১৪ জুলাই রহমতগঞ্জের বেইজ এডূকেশন সেন্টারে “চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব” গ্রুপের উদ্যেগে প্রথমবারের মত এক পরিচিতিমুলক প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। প্রোগ্রামে সর্বমোট ১৬ জন উপস্থিতি নিজেদের নানা উদ্যেগের গল্প আর আইডিয়া শেয়ারের মাধ্যমে সারাটা সময় মাতিয়ে রাখেন। ঠিক ৬ টায় পরিচিতি দিয়ে শুরু হয় চট্টগ্রামের প্রোগ্রাম । সবাই তাদের নিজেদের পরিচয় দেওয়ার সাথে সাথে গ্রুপের সাথে জড়িত হবার কারণ, নিজের ভাল লাগা, এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানান।
শারমীন রাবেয়া বর্তমানে PHP SPINING MILL এ কর্মরত আছেন। তার ইচ্ছা ছিল, এই ঈদে নগরীতে নিজের ডিজাইন করা কাপড় এবং সেই সাথে ভালমানের পাঞ্জাবী বিক্রির একটি স্টল দেয়া, কিন্তু তিনি স্টল ম্যানেজ করতে পারেননি। গ্রুপের কাছে তিনি জানতে চান, এই মুহুর্তে স্টল খুজে নিয়ে ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা শুরু করা সম্ভব কিনা। গ্রুপের সদস্যরা তাকে জানান যে, এখন এই ব্যাপারে দেরি হয়ে গেছে। কারণ, নগরীর মার্কেটগুলোতে স্টল বরাদ্দ পাওয়া এখন আর সম্ভব নয়। শারমীন জামদানি শাড়ীর ব্যাপারেও তার আগ্রহের কথা সবাইকে জানান। তার মতে, চট্রগ্রামে Exclusive কোন জামদানী শাড়ীর দোকান তার চোখে পড়ে নি, তাই এইরকম একটা দোকান দিতে পারলে তা ব্যবসায়ীকভাবে সফল হবে।
মাহমুদুর রহমান বর্তমানে ACCA করছেন। তিনি পূর্বে মাশরুম চাষ করেছেন। কিন্তু ব্যবসাটিতে তিনি সফল হতে পারেননি। মাশরুম উৎপাদনের পর বিপনন কার্যক্রমে তিনি নানা অসুবিধার মুখে পড়েছিলেন। মাশরুমের ভালো জাতের বীজ সংগ্রহ করাও প্রায় অসম্ভব বলে তিনি জানান। এই ব্যাপারে সরকারী বীজ বিপননে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অসততাই দায়ী। বর্তমানে তিনি ইন্টারনেট ফ্রিল্যন্সিং এর সাথে জড়িত আছেন এবং ওয়েব এন্টারপ্রিনারশিপ নিয়েই তার ভবিষ্যতে নানা পরিকল্পনা আছে।
ইফতেখারুল আলম রাসেল, পড়াশুনা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্টি ডিপার্টমেন্টে। হিল ট্রেকিং হল তার নেশা। মজার ব্যাপার হলো, ট্রেকিং করতে করতে তিনি “তাবু” বিক্রর আইডিয়া পেয়ে যান। ইতিমধ্যে বেশ কিছু তাবু তিনি বিক্রি করেছেন। সামনে তিনি এই উদ্যগটা নিয়ে আরো যেতে চান।
প্রোগ্রামের সন্মানিত আহবায়ক ড.মোশারফ হোসেন (ফেকাল্টি মেম্বার অব চিটাগাং ইউনিভাসিটি, ফরেস্টি ডিপার্টমেন্ট) জানালেন, একটি কনসালটিং ফার্ম চালানোর কথা, যেটি নতুন ঊদ্যেক্তাদের কোম্পানী গঠন ও ব্যঙ্ক লোন বিষয়ক যাবতীয় ব্যাপারে সহযোগিতা করে থাকে। সেই সাথে তিনি আইটির ব্যাপারেও নিজের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেন।
প্রোগ্রামের মাঝখানে যোগ দেন হিল্লোল দত্ত, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কে কর্মরত থাকলেও পাশাপাশি নিজেকে বই প্রকাশনা শিল্পে জড়িত রেখেছেন। বই প্রকাশনা বিষয়ক নানা সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তিনি সকলের সাথে শেয়ার করেন।
মিথুন মজুমদার টুরিজ্যম ব্যবসায় জড়িত আছেন প্রায় ৬ বছর। ব্যবসায় অনেক সময় খারাপ সময় গেলেও তিনি হাল ছাড়েননি কখনই। আর সামনের দিনগুলোতেও এগিয়ে যেতে চান টুরিজ্যম বিষয়ক নানা পরিকল্পনা নিয়ে।
আবদুল মান্নান আসিফ ডিপ্লোমা কমপ্লিট করে বর্তমানে সাউদান ইঊনিভার্সিটিতে কম্পিঊটার সায়েন্সে পড়ছেন। পাশাপাশি তিন বন্ধু মিলে হোস্টিং এর ব্যবসা আরম্ভ করেছেন।
প্রোগ্রামে দুই তরুণ আইটি উদোক্তা তানশীর ও সাজ্জাদ ফ্রিল্যন্সিং ও ওয়েব এন্টারপ্রিনার্শিপ এর নানা দিক নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং সেই সাথে আগ্রহীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সজীব বিশ্বাস ও হুমায়ুন কবির - একজন চাকুরীজীবি ও আরেকজন ছাত্র, কিন্তু উভয়েরই আগ্রহের জায়গা হলো “স্টক লট” ব্যবসায়। সজীব বিশ্বাস ইতিমধ্যে এই বিষয়ে কয়েকটা কোর্সও সম্পন্ন করেছেন।
প্রোগ্রামে আরো উপস্থিত ছিলেন কামরুল হাসান, মোশতাক আহমেদ, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও মাহমুদুল হাসান।
প্রোগ্রাম শেষ করার আগে অন্তন এবং কেক দিয়ে পরিবেশিত নাস্তা প্রোগ্রামে নতুন মাত্রা যোগ করে।
গ্রুপের বেশীরভাগ উপস্থিতি “ফ্রিল্যান্সিং” বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন এবং গ্রুপের উদ্যেগে অভিজ্ঞ ফ্রিলান্সারদের পরিচালনায় একটি কর্মশালার আয়োজনের অনুরোধ করেন। অবশেষে প্রোগ্রামে সিদ্বান্ত হয় আগামী ২৭ জুলাই গ্রুপের উদ্যেগে “ফ্রিল্যান্সিং” এর উপর একটি অংশগ্রহনমূলক ইভেন্টের আয়োজন করা হবে । ইভেন্টে চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত কয়েকজন পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সকলের সাথে তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন ও ফ্রিলান্সিং এর সুযোগ, ব্যাপ্তি, পদ্ধতি আর সীমাবদ্ধতা নিয়ে নানা রকম প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
ইভেন্টের বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন https://www.facebook.com/events/278516875597325/