somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নায়াগ্রা ফলস এ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে একদিন

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের দিন রাতে অপুভাইয়ের সাথে লায়াগ্রা ফলস দেখে বাফেলো শহরে ওনার বাসায় চলে আসলাম। আধা ঘন্টা - পৌণে একঘন্টার ড্রাইভ । মনে মনে ঠিক করলাম পরের দিন আবার আসব -পানিতে নামতেই হবে । পানির গতির মোটামুটি একটা হিসাব কষে ফেললাম । পানির গতির হিসাবটা ছিল এমন : সেখানে সম্ভবত লেখাছিল ( অথবা অপু ভাই বলেছিল ) এখানে ৮০,০০০ কিউসেক পানি প্রবাহিত হয় । কিউসেক মানে কিউবিক ফুট পার সেকেন্ড( পূর্ণ প্রবাহের সময়)। মানে সেকেন্ডে ৮০,০০০ ঘনফুট পানি । আর পুরা ফলস এক মাইল বা ৫০০০ ফুটের মত চওড়া । তার মানে একফুট চওড়া স্হান দিয়ে ১৬ ঘনফুট পানি প্রবাহিত হয় । এখন এক ফুট চওড়া জায়গা দিয়ে ১৬ ঘনফুট পানি প্রবাহিত হলে পানির গতি কত ? এর উত্তর সোজা : পানি যদি একফুট গভীর হয়ে পড়ে তবে সেকেন্ডে ১৬ ফুট , আর সেকেন্ডে ৮ ফুট হবে যদি গভীরতা দুই ফুট হয় । চোখের দেখায় স্বচ্ছ পানির নীচের প্রায় দুইফুট গভীর মনে হয়েছিল । তাই সাহষ করি । কারণ আমার জন্ম স্হানের পাশে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীতে বন্যার সময় সেকেন্ডে ৬ ফুট স্রোত আন্টাজ করেছিলাম । বুঝতে পেরেছিলাম পানি নামা মত্রই টেনে নিয়ে যাবে না । আর ব্রাইডাল ফলস একটা দেশি খালের মত , রুমা জিরি টাইপ । বর্ষায় রুমাঝিড়ির স্রোত যেমন থাকে অনেকটা সেরকম স্রোত পেয়েছিলাম।

পার্কের এন্ট্রিতে পার হলে একটা জায়গা থেকে দেখলাম ছুোট লঞ্চ-এ করে নীল জামা গায়ে অনেক লোক একদম জলপ্রপাতের নীচে যাচ্ছে । সবার গায়েই নীল ! আবার আরেকটা লঞ্চ দেখলাম সবার গায়েই হলুদ । আসলে এগুলো সব রেইন কোট। টিকেট কেটে এসব লঞ্চে করে ফলস এর নীচে নিয়ে যায় । বিশাল পানির পতনে পুরো এলাকাটা কুয়াশায় ঢেকে যায় । বিন্দু বিন্দু জলে গায়ের জামা কাপড় সব ভিজে যায় । মাথা পিছু বিশ ডলার ভাড়া । রেইনকোট ফ্রী । আসলে ঠিক রেইনকোট না - একদম পাতলা প্লাষ্টিকের আবরণ ওয়ান টাইম ইউজ । আবার কানাডা সাইড থেকেও লঞ্চ ছাড়ে । দু দেশের লঞ্চের যাত্রীদের রেইনকোটের রং আলাদা । আমেরিকাম হলে নীল আর কানাডা হলুদ।আমার কাছে বিশ ডলার অনেক টাকা - কিন্তু এসুযোগ মিস করা যায় না । প্রথমে ভেবেছিলাম লঞ্চে উঠে পাণিতে লাফ দিব । এরপর স্রোতের সাথে ভেসে ভেসে একপাশ উঠে যাব । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাহষ হল না । পানিতে অসংখ ছোট ছোট বুদবুদ ছিল । সম্ভবত এসব জায়গায় লাফ দিলে আর বাচার আশা ছিল না । বুদবুদের কারণে পানি আপনার শরীরে স্বাভাবিক চাপ প্রয়োগ করবে না । তাই সেখানে ভেসে থাকা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না ।

যাই হোক লঞ্চটা ফলসের বেশ কাছে যায় , একদম নীচে যেতে পারে না । কাছে গেলেই উত্তাল পানিতে প্রচুর দুলতে থাকে । ফিরে এসে আবার পার্ক এরিয়া দিয়ে হেটে সামনে এগিয়ে চললাম । এর পর দেখা মিলবে একটা ব্রীজ - যেটা দিয়ে আমেরিকান ফলস পার হতে হয় । আমেরিকান ফলস মুল হর্স সু ফলস থেকে আলাদা হয়েছে একটা দ্বীপ দিয়ে । এর নাম গোট আইল্যান্ড। সেটাও আমেরিকার ভিতরে । আর মূল হর=ষ সু ফলের একপাশ আমেরিকা , অন্য পাশ কানাডা । এখানে স্রোতও বেশী , পানিও উত্তাল ।

আমেরিকান ফলস মুল ধারার চার ভাগের একভাগ হবে । এরও চার ভাগের একভাগ বা আরো ছোট একটা শাখা পাশাপাশি বয়ে চলেছে । এর নাম ব্রাইডাল ফলস। অন্যান্য বিভিন্ন জায়গার সাইন লাগানো আছে " পানিতে নামা নিষেধ" গোট আইল্যান্ডের পাশে ব্রাইডাল ফলস - এর কাছে একটা জায়গা পেলাম ভীরও কম, এমন কোন সাইন -ও নেই । সুযোগ বুঝে এখানেই নেমে পড়লাম । প্রথমে ধীরেড ধীরে, সাবধানে পা ফেলে । কিছু জায়গায় দেখলাম স্রোত খুব বেশী , টেনে নিয়ে যায় । সে জায়গাগুলো এড়িয়ে হাটু পানি ভেংগে কম গভীর কিছু জায়গা পেলাম, পাতা পনির মত গভীর । সেখানে স্রোত একদম কম । সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ বসলাম ।

কিছু লোক জমে তামশা দেখছিল । এদের কেউ হয়ত পুলিশে খবর দিয়েছিল । প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর পানি থেকে উঠে এলাম । পাড়ে উঠে দু-কদমও দেইনি । গাছের আড়াল থেকে হ্যান্ড কাপ হাতে করে দুজন পুলিশ হাজির । দুজনের কথা বার্তা :

: Trying to be hero
: Seems to be religious
: Seems to be religious but dangerous man ...

হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে সোজা নিয়ে থানায় । পথে জানটে চাইল বাড়ি কৈ ? ( (You R from ?) ভিসার স্ট্যাটস কি ? কোথায় পড়ি ? বর্তমানে এনরোল করা আছি কিনা ? সামনের সেমিষ্টার কবে ?কত ক্রেডিটের জন্য এনরোল করব ? গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট না আন্ডার গ্রাড ? ( বিদেশী গ্রজুয়েট স্টুডেন্টদের ফলে কমপক্ষে ৯ ক্রেডিটের জন্য এনরোল করতে হয় )

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×