ফিরছিলাম ক্যাম্পাস থেকে। কাঁটা পাহাড় রোড ধরে আসছিলাম। দুজন বাচ্চা একসাথে ভিক্ষা করছিল। আমি কাছাকাছি পৌঁছাতে দেখি একজন এগিয়ে আসছে।
বাচ্চাদের কাছে আমি দাগী পাবলিক কারণ আমি বরাবরেই ভিক্ষা দিই না। যারা চিনে তারা ভিক্ষা চাইতে আসে না আমার কাছে। কিন্তু এই বাচ্চাটার এগিয়ে আসার মতলব হুট করে টের পেলাম না। আমার কাছে এসেই বলল, “DJ গান শুনবেন?”
আমি উত্তর দেয়ার আগেই সে জামার ভেতর থেকে কোমল পানীয় এর ক্যান সাদৃশ্য একটা বস্তু বের করে সেটাতে DJ গান চালু করে দিল। ক্যান সাদৃশ্য MP3 প্লেয়ারটায় পুরাই অস্থির একটা গান বেজে উঠল। আমি পশ্রয়ের ভঙ্গিতে “এইগুলা করস?” বলে হাঁটা দিলাম।
আর তখনই মনে পড়ে গেল মাত্র চার দিন আগে পিলখানা এলাকায় ট্রেন এর ছাদ থেকে পড়ে মারা যাওয়া বাচ্চাটার কথা। রেললাইনের দুপাশের বস্তিগুলোর বাচ্চাগুলোর ফেবারিট কাজ ট্রেনে ঝোলা-ঝুলি করা এবং সাথে ভিক্ষে করা। এদের কেউবা আবার পেপার বিক্রি করে কেউবা টোকাই। এদের অধিকাংশই লম্বা প্যান্ট পরার বয়স হলে সিগারেট ফুঁকা আর জুতা/পোষ্টার লাগানোর গামের গন্ধ নিয়ে নেশা করা শুরু করে। আর তারচে একটু বড় হলেই গাঁজা আর হিরোইন টানা শুরু করে।
আমি চাই এই বাচ্চাটা সারাজীবন এই ভাবে ফুর্তি নিয়ে DJ গান শুনুক। ইচ্ছে মতন শুনে যাক। শুধু বেঁচে থাকুক এই সব নেশার জিনিস থেকে, বেঁচে থাকুক রেল দুর্ঘটনা থেকে।