ফেসবুক গ্রুপ “"ইচ্ছে দেয়াল”" যখন ফেসবুকে যাত্রা করেছিল তখন ফেসবুকে বাংলা বর্ণমালায় লেখার সুবিধে ছিল না কিংবা ইউনিকোডে লেখার পদ্ধতি সাধারনের কাছে আসেনি। ফেসবুক এর অধিকাংশ ব্যবহারকারী ছিল বিশেষত কিশোর আর তরুণ বয়সের ছেলে মেয়েরা। বয়স্কদের মাঝে ফেসবুক তখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। কিশোর ও তরুণরা ইংরেজী লেটারে বাংলা লিখত বটে তবে সে ভাষা ছিল বাংলা আর ইংরেজীর মিশেলে জগাখিচুড়ি এক ভাষা। সাথে শব্দের অতিমাত্রায় "“শর্টকাট”" এর ব্যবহারের ফলে ভাষা যাচ্ছিল আরো করুণ পরিণতির দিকে। বাংলা ভাষাকে এ ভয়ানক দশা থেকে মুক্তি দিতেই তখন বাংলা ভাষার সুস্থ চর্চার আন্দোলনকে সামনে নিয়ে যাত্রা করেছিল ফেসবুক গ্রুপ "“ইচ্ছে দেয়াল"”।
ফেসবুক এর কোন গ্রুপ থেকে "ইচ্ছে দেয়াল"” ই প্রথম সদস্যদের কবিতা, গল্প ও উপন্যাস নিয়ে “নীহারিকা” নামে “ই-বুক” প্রকাশ করেছিল। “"ইচ্ছে দেয়াল”" শুধুমাত্র ফেসবুক এর কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক বৃহৎ ও সক্রিয়তম গ্রুপ গুলোর একটিই নয়, অনেক কারণেই “"ইচ্ছে দেয়াল"” কে ফেসবুকে কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক গ্রুপগুলোর পথ প্রদর্শক বলা চলে। “"ইচ্ছে দেয়াল"” বাংলাদেশের ফেসবুক ইতিহাস এর প্রথম কয়েকটি কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক গ্রুপ গ্রুপ গুলোর একটি। "“ইচ্ছে দেয়াল"” এর প্রাথমিক সময়ে আরো বেশ কিছু ছোট আকারের কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক গ্রুপ ছিল। তবে ফেসবুক এর অব্যবহৃত গ্রুপ আর্কাইভ কালে তার নব্বুই শতাংশ গ্রুপই চুড়ান্তভাবে নিস্তেজ হয়ে গেছে। কিন্তু "“ইচ্ছে দেয়াল"” আরম্ভ থেকেই সগর্ভে সক্রিয়ভাবে টিকে আছে। “"ইচ্ছে দেয়াল"” শব্দদ্বয় সরাসরি কবিতা কিংবা সাহিত্য বিষয় কে ব্যাখ্যা করে না বটে তবুও ফেসবুকে “ইচ্ছে দেয়াল” এর পর “ইচ্ছে” শব্দটি দিয়েই এসেছে আরো বেশ কটি কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক সক্রিয় গ্রুপ। মূলত “"ইচ্ছে দেয়াল"” এর সাফল্য ফেসবুকে পুরো কবিতা ও সাহিত্য বিভাগকে এভাবেই প্রভাবিত করেছে। ফেসবুকের বেশীর ভাগ কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক গ্রুপ গুলোর ডেসক্রিপশন গুলোতে দেখা যায় “ডেসক্রিপশন” ও “নিয়মাবলী” রচনাতে সরাসরি “"ইচ্ছে দেয়াল"” কে অনুকরণ করা হয়েছে। এতেই বুঝা যায় “ইচ্ছা দেয়াল” কবিতা ও সাহিত্য বিষয়ক গ্রুপ গুলোকে কতখানি প্রভাবিত করেছে।
"“ইচ্ছে দেয়াল"” এর পেছনে যারা মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছেন তারা একটি লেখক দল। “"ইচ্ছে দেয়াল"” এর এডমিন মেহনাজ হক রকি, অঞ্জন খান, কফিল উদ্দিন, রত্নদীপা দে ঘোষ, তাহসিন উপা, পবন পাল, এলমুন নাহার পপি, নাদিয়া জামান, সাবরিনা সিরাজী তিতির, হাছানুল হায়দার ও রায়হান মাহমুদ সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় "“ইচ্ছে দেয়াল"” আজ এতটুকু পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছে। সাথে কিছু মানুষের অবদান স্বীকার করতেই হবে যারা “"ইচ্ছে দেয়াল"” এর আত্মার সাথে বিজড়িত হয়ে আছেন। স্বাতী চক্রবর্তী, সৈয়দ নাসির আহমদ, প্রদীপ দাশগুপ্ত, রাকিব শাকের, কণিকা তানোরা, সোহেল শাওন, রনি পারভেজ, জাফর সাদিক চৌধুরী, মুশফিক শিহাব, নাজমুল আনোয়ার রাফি, জলধারা মোহনা, মৃণাল কান্তি রয়, হীরন হিমাদ্রি, মহিউদ্দিন রাজন, পৌলমী দাশগুপ্ত, সালমা আক্তার, রিপু রে রিপু, রাহুল দেব অরু, রাজর্সি ঘোষ, শাহিদা শোভা, জিনাত ঝিনুক, মুক্ত মণি, শারমিন জাহান শাওন এ রকমই কিছু মানুষের নাম। সব শেষে একজন মানুষ এর কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতেই হয় তার নাম তাহসিন উপা। “ইচ্ছে দেয়াল” নামটি তারই দেয়া। মূলত প্রথমে "“ইচ্ছে দেয়াল"” গ্রুপটির নাম ছিল “বাংলা কবিতা, গল্প, উপন্যাস”। পরবর্তীতে সকলের উনুরোধে নামটি পরিবর্তন করা হয়। বইমেলাতে “ইচ্ছে দেয়াল” থেকে লিটল ম্যাগ “মেঘপত্র” এর দ্বিতীয় সংখ্যা প্রকাশ হতে যাচ্ছে। আমি আন্তরিক ভাবে এর সাফল্য কামনা করি।
গ্রুপ লিংকঃ https://www.facebook.com/groups/ichhe.deyal/