলাদেশে। ই-কমার্স এর জন্য এমনিতেই অনেক দেরী হয়েছে। এই ২০১৫ সালে এসে কেন মানুষকে অনলাইনে কেনাকাটার জন্য সচেতন করতে হবে বা অনুরোধ জানাতে হবে? কিন্তু আমাদের দেশের এটাই কঠিন বাস্তবতা। সামহোয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ এবং ব্লগাররা ই-কমার্স এর ব্যপারে সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আশা করি ই-কমার্স বছর পালনেও তারা আবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন দেশের স্বার্থে, জনগণের কল্যানে।
বিস্তারিত জানতে
Website: http://www.e-cab.net/
Blog: http://blog.e-cab.net/
Facebook page: http://www.facebook.com/eCommerceAB
Facebook group: http://www.facebook.com/groups/eeCAB/
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