ছিটমহল হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের কিছু অংশ যা অন্য একটি বা দুটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমার মাঝে অবস্থিত। ছিটমহল শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ এনক্লেভ (ENCLAVE)। শব্দটি ইংরেজি কূটনৈতিক শব্দের অভিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় ১৮৬৮ সালে। ফারসী ভাষা থেকে শব্দটি ইংরেজিতে আসে। এনক্লোভ এবং এর সঙ্গে সম্পাদিত কিছু শব্দ আগেই ফরাসী ও স্প্যানিশ ভাষায় ছিল। যার অর্থ ছিল কোনো কিছু দিয়ে ঘেরা, অন্তর্ভুক্ত, নির্দিষ্ট ইত্যাদি। এগুলো এসেছিল ল্যাটিন “clavus” এর তিন দশক পর আসে Exclave শব্দটি। EXCLAVE বোঝানো হয় একটি দেশের মাঝে আবদ্ধ থাকলে আর ENCLAVE ব্যবহৃত হয় দুটো দেশ দ্বারা ঘেরা থাকলে। যেমন-কালিনইনগ্রাদ রাশিয়ার এনক্লেভ নয় বরং এক্সক্লেভ। কারণ এটি লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড দুটো দেশ দ্বারা বেষ্টিত থাকে। কিন্তু সাগরের মাধ্যমে সেখানে প্রবেশ করা যায়। সেটিকে ছিটমহল বলা যাবে না। যেমন-পর্তুগাল স্পেনের ছিটমহল নয় কিংবা গাম্বিয়া সেনেগালের ছিটমহল নয়। ছিটমহল নানা ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক এবং ভৌগোলিক কারণে সৃষ্টি হয়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্যেও অনেক জায়গায় ছিটমহল সৃষ্টি হয়েছে। ছিটমহলের মানুষের জীবনযাত্রা নানা সমস্যায় জর্জরিত। চলাচল, বিদ্যুৎ, কর্মসংস্থান, ঠিকানা ইত্যাদি বিষয়ে তারা বঞ্চিত। ইন্দো-বাংলাদেশ ছিটমহলবাসীর দুর্ভোগ এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। অবশ্য দুনিয়াজুড়েই এখন ছিটমহল সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে। মূল রাষ্ট্র থেকে দূরে অবস্থিত অনেক এক্সক্লেভ এ স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে।
সত্যিকার ছিটমহল:
কিছু অঞ্চল এর মূল ভূখন্ডের সঙ্গে একখন্ড মরুভূমি বা ঐ অঞ্চলের কোনো জলস্রোত দ্বারা সংযুক্ত থাকে। ফলে এ অঞ্চলগুলোতে মূল ভূখন্ডের চেয়ে কোনো প্রতিবেশী দেশ দ্বারা সহজে প্রবেশ করা যায়। এ রকম অঞ্চলকে ব্যবহারিক ছিটমহল বলে। (যেমন : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মাঝে উত্তর-পশ্চিম কোন, স্প্যানীয় গ্রাম ওয় ডেসিভিস, যা স্পেন থেকে পাহাড়ের কারণে বিচ্ছিন্ন। প্রতিবেশী দেশ অ্যানডোরা থেকেই কেবল এ গ্রামে প্রবেশ সম্ভব)। কানেক্টিকাটে অবস্থিত গ্রীন উইচের আমেরিকান লেনে শুধু নিউইয়র্ক থেকেই প্রবেশ সম্ভব। কারণ এটি ইন্টার স্টেট ৬৮৪ দ্বারা কানেক্টিকাটের বসতি অংশ দ্বারা পৃথককৃত।
জাতিগত ছিটমহল : জাতিগত ছিটমহল হলো একটি বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীর মাঝে আরেকটি ভিন্ন জাতির সমাজ বা গোষ্ঠী। উদাহরণস্বরূপ ঘেটো, লিটল, ইতালী, ব্যারিওস, চায়না টাউন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ অঞ্চলসমূহের ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি ভিন্ন। নাগারনো-কারাবাখ, আজারবাইজানের মাঝে আর্মেনীয় জাতিগোষ্ঠী। তবে এটি জাতিগত ছিটমহল কি না তা তর্ক সাপেক্ষ। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত নাগারনো-কারাবাখ যুদ্ধের পর অঞ্চলটি নিজেকে স্বাধীন হিসেবে দাবি করে। তবে আন্তর্জাতিক সমাজ কর্তৃক অঞ্চলটি স্বীকৃত হয়নি।
