(লেখাটি কোনোভাবেই আমার নিজস্ব মতামত তুলে ধরে না। ব্লগের সম্মানিত সদস্যদের মন্তব্য জানতে চাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই পোস্টটি দেওয়া হলো। পুরো লেখাটি আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করা, সাথে ইউটিউবের ভিডিও লিঙ্কও দেওয়া আছ।)
বাংলাদেশে আলোচিত যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এর আগে পাকিস্তান থেকে তার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসতে চেয়েছিলেন ৫ জন।
তবে সরকার তাদেরকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছে। আর এ নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া কতটুকু স্বাধীনভাবে হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
বুধবার ২ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন চেষ্টা করছেন তার মক্কেলকে ফাঁসি থেকে রক্ষা করতে। তবে তার ডাকা আসামি পক্ষের সাক্ষীদেরকে সাক্ষ্য প্রদান থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
এডভোকেট মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কোর্ট হঠাৎ করে আমাদের ডিফেন্স উইটনেসের (আসামি পক্ষের সাক্ষী) সংখ্যা কমিয়ে মাত্র ৫ জনে নির্দিষ্ট করে দেয়। বাকিদের মধ্যে যারা এফিডেভিট দাখিল করেছে তাদেরকেও আসতে দেওয়া হয়নি। তারা সবাই সমাজের খুব উচ্চ পর্যায়ের লোক।’
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণহত্যা এবং গণধর্ষণের অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একজন খ্যাতনামা নেতা।
তার আইনজীবীদের অভিযোগ, তাকে ন্যায় বিচারের পরিবর্তে রাজনৈতিক কারণে অভিযোগের সম্মুখীন করা হয়েছে।
তার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চাওয়া একজন হচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ইশাক খান খাকওয়ানি। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে তিনি যাতে সাক্ষ্য দিতে না পারেন সে কারণে বাংলাদেশ সরকার তাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছে। তিনি জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাকিস্তানে তার কাছে ছিলেন।
ইশাক খান বলেন, ‘এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আমরা তিনজন, আমি, নাইমা আখন্দ এবং সালাউদ্দিন চৌধুরী মিলে আমার গাড়িতে চড়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরেছি। গাড়িটির মডেল ‘মাজদা-১৫০০’ এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছিল ‘এমএনএ-৭৮৫’। আমাদের ভ্রমণের প্রতিটি ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে। বিভিন্ন সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় আমাদের যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়েছে তাও আমার কাছে আছে।’
তবে সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আসামি পক্ষ মিথ্যা প্রমাণাদি হাজির করছেন।
এ বিষয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবী জিয়াদ আল মালুম বলেন, ‘তারা অনেক দেরিতে তাদের সাক্ষীদের তালিকা জমা দিয়েছেন। প্রথমে তারা ২০০ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছিলেন। সে তালিকার মধ্যে একই সাক্ষীর নাম একশ চারবারও ছিল।’
তবে আদালত শেষ পর্যন্ত সরকার পক্ষের ৪১ জন সাক্ষীকে সাক্ষ্য প্রদানের অনুমতি দেয় এবং আসামি পক্ষের জন্য অনুমোদন দেয় মাত্র ৫ জনকে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আসামি পক্ষের কোনও সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে এটা মেনে নেওয়ার মতো না।
একটা মৃত্যুদণ্ডের মামলায় এ ধরনের অযুহাতে কোনও সাক্ষীকে সাক্ষ্য প্রদান থেকে বিরত রাখায় মামলাটি আসলে আদালত থেকে পরিচালনা করা হয়েছে কিনা তা প্রশ্নবিদ্ধ রয়ে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০০