কেওক্রাডং বা তাজিংডং কোনটাই যে দেশের শীর্ষ চুড়া না , সেটা ইউএস টপোগ্রাফিক ম্যাপ আর রাশান টপো ম্যাপে দেখা যায় বেশ কয়েক বছর আগেই। তবে এই ম্যাপগুলো উন্মুক্ত হলেও সহজলভ্য ছিল না। তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে ইন্টারনেটের অভাবিত বিস্তারে সবাই বেশী করে একসেস পায় - এজাতীয় তথ্য আর মানচিত্রে।
তবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা এই পাহাড়গুলোর ব্যাপক পরিচিত বিস্তার লাভ করে গুগুল আর্থ সফটঅয়্যার উন্মুক্ত হওয়ার পর পরই । বিশ্বের তাবৎ অলি-গলির খোজ খবর ঘরে বসে এত নিখুত আর নির্ভরযোগ্য ভাবে পাবার আর কোন উপকরণ পৃথিবীর ইতিহাসে নেই । গুগুল আর্থ ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে - এই আলোচনাও জোড়দার হল কেওক্রাডং বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় না! তাজিংডং ও না!! ব্লগে ফোরামে এটা নিয়ে গবেষণা শুরু হলেও সবার আগে স্বশশীরে অভিযান পরিচালনা করেন বৃটিশ অভিযাত্রী জিনজেফুলেন। আর তিনি প্রায় ডজন খানেক স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত জিপিএস ডিভাইস দিয়ে মেপেও দেশের সর্বোচ্চ চুড়া মদক তং বা মদকমুয়াল নিশ্চত করেন । আর ফুলেনের পর পরই দেশের অভিযাত্রী আর ট্রেকারদের মাঝে এক করকম বিপ্লব _ই ঘটে যায় বলতে হবে - সেখানে যেতে থাকে শত কিংবা হাজার - হাজারে । বই পত্র আর ম্যাপে এর নাম মদক তং হলেও ট্রেকারদের মাঝে এটা পরিচিত পায় 'সাকাহাফং' নামে ।
অবাক হবার বিষয় - উচু পাহাড়টি এত স্পষ্টভাবে চিন্হিত হবার পরও সরকারী নথিপত্রে এটি লিপিবদ্ধ হয়নি । আর সবচেয়ে উচুটি খুজে পাবার পর শত শত ট্রেকার ব্যাস্ত হয়ে পর এর পরের শীর্ষ চুড়াগুলো অনুসন্ধানের জন্য । তাদের অনুসন্ধান আর কিছু উপকরণ( US 1:250K Topographic Map (United States Topographic Maps), Russian 1:200K Topographic Map, SRTM data (Shuttle Radar Topography Mission : NASA), ASTER (Advanced Space Borne Thermal Emission and Reflection Radiometer) and Google Earth ) সবগুলোতেই দেখা যায় কেওক্রাডং বা তাজিংডং উচু না । সেই সাথে চিন্হিত হয় দেশের শীর্ষচুরাগুলো অনেক আগেই ।
তবে এ বিষয়ের যাবতীয় উদ্দ্যোগ-ই ছিল ব্যক্তি পর্যায়ের কিংবা বিচ্ছিন্ন অথবা কোন একক সংগঠনরে পক্ষ থেকে । যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে র্শীষ পর্বত শৃংগগুলোর সুস্পষ্ট অবস্হান ও উচ্চতা জানা ও তা প্রকাশ করা ছিল সংশ্লিষ্ট সকলেরই ঐকান্তিক কামনা । সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই এ বিষয়ে দেশের অভিজ্ঞ একটি সংগঠন “ভ্রমণ বাংলাদেশ” এবং অনলাইন ফোরাম “এডভেঞ্চারবিডি” একটি সমন্বিত উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে। উচ্চতা পরিমাপে শীর্ষ চুড়াগুলোর উচ্ছতা পাওয়া যায় :
১। মদক তং বা সাকাহাফং ১০৫০ মিটার / ৩৪৪৫ ফুট
২। জ-ত্লং ১০১৪. মিটার / ৩৩২৮ ফুট
৩। দুমলং ১০১০ মিটার / ৩৩১৫ ফুট
৪। কেওক্রাডং ৯৮৫ মিটার / ৩২৩০ফুট
৫। কংদুক বা যোগীহাফং ৯৮৩ মিটার / ৩২২২ ফুট
৬। মাই-থাইজমা ৯৬৯ মিটার / ৩১৭৯ ফুট
৭। লুকু ত্লাং বা থিন্দলতে ৯৫৭ মিটার /৩১৩৯ ফুট
এডভেঞ্চারবিডির রাতুলবিডি প্রতিটি চুড়ায় উপস্হিত থেকে জিপিএস রিডিং সংগ্রহ করেন ও এর ছবি তুলেন । সর্বোচ্চ পর্বত সাকা সহ অত্যন্ত কঠিন ও বিপদ সংকুল জ-ত্লং ও যোগীহাফং চুড়ায় আরোহনে সাহায্য করেছেন একরামুল হায়দার । এছাড়া দলিয়ান পাড়া ( যোগী ) ও পুকুর পাড়া ( মাইথািজমা ) অভিযানে সহায়তা করেন সাদেক হোসেন সনি । জরিপ ও তার ফলাফল প্রকাশে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন ভ্রমণ বাংলাডেশের সভাপতি টুটু ভাই, সাধারণ সম্পাদক মনা ও ইকো ট্রাভেলার্স এর আবু বকর।
কেওক্রাডং থেকে তাজিংডং যাবার পাথে দক্ষিন-পূবে দেখা যায় মদকতং বা সাকাহাফং, দেশের সবচেয়ে উচু চুড়া ।
কেওক্রাডং এর জিপিএস রিডিং
২য় সর্বোচ্চ জ-ত্লং ( ৩৩২৮ ফুট)
কনদুক বা যোগী পাহাড়ের ২৯০০ ফুট উচু থেকে দেখা জ-ত্লং।
লোহ ঝিরি থেকে জত্লং ,দেশের সবচেয়ে কঠিন বিবেচনা করা হয় এই চুড়া আরোহন ।
৩য় : দুমলং
লম্বক্র -তিন্দলতে রেন্জের পুকুর 'পাড়া পাস' থেকে তোলা দুমলংএর ছবি ।
ডান পাশে পিছনের পিকটা দুমলং এর মেইন সামিট । সামনে বামের টা দুমলং ওয়েষ্ট - একটা সাবসিডিয়ারী পিক, মেইন পিক না ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৩