[জেনোফানেসের (৫৭০-- ? খ্রী.পূ.) জন্ম গ্রীসের আইয়োনিয়ায় হলেও জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন দক্ষিণ ইতালীতে। এলিয়ার পারমেনিদেসের গুরু ছিলেন এই জেনোফানেস। গ্রিক, ইথিওপীয় ও থ্রেসীয় সংস্কৃতির সংঘাত দেখে তার মধ্যে এমন এক বৈচারিক দৃষ্টিভঙ্গি জন্মেছিল যে তিনি কোনো কিছুকেই আর প্রশ্নহীন ভাবে মানতে পারেন নাই। এক রকম অজ্ঞেয়বাদীই হয়ে উঠেছিলেন। বলতেন, জড়জগৎ বা দেবতাদের নিয়ে আমরা যা-কিছুই বলি না কেন তা যে ঠিক, সেইটা কীভাবে বোঝা যাবে? হোমার ও হেসিওডের এনথ্রপোমরফিক ঈশ্বরের ধারণাকে বর্জন করে বলেছিলেন, ঘোড়া বা সিংহের যদি হাত থাকতো আর তারা যদি আঁকতে জানতো, তবে তাদের ঈশ্বরকে তারা নিজেদের আদলেই আঁকতো। জেনোফানেস পীথাগোরীয়দের ধর্মমত নিয়ে চটা ছিলেন। তাদের আত্মার শরীর-ভ্রমনের তত্ত্ব নিয়েও তার বিদ্রুপাত্মক কথা আছে। একবার নাকি পীথাগোরাস রাস্তায় এক কুকুরকে পেটাতে দেখে বলেছিলেন, তোমরা কুকুরটাকে মারছো কেন, আমার এক পরিচিত বন্ধুর আত্মাকে দেখতে পাচ্ছি কুকুরটার ভেতর! এই কথা জেনোফানেস মজা করে বলতেন। এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যেকার দীর্ঘস্থায়ী পিলোপনেসীয় যুদ্ধের আগে উভয়েই মিলিত ভাবে বাইরের শত্র“ পারসীকদের বিরুদ্ধে (রাজা দারায়ূস আর জারাক্সিস) যুদ্ধ করেছে। জেনোফানেসের কবিতার যুদ্ধস্মৃতি সেই যুদ্ধের।]
যুদ্ধস্মৃতি
শীতকালে হাত-পা ছড়ায়ে দিয়ে কুশনে
অগাধ আর উষ্ণ কুশন, কড়মড় করে বুটকলাই
চিবোতে চিবোতে আর আগুনের ধারে মিস্টি ওয়াইন খেতে খেতে...
ওইটাই উপযুক্ত সময় পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করার:
যেন অডিসিউসকে:
“কে আপনি জনাব, কোথা থেকে, কেন এসেছেন?”
--কিংবা ঢুলুঢুলু চোখে:
“আর তোমার পেছনে রয়ে গেছে কতগুলো বছর, হে বজ্র-হৃদয়?
--বা খুব প্রশান্তভাব নিয়ে:
“তুমি কি তবু পৌঁছাতে পেরেছিলে মানুষের ভূ-সম্পত্তির কাছাকাছি, যখন পারসীকরা এলো?”
থিওডোর ব্ল্যানচার্ডকৃত ইংরেজি অনুবাদ থেকে
উৎস: নর্টন এনথোলজি অফ ওয়ার্ল্ড পোয়েট্রি
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫০