somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবধানে চলুন, অন্যকেও সাবধান করুন।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি গাড়ী চালাচ্ছি ২০০১ সাল থেকে, প্রায় ১৬ বছর ধরে। প্রতিদিন অনেক দূরত্ব হয়তো চালানো হয় না। কিন্তু এই ষোল বছরে কম করে হলেও ৭০ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব গাড়ী চালিয়েছি।

আল্লাহের কাছে হাজার শুকড়িয়া, এই ষোল বছরে মেরেছি মাত্র একজন কে। মতলবের রাস্তায় চাঁদপুর যাবার সময় এক মোটাসোটা উনি হেলেদুলে রাস্তা পার হচ্ছিলো। আমি প্রায় ৭০ কিমি গতিতে যাচ্ছিলাম, তাই সামনে দেখে ব্রেক চেপেও তাকে বাঁচাতে পারি নাই। স্পট ডেথ হয়েছিলো। এটাও প্রায় ছয় বছর আগের ঘটনা। রাস্তা চিকন হওয়ায়, পিছনে গাড়ী থাকায়, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও দাঁড়াতে পারিনাই! ফেরী ধরার তাড়া থাকায় গাড়ি চালিয়ে চলে গেলাম (নাকি পালিয়ে গেলাম)?? ভয় পাবেন না উনি ছিলেন, মোটাসোটা এক হাঁস।

এছাড়া আরেকবার গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসার সময় রাস্তায় এক ছোট ৬/৮ বছরের বাচ্চাকে ধাক্কা দিয়েছিলাম। বাচ্চার কোলে আরেক বাচ্চা ছিলো। গাড়ী আস্তে চালাচ্ছিলাম, বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলো বড় বাচ্চাটা। যেই গাড়ী কাছাকাছি গিয়েছে, সতর্ক করার জন্য হর্ন দেয়ার পর হঠাৎ দৌড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ীর সাথে ধাক্কা লেগে রাস্তায় পরে গেলো। খুব ভয় পেয়েছিলাম, গাড়ী থামিয়ে নেমে ওদের নিয়ে পাশের বাজারে ডিসপেনসারিতে নিয়ে গিয়ে দেখালাম। ব্যথা পায় নি কিন্তু খুব ভয় পেয়েছে। মা খবর পেয়ে ছুটে এসে আগেই মারলো বড় বাচ্চাটাকে থাপ্পড়, কারন অনেকবার ছোটটাকে নিয়ে রাস্তায় আস্তে বাড়ন, তারপরেও কেন এলো?

এই যাত্রায়ও বড় কোন দূর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেলাম। এই দুইটা ঘটনা ছাড়া এত বছরে ছোট ছোট কিছু ঘটনা ঘটিয়েছি। যেমন সকালে অফিসে আসার সময় গার্মেন্টস বাহিনীর মাঝে পরে হর্ন দিতে বাধ্য হয়ে আস্তে আস্তে এগোচ্ছি, ধারাম করে সাইড ভিউ মিরর দিয়ে কাউকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছি! এধরনের ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছি।

আমি সবসময় চেষ্টা করি হর্ন কম দিয়ে গাড়ী চালাতে। আর এত বছরে কয়বার হার্ড ব্রেক কশেছি? গুনে বলে দিতে পারবো। আমি সাবধানেই গাড়ি চালাই তারপরেও আমার গাড়িতে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে টেক্সি ড্রাইভারে পা ধরা কিম্বা বাস আমার গাড়ীকে পাশ থেকে ধাক্কা দিয়ে, ড্রাইভারের হেল্পারকে মারা (কেন বলেনি বায়ে প্লাস্টিক আছে?)। এধরনের ছোট খাটো দূর্ঘটনা ঘটেই গেছে। রাস্তায় চলতে গেলে আমাদের দেশে এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এত মানুষ আর গাড়ী চলে এই ছোট্ট পরিসরে, যে দূর্ঘটনা না ঘটাই অস্বাভাবিক!!!

কিছু বিষয়ে একটু নজর দিলে ভালো উপকার পেতে পারি...
১) ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক ভাবে দিতে হবে। টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করতেই হবে।
২) গাড়ীর ফিটনেস নিশ্চিত করতে হবে। গাড়ীর মালিকদের সচেতন এবং উৎসাহী করতে হবে।
৩)ড্রাইভারদের কর্ম আওয়ার কোন ভাবেই ১০ থেকে ১২ ঘন্টার বেশী হতে পারবে না। এ ব্যপারে মালিকদেরকেই সচেতন হতে হবে।
৪) রাস্তার শার্প বাক গুলোতে স্পীড ব্রেকার দিতে হবে। যদি সম্ভবহয় বাক গুলোকে যথাযথ সম্ভব সোজা করে দিতে হবে।
৫) হাইওয়ের পাশে কোন ভাবেই বাজার বসতে দেয়া যাবে না। বাজার সাইড রোড করে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে নিয়ে যেতে হবে।
৬) গাড়ী সবচেয়ে বেশী এক্সিডেন্ট হয় ওভারটেকিং করার সময়। একই রুটের গাড়ী গুলোকে এক কোম্পানিভুক্ত করতে পারলে অযথা আগে যাওয়ার চেষ্টা কমে যেত।
৭) নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া রাস্তা পার হওয়া যাবে না। এটা বন্ধ করতে আইন করে লাভ নেই। সচেতনতা বাড়াতে হবে। পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে প্রচার বাড়াতে হবে।
৮) একই রাস্তায় স্পোর্টস কার আর ঠেলাগাড়ি চলতে দেয়া যাবে না। স্লো ভেহিকাল হাইওয়েতে চলতে দেয়া যাবে না।

যা কিছু করা হোক না কেন! রাস্তায় চলতে গেলে দূর্ঘটনা হবেই। তাই এটা নিশ্চিত করতে হবে, প্রত্যেক গাড়ীর এবং যাত্রীদের যথাযথ ইন্সুরেন্স করা থাকতে হবে। এতে হয়তো দূর্ঘটনা থামানো যাবে না কিন্তু দূর্ঘটনা পরবর্তী অবস্থা সামাল দেয়ায় সাহায্য করবে।

রাস্তায় আমাদের চলতেই হবে। ছোট বড় ঘটনা-দূর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমরা চেষ্টা করবো সাবধানে সচেতন ভাবে রাস্তায় চলতে, আর অন্যকে সাবধানে চলতে উৎসাহিত করতে।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৩৪
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×