ঝুড়ির তলা যদি ফুটো হয় তাহলে মূল্যবান জিনিস সেই ফুটো দিয়েই হরদম বেরিয়ে যায়। আপনি যত কষ্ট করে সেই বস্তু অর্জন করে আনেন না কেন।
সম্প্রতি দেশব্যাপি আয়কর মেলা শেষ হয়েছে। নিঃসন্দেহে আয়কর মেলার আয়োজন এনবিআর এর খুব ভাল একটি উদ্যোগ। এতে করদাতা যেমন বাড়ছে তেমনি কর দেয়ার প্রতি মানুষের সচতনতাও বাড়ছে।
উল্লেখ করতেই হয়, গত অর্থ বছরে এদেশে মাত্র ১২ লাখ লোক আয়কর প্রদান করেছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে এই সংখ্যা ৬০ লাখ হওয়া উচিত। এছাড়া জিডিপিতে ট্যাক্স থেকে আয় মাত্র ১২ শতাংশের সামান্য বেশী।
এইবার আসি দেশের আয়কর আদায়ের এই অবস্থা কেন? প্রথম কথা, আমাদের দেশে একবার যদি TIN করান তো বুঝবেন হ্যাসল কাকে বলে। সহজ সরল পথে ট্যাক্স দেয়া বড়ই কঠিন।
আর জানা কথা মানুষ ট্যাক্স দিতে চায় না। বড় বড় কোম্পানি গুলো ট্যাক্স অফিসারদের পালতে পারে। টপ থেকে বটম ট্যাক্স অফিসারদের কিনে ফেলা তাদের জন্য কোন ব্যাপার-ই না। তেমনি সমাজের বড় বড় ব্যবসায়ী এবং কোটিপতিরাও ট্যাক্স অফিসারদের বিরাট অংক দিয়ে লালন করেন। কারণ বেশীর ট্যাক্স অফিসার খাওয়ার জন্যই ঐ জায়গা গুলো তে বসে।
আর আমাদের দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য চাটার্ড একাউন্ট হোল্ডাররা তো আছেনই। বাংলাদেশের ট্যাক্স থেকে সরকারের আয় কমার পেছনে ইনাদের বৃহৎ অবদান আছে।
এইবার আসি চুনোপুটি ব্যবসায়ী ও স্বল্প আয়ের কর দাতাদের কথায়। ট্যাকনলজির এই যুগে কার কোথায় কত অর্থ বা সম্পত্তি আছে ট্যাক্স ইনকয়ারী কর্মকর্তাদের জন্য সেটা বের অনেক সহজ হয়ে পড়েছে। এছাড়া ব্যাংকিং সহ সবক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহারের কারণে এই কাজ আরো সহজ হয়ে গেছে ট্যাক্স অফিসারদের জন্য। চুনোপুটি ব্যবসায়ী ও স্বল্প আয়ের কর দাতাদের ট্যাক্স কর্মকর্তারা নানা সাপ-বিচ্ছুর ভয় দেখান। এর পর এই সব কর দাতারা বিরাট অংকের ঘুষ দিয়ে ট্যাক্স কমিয়ে আনে এবং ট্যাক্স ফাঁকি দেয়।
আমাদের দেশের ট্যাক্সের বিরাট অংশ পাওয়া যায় না করদাতাদের ফাঁকির কারণে। আরেকটি বিরাট অংক ঘুষ হিসেবে যায় ট্যাক্স কর্মকর্তাদের অফিসে। এরপরে সরকার ট্যাক্স থেকে রাজস্ব পায় সামান্যই। বিলিভ ইট অর নট যদি সরকার দেশে যত ট্যাক্সেবল ইনকাম আছে তার অর্ধেকও পেত ট্যাক্স থেকে রাজস্বের পরিমান বর্তমান রাজস্বের তিন থেকে চার গুণে গিয়ে দাঁড়াত।