ছিটমহল দেশ :
কিছু ছিটমহল সম্পূর্ণরূপে অন্য দেশ দ্বারা বেষ্টিত থাকা সত্ত্বেও তাদের অধিকারের কারণে তারা একেকটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিরাজমান। এ রকম তিনটি সার্বভৌম দেশের অস্তিত্ব রয়েছে। দ্য রিপাবলিক অব মান মারিনো ইতালীর একটি ছিটমহল। যদিও ঐতিহাসিকভাবে দেশটি নিজেকে অ্যাড্রিয়টিক সাগরের ভূমি হিসেবে দাবি করেছে। ভ্যাটিক্যান সিটি ইতালীর রোম নগরের একটি ছিটমহল। দ্য কিডেস অব লিযোথো-দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ছিটমহল। ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্ল্যাক হোমল্যান্ড ও ব্যানটাসট্যান্স ১৯৪৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত আপার থেইড শাসনাধীন ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন অনুসারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রেড ইন্ডিয়ানদের রিজার্ভেশনগুলোকে ‘ছিটমহল দেশ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কানাডায় রেড ইন্ডিয়ান রিজার্ভেশন এবং অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের রিজার্ভেশনও এই বিবেচনা বহাল আছে।
ঐতিহাসিক ছিটমহল:
(১) পূর্ব পাকিস্তান (১৯৫৫-১৯৭১) : বর্তমানে বাংলাদেশ, ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের একটি ছিটমহল ছিল রাজধানী ইসলামাবাদ পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থিত হওয়ায় পশ্চিম পাকিস্তানকে মূল ভূখন্ড হিসেবে বিবেচনা করা যায়)। পাকিস্তানের পূর্ব ও পশ্চিম অংশে ১৮০০ কিলোমিটার বিস্তৃত বিদেশী অঞ্চল দ্বারা পৃথক ছিল। দেশটির ৭০ শতাংশ রফতানি পূর্ব পাকিস্তান থেকে করা হতো এবং বিভিন্ন কারণে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে জনপ্রিয় ছিল।
(২) পূর্ব এশিয়া : ওয়েইমার রিপাবলিক আমলে এটি জার্মানীর ছিটমহল ছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন পোল্যান্ড পুনরায় বাল্টিক সাগরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিল, এটি জার্মানী থেকে পৃথক হয়। পূর্ব এশিয়া বর্তমানে তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত-রাশিয়ার কালিনইনগ্রাদ ও ব্লাস্ট, পোল্যান্ডের ওয়ার মেইল-মাসুরিয়ান ডিভোদশিপ এবং লিথুয়ানিয়ার ক্লেইপোদা দেশ।
(৩) তুর্কী : বর্তমান সিরিয়ায় অবস্থিত। বালাত জগারের কাছে সুলেমান শাহর কবর। এক সময় তুর্কী অঞ্চল হিসেবে বিবেচ্য ছিল। ১৯৭৩ সালে আলাদ হ্রদ খননের সময় কবরটি পুনরায় স্থানান্তরিত করা হয়।
(৪) নিষিদ্ধ নগরী : চীনের কিং ডাইনাষ্টির শেষ সম্রাট হেনরি পুরি ১৯০৯ সালে সিংহাসন লাভ করেন। কিন্তু ১৯৯১ এর বিপ্লবে কিং সেনাবাহিনী পরাজিত হয়। কিং রাজপরিষদ এবং নবগঠিত রিপাবলিক অব চায়নার সরকারের মাঝে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী এই রফা হয় যে, পুরি তার স¤্রাট উপাধি বজায় রাখবেন এবং নিষিদ্ধ নগরীতে অন্যান্য রাজপ্রাসাদ এবং অভিজাত পরিবারবর্গের ব্যবস্থাপনা করবেন। নিষিদ্ধ নগরীতে এখনো কিং ডাইনস্টির ড্রাগন পতাকা উড়তে দেখা যায়। । ১৯২৪ সালে রিপাবলিক অব চায়নার সরকার ১৯১১ সালের চুক্তি বাতিল করে দুয়ির সম্রাট উপাধিসহ নিষিদ্ধ নগরীতে তার বসবাসের অধিকার বিলোপ সাধন করে।
