------------------- রমিত আজাদ
ঢাকা থেকে অনেক দূরে, গ্রামটির নাম ঢাকুয়া।
সবুজ ছায়ার মায়ার দেশে প্রাণ ভরেছে আকুয়া।
মশগুল তায় টিয়া পাখী, রঙ ছড়াতে আশমানে,
তেপান্তরের মাঠ ছাপিয়ে ফিঙে নাচে গুলশানে!
ফুলবনে তায় প্রজাপতি পাখনা মেলে নিরুদ্দেশ!
ধলাই নামের ছোট্ট নদী গাঁয়ের বুকে চলছে বেশ!
কালবোশেখী রুদ্র ঝড়ে গাঁয়ের বনে আন্দোলন,
ক্ষেত-খামারে পবন দোলায় তরঙ্গ সুখ শিহরণ!
বর্ষা এলে টাপুর-টুপুর বাদলা মুখর নও ঢঙে!
বৃষ্টিশেষে রঙধনু তায় আকাশ মাতায় সাত রঙে!
শরৎ সেথা শুভ্র তনু কাশফুল মন প্রস্ফুরণ,
ধানের শিষে বহ্নিশিখা অভ্র রাশে আকম্পন!
শীতের কালে হিমের তালে গাঁয়ের মাটি হিমানী,
শরষে ফুলের চাদর গায়ে গ্রাম সেজেছে কুঞ্জনী।
ফাগুন সেথা আগুন রঙে ফোটায় পলাশ ফুলপরী,
দিনের শেষে নামছে নিশি, তারায় তারায় শর্বরী!
সোনার কাঠি, রুপার কাঠির যাদুর ছোঁয়ায় বন্দনায়,
গান শোনাবে চৈতী রাগে বুলবুলি আর চন্দনায়।
বিজলী তারের খুটির চূড়ায় বাজপাখি তাজ ঝলমলায়,
শাপলা-শালুক গাঙ সাজিয়ে বিলের জলে ছলছলায়!
রাখাল-বালক বংশীবাদক সুর ছিটিয়ে কলকলায়,
মেঠো পথে গাঁয়ের বধূ কলসী কাঁখে টলমলায়!
চৌরাস্তার বাজার-হাটে বিকিকিনির জীবন-ঢল,
ঘাটপারেতেও বাজার আছে, সেতুর নীচেই কলকল।
পল্লী থেকেই গারো পাহাড় রূপসুধাতে দৃশ্যমান!
মেঘালয়ের মেঘপূরীতে পাহাড় রাণীর সিংহাসন।
উচ্চতা তার ঢের উপরে, গ্রাম ভাসে না বন্যায়,
গ্রামবাসীদের নাই খেদ তাই, বানভাসানো কান্নায়।
উষায় রাঙে ক্ষেতের পানি, গোধূলিতেও লাল রবি,
মখমলী ঘাস কদম দলে পদধূলি তায় দেয় কবি।
ঘাসফুল তায় খায় চুমু খায়, পথিক প্রবর চরণে,
প্রেম জমেছে মাটির সাথে, নীলমনি রুপ গড়নে।
ঈদের দিনে খুশির মনে গ্রামবাসি সব শাহেনশাহ্!
বটের তলায় মাঠের ঘাসে হয় আয়োজন ঈদের গাহ্।
নামাজ শেষে মুসুল্লীগণ বুক মিলিয়ে শান্তি পান,
ছেলেপুলে সন্তানেরা খেলনা কিনে গাইছে গান।
মসজিদেরই মিনার থেকে আযান ভাসে পাঁচবেলা,
সন্ধ্যা-সকাল নামাজীদের আনাগোনায় পথচলা!
সময় হলে এসো পথিক দেখে যেও সপ্ত সুর,
ঢাকুয়া নাম গ্রামটি মোদের স্বর্গসুখের শান্তিপুর।
(আমার ছোট ছেলেটি আবদার করলো, "আমাদের গ্রামটি নিয়ে একটা কবিতা লিখবে না, বাবা?")
---------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২০শে অক্টোবর, ২০১৯ সাল
সময়: দুপুর ০৩টা ০৭ মিনিট
(ইতিপূর্বে প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৩