৫. মাউন্ড স্কোপাস : জেরুজালেমে অবস্থিত) : ১৯৪৮ ও ১৯৬৭-এর মাঝে ছয়দিনব্যাপী যুদ্ধের পর ইসরাইলের পশ্চিম জেরুজালেমের সঙ্গে এক হওয়ার আগে মাউন্ট স্কোপাস ছিল জর্দানের ভেতর ইসরাইলি ছিটমহল। রাজনৈতিকভাবে এটি এখনো একটি ছিটমহল। কারণ ইসরাইল কর্তৃক সংযোজিত অঞ্চলের সীমা রেখা এখনো চিহ্নিত হয়নি।
৬. ওয়াল ভিস বে : এটি নামিবিয়ার মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ছিটমহল ছিল। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার এখতিয়ার থেকে নামিবিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হয়।
৭. পশ্চিম বার্লিন : জার্মানির পুনরায় একত্রিত হওয়ার আগে এটি ছিল পূর্ব-জার্মানির মাঝে পশ্চিম জার্মানির ছিটমহল। পশ্চিম বার্লিনের অনেক ছোট এলাকা বার্লিনের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। সমগ্র বার্লিন চার মিত্রশক্তির শাসনাধীন ছিল। (পূর্ব জার্মানির মাঝে একটি ছিটহমল হিসেবে শাসিত) অর্থাৎ জার্মানির সংসদে বার্লিন কোনো ভোটদানকারী সদস্য পাঠাতে পারতো না এবং বার্লিনের জনগণকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনা দলে যোগ দেয়া থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল।
৮. গাজার : ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত এটি ছিল পাকিস্তানের মাঝে ওমানের উপকূলীয় ছিটমহল।
৯. চেইখ যেড : আদেনের কাছে ফরাসি ছিটমহল।
১০. ফোর্ট অব যাও জোআও বাতিস্তা দি আজুদা কেল্লা : ১৯৬১ সাল পর্যন্ত এটি ছিল বেনিনের মাঝে পর্তুগীজ ছিটমহল।
এক রাষ্ট্রের মাঝে অন্য রাষ্ট্রের বিশেষ অংশ :
কখনো কখনো একটি দেশের কিছু ভূখন্ড অন্য দেশের মালিকানাধীন হয়ে থাকে। এসব অঞ্চল এ কারণে কিছু বিশেষ সুবিধা পায়। যেমন- কর প্রদান থেকে অব্যাহতি লাভ। এই এলাকাগুলো ছিটমহল নয়।
এমন কিছু অঞ্চলের উদাহরণ :
(১) সেইন্ট হেলেনার লংউডে নেপোলিয়নের মূল কবর ফ্রান্সের অধীন।
(২) গুয়াসের সেন্ট পিটার পোর্টে ভিক্টর হুগোর বাড়ি- প্যারিস নগরীর অধীন।
(৩) ফ্রান্সের নরম্যান্ডি: দ্য নরম্যান্ডি আমেরিকান সিমেট্রি অ্যান্ড মেমোরিয়াল সেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ দেয়া ৯৩৮৬ জন মার্টিন যোদ্ধার কবর অবস্থিত-যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
(৪) সুইজারল্যান্ডের সুভোরোড স্মৃতিসৌধ দ্বারা বেষ্টিত প্রায় ২৪ বর্গমিটার এলাকা রাশিয়ার অধীন।
(৫) ফ্রান্সের ডিসি স্মৃতিসৌধ যা ডিসি রিজের যুদ্ধের স্মারক। ১৯২২ সালে ফ্রান্সের সরকার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সাধারণভাবে এবং ডিসি রিজের যুদ্ধে কানাডা সেনাবাহিনীর অবদানের জন্যে কানাডাকে ১ বর্গ কি. মি. এলাকা স্থায়ীভাবে দান করে দেয়।
(৬) বেলজিয়ামে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু কবরস্থান- যথাযথ রাষ্ট্র— অধীন।
(৭) ইংল্যান্ডের রালিমেনে জন এফ কেনেডি স্মৃতিসৌধের আওতায় এ এলাকা জন এফ কেনেডি অ্যাক্ট ১৯৬৪ আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের অধীন।
(৮) ইংল্যান্ডের অধীন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় অবস্থিত দুটো কবরস্থান। উভয় কবরস্থানেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ব্রিটিশ নাবিকদের কবর দেয়া হয়েছে।
(৯) যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে কোয়ালাকেহয়া যেতে ২৫ বর্গফুট এলাকা। সেখানে ১৯৭৯ সালে জেমস কুবকে হত্যা করা হয়-ইংল্যান্ডের অধীন।
(১০) কোরার তিহুইনজা- এলাকাটি সার্বভৌমত্ব ব্যতীত ইকুয়েডরের অধীন।
ছিটের মানুষ : বাবার নামের জায়গায় খালুর নাম লিখতে হবে এটা জানে সুমী আখতার। না হলে তার লেখাপড়াই হবে না। ঠিকানাও লেখা হবে খালুর বাড়ির। পুকুরি ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়ে সে। খুব সকালে গাড়াতি ছিটমহলের যুব উন্নয়ন কমিটির মাঠে দেখা ফুটফুটে মেয়েটির সঙ্গে। সেখানেই কথা। বাবার নাম জানতে চাইলে একবার তাকাল বাবার দিকে। তারপর বলে দিলো খালুর নামটাই। মধ্যবয়সী মো. তাইজউদ্দিনের অবশ্য তাতে মন খারাপ হলো কী হলোনা বোঝা গেলো না। শুধু সুমী আখতার নয়। ভারতীয় ছিটমহলে থেকেও যারা বাংলাদেশের স্কুল কলেজে পড়ালেখা করে তাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু তথ্য লুকাতে হয়। প্রত্যেককে বাংলাদেশের ঠিকানাই লিখতে হয়। ভারতীয় ছিটমহলের ঠিকানায় যে ভর্তি নেবে না স্কুল। শিক্ষার কাছে পিতৃত্বের পরিচয় এখানে গৌন হয়ে গেছে। স্কুলের অন্য সবার মতো জোর গলায় আমার সোনার বাংলা গানটা গাইলেও তাতে সুমীর ফায়দা হচ্ছে না কিছু। বাংলাদেশি খালুই এখন তার বাবা। ভারতীয় হওয়ায় তাইজউদ্দিনের মতো অনেকেই অন্তত কাগজে কলমে সন্তানের সামনে বাবার দাবি নিয়ে দাঁড়াতে পারেন না। আগেও ছিল সমস্যাটি। কিন্তু তা আরো জটিল হয়েছে জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র চালু হওয়ার পর। সে কারণে অনেকেই আবার ভুয়া ঠিকানা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করে নিয়েছেন।
বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের এবং ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের যে ছোট ছোট ভূখন্ড রয়েছে সেগুলোই ছিটমহল। নিজ দেশের মানচিত্রের বাইরে এদের বাস। বাংলাদেশের চারটি জেলায় ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এর মাঝে লালমরিহাটে রয়েছে সর্বোচ্চ ৫৯টি। এক পাটগ্রাম উপজেলায় আছে ৫৫টি। পাটগ্রামের মানচিত্র বলতে গেলে ছিটমহলে ছিটমহলে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। বাকি চারটি ছিটমহল দু’টো করে আছে হাতীবান্ধা আর সদর উপজেলায়। পাঠগ্রামের অর্ধশত ছিটমহল থাকলেও ১৮টিতে জনবসতি আছে। বাকিগুলো হয় ধানি জমি, না হয় পতিত বনজঙ্গল। এর বাইরে পঞ্চগড়ে রয়েছে ৩৬টি ছিটমহল। কুড়িগ্রাম এবং নীলফামারীতে রয়েছে ১২ ও ৪টি ছিটমহল। ওপারে বাংলাদেশের ছিটমহল ৫১টি। ভারতের দিক থেকে বিবেচনা করলে এর সবই কুচবিহার জেলার অন্তর্গত। আর প্রশাসনিকভাবে তা লারমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলায়। এর ৩৩টি লালমনিরহাট জেলায়। আর কুড়িগ্রামের আওতায় ১৮টি। যার কোনোটির সঙ্গেই বাংলাদেশের প্রশাসনিক কোনো যোগাযোগ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।
মূল ভূখন্ড থেকে ছিট পড়া এলাকাগুলোর মাঝে যারা বাংলাদেশের আছেন তারা তাও খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। কিন্তু ওপারের ছিটমহলবাসীদের একেবারে ত্রাহি অবস্থা। পরিচয় না পেলেও এপারের লোকেরা তও বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডে ঢুকতে পারেন। পণ্যের বেচাকেনা সবই করতে পারেন। কিন্তু ওপারে! কোচবিহারে বাংলাদেশী ছিটমহলের লোকেরা তো একেবারেই খাঁচাবন্দি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